বাংলা বর্ষবরণ নিয়ে আবেগ উচ্ছ্বাস এখনও থামেনি

ঠিকানা রিপোর্ট : বাংলা নতুন বছর ১৪২৫-কে স্বাগত জানিয়ে জাতিসংঘে স্থায়ী মিশন, প্রবাসের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বৈশাখী আনন্দে নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। বছরের প্রথম দিন ১৪ এপ্রিল, শনিবার, থেকে শুরু হওয়া বাঙালির এ প্রাণের উৎসব এখনও অব্যাহত রয়েছে কম্যুনিটিতে। প্রতিটি অনুষ্ঠানে পরিলক্ষিত হয়েছে সাজ সাজ রব। ফুটে উঠেছে বাঙালি সংস্কৃতির নানা চিত্র। আবার কোথাও কোথাও হয়েছে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা। বাঙালির ঐতিহ্য শাড়ি-পাঞ্জাবি পরে নারী-পুরুষ সমবেত হয়েছেন বৈশাখের এসব আয়োজনে। অনেকের সাথে সাক্ষাৎ হচ্ছে দীর্ঘদিন পর, হচ্ছে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়। বিভিন্ন সংগঠন ও আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো চিত্রই তার প্রমাণ।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন
নিউইয়র্ক : বাংলা নববর্ষ-১৪২৫ উদযাপন উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনকে। গত ১৯ এপ্রিল মিশনস্থ বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত এ আনন্দঘন অনুষ্ঠানে যোগ দেন ‘ইউনাইটেড ন্যাশন্স ডেলিগেশন্ উইমেন’স ক্লাবের সদস্যসহ বিভিন্ন স্থায়ী মিশনের কূটনৈতিক পরিবার ও নারী কূটনীতিকরা। জাতিসংঘে নিযুক্ত অষ্ট্রেলিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত জিলিয়ান বার্ড, ত্রিনিনাদ ও টোবাগো’র স্থায়ী প্রতিনিধি মিজ্ পেনিলোপে বেকলেস্সহ বেশ কয়েকটি দেশের নারী রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মিরোস্লাভ লাইচ্যাকের স্ত্রী মিজ্ জার্মিলা ল্যাজাকোভা অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল ও প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির বরেণ্য নারীরা। নারীদেরকে প্রাধান্য দিয়ে আয়োজিত এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটি প্রবাসে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে একটি ভিন্ন মাত্রা এনে দেয়।


মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনকে আবহমান বাঙালির সংস্কৃতির অসংখ্য উপাদান, যেমন- ঢাক-ঢোল-একতারা, পালতোলা নৌকা, ডালা-কুলা, তালপাতার পাখা, নকশী কাঁথা, মাটির পুতুল, মাটির থালা-বাসুন, কাঁচের চুড়ি, মাছ ধরার পোলো, পালকি, পাটের সুতার সিকা, আলপনা ও নানা-বর্ণের ব্যানার-ফ্যাস্টুন-বেলুন ও শাড়ি দিয়ে সাজানো সাজানো হয়।
বেলা তিনটায় অতিথিদের অভ্যর্থনা জানান জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন-এর সহধর্মীনী মিসেস ফাহমিদা জাবিন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রার উপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। মিশনের কূটনীতিকদের স্ত্রী ও কন্যারা সম্মিলিত কণ্ঠে পরিবেশন করে ‘এসো হে বৈশাখ’ গানটি। এছাড়া ‘তাকধুম তাকধুম বাজে বাংলাদেশের ঢোল’-সহ বেশ কয়েকটি গান পরিবেশন করে মিশন (বাকি অংশ ৩১ পাতায়)
পরিবারের শিশুরা। স্থানীয় ‘সৃষ্টি একাডেমি অব পাফর্মিং আর্টস’-এর নারী সদস্যরা বিভিন্ন দেশিয় ফোক গানের সাথে দলীয় ও একক নৃত্য পরিবেশন কওে, যা ছিল অনুষ্ঠানটির সবচেয়ে উপভোগ্য অংশ। সৃষ্টি একাডেমির পরিবেশনার পাশাপাশি বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের মারমা সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী একটি নৃত্যও পরিবেশিত হয় অনুষ্ঠানে।


বিচিত্র রংয়ের সমাহারে ভিন্ন আমেজ সৃষ্টি হয় পুরো আয়োজন জুড়ে। সৌন্দর্য্যরে চ্ছটায় তৈরি হয় এক অনাবিল শান্তির আবহ। বাঙালি সংস্কৃতির এই উৎসবে নতুন মাত্রা যোগ করে বিদেশিদের পড়ে আসা বৈচিত্র্যময় পোশাক। উপস্থিত বাঙালিরাও রং-বেরংয়ের দেশিয় পোশাক পড়ে উৎসবে যোগ দেন।
খাবারের আয়োজনে ছিল আটপৌরে বাঙালি আমেজ। ঘরে তৈরি পিঠা-পুলি-পায়েস, ক্ষীর, ভাত-মাছ, পোলাও, কাবাব, চটপটি, মুড়ি-মুড়কি-মুয়াসহ নানা ধরনের মসলাযুক্ত বাঙালি খাবারের পদ। অনুষ্ঠানে র‌্যাফেল ড্র’র আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেনÑ স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বিদেশি মেহমানদের সামনে বাংলা নববর্ষের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার বিরবণ তুলে ধরেন। তিনি জানান, বাংলা বর্ষবরণের এই ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেস্কোর ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
বাংলা নববর্ষের এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ উইমেন ক্লাবের সভাপতি মিজ্ তেরিসে টমমো মন্তি এবং কোষাধ্যক্ষ মিজ্ রানজু ভাটরা। বাংলাদেশি নারী কূটনীতিকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মিশনের কাউন্সিলর সঞ্চিতা হক।

সনাতন বেঙ্গলি সোসাইটি অব ক্যালিফোর্নিয়া
তপন দেবনাথ : সনাতন বেঙ্গলি সোসাইট অব ক্যালিফোর্নিয়ার আয়োজনে বাংলা নববর্ষ বরণ ১৪২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২২ এপ্রিল লসএঞ্জেলেসের অদূরে সেরিটোসের লিবাটি পার্কের মনোরম পরিবেশে বর্ষবরণ ও আনন্দমেলা অনুষ্ঠিত হয়। বৈশাখের ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। দিনব্যাপী বর্ষবরণের আয়েজনে বিভিন্ন প্রকার চিত্রাকর্ষক প্রতিযোগিতা আগতদের মাতিয়ে রাখে। কয়েকজন বাসা থেকে বিভিন্ন প্রকার পিঠা, ভর্তা নিয়ে আসেন- যা সবাই আনন্দের সাথে খান। সবাইকে সুস্বাদু মধ্যাহ্ন ভোজে আপ্যায়ন করা হয়। অনুষ্ঠান পচিালনা করেন বর্তমান সভাপতি বিদ্যুৎ দে, সহসভপতি অমৃত বিবেক সরকার, সাধারণ সম্পাদক তুলসী সাহা, সহসাধারণ সম্পাদক সৈকত মজুমদার, অর্থ সম্পাদক সুগুপ্ত মজুমদার, সংস্কৃতি সম্পাদক উপমা মজুমদার, গনসংযোগ সম্পাদক রাজীব মজুমদার, প্রকাশনা সম্পাদক সমিত চৌধুরী, সৈকত সিনহা আরো অনেকে। অনুষ্ঠানে প্রচুর সংখ্যক লোক সমাগম হয় ও সকলে প্রভুত আনন্দ লাভ করে।


সবশেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেনের সহধর্মীনী মিসেস ফাহমিদা জাবিন। বিদেশি অতিথিরা বাঙালি আপ্যায়ন ও আনুষ্ঠানিকতায় মুগ্ধ হন এবং এ আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

কিশোরগঞ্জ ডিস্ট্রিক্ট এসোসিয়েশন
নিউইয়র্ক : প্রবাসের অন্যতম বৃহত্তম সামাজিক সংগঠন ‘কিশোরগঞ্জ ডিস্ট্রিক্ট এসোসিয়েশন ইউএসএ ইনক’র আয়োজনে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ, ১৪২৫ উদ্যাপন করলো প্রবাসী নিউইয়র্কবাসী। গত শনিবার নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের পালকী পার্টি হলে সংগঠনের সভাপতি মাহফুজুল হাসান টুপনের সভাপতিত্ত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আইনুল ইসলামের সঞ্চালনায় বর্ষবরণ উদযাপন করা হয়।
বর্ষবরণের অনুষ্ঠানটি কয়েকটি পর্বে পালণ করা হয়। শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলোয়াৎ করেন নতুন প্রজন্মের সদস্য আবদুল্লাহ্ মাহাদী এবং পবিত্র গীতা পাঠ করেন চুমকী রায়।
প্রথম পর্বে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় এবং নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির নববর্ষের তাৎপর্য ও গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। এ পর্বটির দায়িত্বে ছিলেন উপ-কমিটির আহ্বায়ক জাওয়াদ হোসেন হাসিব, সদস্য সচিব বাবু পলাশ রায এবং সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া জামান।
নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর বক্তারা বলেন, বিশ্বের যেখানেই বাঙালি, সেখানেই প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হচ্ছে। আমাদের নববর্ষ আজ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে পালিত হচ্ছে। অনুষ্ঠানে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় ও বক্তব্য রাখেন ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য এবিএম ওসমান গনি, ভজন সরকার, মফিজুল রহমান দুলাল, উপদেষ্টা হাসিব হাসান, মো. হোসেন আনোয়ার (আঙ্গুর), মোহাম্মদ জাহেদুল হক, সিনিয়র সহ-সভাপতি ছাইদুর খান (ডিউক), সহ-সভাপতি পল্লব সরকার (মিলটন), সহ-সভাপতি এবাদুল হক, সহ-সভাপতি কামরুজ্জামান (মুরাদ), সহ-সভাপতি সেলিম চৌধুরী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সফিক খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক স্বপন বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হুদা জুয়েল, কোষাধ্যক্ষ ফাইজুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া (জামান)।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন্নাহার (লুনা)। বৈশাখী অনুষ্ঠানে তার সরব উপস্থিতি সবাইকে আনন্দে মাতিয়ে রাখে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ছিল সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উপস্থাপনায় ছিলেন সাংস্কৃতিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম (জয়)। অনুষ্ঠানের নতুন প্রজন্মের শিল্পী রওশন আলম ভূমি, আব্দুল্লাহ ্অল রিহানসহ নিউইয়র্কের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী রোকসানা মির্জা, রোজী কবির, তানভীর শাহীন।
উপস্থিত সবাইকে পান্তা-ইলিশ এবং বিভিন্ন ধরণের ভর্তা দিয়ে নৈশ ভৈাজে আপ্যায়ণ করা হয়। পরে সংগঠনের সভাপতি মাহফুজুল হাসান টুপন বর্ষবরণে উপস্থিত হওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
প্রবাসী মাদারীপুর জেলা সমিতি
নিউইয়র্ক : গত ১৪ এপ্রিল, শনিবার, সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের মেজবান রেষ্টুরেন্টে প্রবাসী মাদারীপুর জেলা সমিতি ইউএসএ’র উদ্যোগে বাংলা নববর্ষ-১৪২৫ বর্ণাঢ্যভাবে উদ্যাপন করা হয়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মজিবর রহমান এবং সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মো. লিয়াকত আলী খান ও মোশারফ হোসেন হাওলাদার। সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি মাইনুল ইসলাম মানিক।
অনুষ্ঠানে প্রধান ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা বোরহানউদ্দিন হাওলাদার, সাবেক সভাপতি আবুল হোসেন হাওলাদার ও রাশিদুজ্জামান বিপ্লব ভূঁইয়া, গিয়াস উদ্দিন খান, সৈয়দ এহতেশামুল হক, মোশাররফ হোসেন হাওলাদার, ইঞ্জিনিয়ার সেকান্দার আলী খান, সাইদুর রহমান, সরোয়ার হোসেন লিপন, রিয়াজ তালুকদার, ইমরান হোসেন, জিয়াউল ফাত্তাহ রিয়াদ, মফিজুর রহমান, রফিকুল ইসলাম গাউস, কামরুজ্জামান সরদার, রাম দাস, মাহমুদুর রহমান, সিরাজ মাতুব্বর, সোহেল খান, আসাদুজ্জামান, বুলবুল খান, নাহিদ আনোয়ার, মাসুদা আক্তার, শাহীন রহমান, নাজলী ইভা, সাবিনা খানম শিমু, রাশিদা বেগম, জায়েদা খান, আফরোজা সুলতানা নূপুর, আক্তার বানু সাথীসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী মাদারীপুরবাসী।
আনন্দঘন এ আয়োজনে সংগীত পরিবেশন করেন প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী ন্যান্সি খান, মামুন ও নুর জোহুরা মিম। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন হেলাল উদ্দিন। সংগীত পরিবেশনের সময় শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা স্টেজে এসে নেচে-গেয়ে আনন্দে মেতে উঠে। বর্ষবরণের এ আনন্দ আয়োজনে অতিথি আপ্যায়নে ভর্তা-ভাত, ইলিশ ভাজা ও পায়েস ছিল অন্যতম আকর্ষণ। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
ব্রুকলিন ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলি
নিউইয়র্ক : ব্রুকলিন ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলি উদ্যোগে প্রতিবারের মত এবারও পালিত হলো বাংলা নববর্ষ-১৪২৫। গত ১৫ এপ্রিল, রোববার, কনি আইল্যান্ড এভিনিউস্থ হাদি রেস্টুরেন্টের বর্ণাঢ্য হলরুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অথিতি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আমাদের কমিউনিটির বিশেষ ব্যাক্তিত্ব ডা. উৎপল চৌধুরী।


তিনি তার বক্তব্যে বাংলা ভাষা চর্চার প্রতি আমাদের প্রজন্মকে অধিকতর উদ্বুদ্ধ করার জন্যে আহ্বান জানান।
বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী অজিত ভৌমিক। তিনি তার বক্তব্যে পরবর্তী প্রজন্মকে ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি বাংলাভাষা চর্চার মাধ্যমে শিক্ষিত হয়ে উঠার জোর আহ্বান জানান। তিনি এ সংগঠনের মাধ্যমে অচিরেই সবার দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি বাংলা শিক্ষার স্কুল চালু করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এ সংগঠনের সাথে যারা জড়িত থেকে বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছেন এবং অনুষ্ঠানকে সুন্দর থেকে সুন্দরতর করেছেন, তারা হলেনÑ দীলিপ নাথ, সোমেন মজুমদার, রাজীব আচার্য্য, রাজীব দাস, সঞ্জীব তালুকদার, মনোতোষ দে, সুমন বিশ্বাস, কাঞ্চন সিকদার, দীপক নাথ, অপু দাশ, শ্যামল বিশ্বাসসহ আরো অনেকে।
অনুষ্ঠানটি বিকাল ৪টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত উপভোগ করছেন আগত অতিথিরা। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
কারিগর প্রোডাকশন, ফ্লোরিডা
ফ্লোরিডা: গত ১৫ এপ্রিল বাংলা নববর্ষকে বরণ করার উদ্দেশ্যে সাউথ ফ্লোরিডার কারিগর প্রোডাকশন রয়েল পাম বীচ পার্কে আয়োজন করেছিলো এক বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রথমেই বাংলা ১৪২৫ সালকে বরণ করার জন্য এক বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। এই শোভাযাত্রার প্রধান আকর্ষণÑ বিশালকার চারুকর্ম পুতুল, হাতি, কুমির, লক্ষ্মীপ্যাঁচা, ঘোড়াসহ বিচিত্র মুখোশ এবং সাজসজ্জা। বাদ্যযন্ত্র ও নৃত্যে মুখরিত হয়ে উঠেছিল অনুষ্ঠানস্থল।
শোভাযাত্রা উদ্বোধনের আগে আবৃত্তিকার কেয়া রোজারিও বলেন, ‘বাঙালির সার্বজনীন এই প্রাণের উৎসবে যা কিছু পচাগলা অশুভ, অমঙ্গলÑ তা আমরা বর্জন করি, সব কূপম-ুকতা, জীর্ণতাকে বুড়া আঙ্গুল দেখিয়ে আজ শুধু ঢাকাতে নয়, বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে, এমন কি বিদেশের মাটিতেও আমরা আয়োজন করছি এই মঙ্গল শোভাযাত্রা।’ উল্লেখ্য জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কো ২০১৬-এর ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’কে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
পরে স্থানীয় শিল্পীদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি দর্শকদের মাতিয়ে রাখে। শিশু-কিশোর শিল্পীদের মধ্যে অংশগ্রহণ করেÑ মানহা, মুনিবা, রাইকা, রাইসা, লামিয়া, তাহিয়া, জইতা, সাহিরা, অনিমেষ, সামারা, সুহাইরা, সারিনা, তাজরিয়ান, রাফি, রিফাত, অর্ক, এলমা, তামারা, মাটি, মন্টি, তাহিয়াত, নাতিফা, অনিমেষ, আরিক, আফ্রা, মাইশা, ও নওরীন। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন দেবযানী ও পাভিত্রা।
অংশগ্রহণ করেন ফ্লোরিডার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যÑ একতার, ডায়না ড্যান্স, সোমা দাস ও তার দল, প্রকৃতির নূর। কবিতা আবৃত্তি করেন- ড. সুলতান সালাউদ্দীন, কেয়া রোজারিও, ড. রোকসানা অ্যানি ও মাহবুবুর রহমান, ফ্লোরিডার সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব ও ফোবানা ২০১৮-এর চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান।
সঙ্গীত পরিবেশন করেন- সামীরা জাহাঙ্গীর, মোফাজ্জল হক রনী, অনীক দে, মাফিয়া রহমান, শিপু রহমান, টিপু আলম ও দেবজ্যোতি সেন। এছাড়াও মির্জা আউয়াল ও রোজিনা করিমের দ্বৈতকণ্ঠের গান দর্শকদের মাতিয়ে রাখে।


অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে পরিবেশিত ‘যাত্রা’ দর্শকদেও প্রচুর আনন্দদান করে। যাত্রায় অভিনয় করেন- লাকি, এল্মা, হৃদি, যাহিনা, শাইখ, রিপন, রিমা, অর্ণব ও তাসবিন। ঝড়-বৃষ্টির জন্য অনুষ্ঠানে কিছুটা বিঘœ ঘটলেও দর্শক তা উপেক্ষা করে পুরো অনুষ্ঠানটি উপভোগ করে। সামগ্রিক অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনায় ছিলেন নন্দিনী ভৌমিক ও সামিয়া রহমান।
অনুষ্ঠান সহযোগিতায় ছিলেন মীম ও শাইখ। দর্শক জরিপে সাউথ ফ্লোরিডায় এটি একটি ভিন্নধর্মী অনুষ্ঠান, যা মানুষকে আনন্দে ভরপুর করে রাখে। পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন- কারিগরের পরিচালক টিপু আলম, তাহমিদা আনিস রিমা, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব ও সংগঠক চিত্রা সুলতানা।
রংপুর জেলা সমিতি
নিউইয়র্ক : রংপুর জেলা সমিতি ইন্ক ইউএসএ’র আয়োজনে গত ১৫ এপ্রিল, রোববার, জ্যাকসন হাইটসের পালকি সেন্টারে বর্ষবরণ-১৪২৫ ও নতুন কমিটি (২০১৮-২০১৯) জাঁকজমকপূর্ণ অভিষেক অনুষ্ঠান হয়ে গেল। দুপুর দেড়টায় পবিত্র কোরআন তেলওয়াত ও গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সবাই মিলে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার পর অনুষ্ঠানের মূল পর্ব আরম্ভ হয়।
শুরুতেই শপথ গ্রহণ ও বিদায়ী সভাপতির বক্তব্যের পর নতুন কমিটির সভাপতি আসেফ বারীর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন সদ্য-সাবেক সভাপতি মালেকুজ্জামান মানিক। বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মোতালেবের শুভেচ্ছা বক্তব্যের পাশাপাশি একে একে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি আতোয়রুল আলম, সভাপতি নর্থ বেঙ্গল ফাইন্ডেশন; মশিউর রহমান, প্রাক্তণ সভাপতি, রংপুর জেলা সমিতি; নাসির খান পল, উপদেষ্টা নর্থ বেঙ্গল ফাইন্ডেশন ইউএসএ; নার্গিস আহমেদ, প্রাক্তণ সভাপতি, বাংলাদেশ সোসাইটি; নূর ইসলাম বর্ষণ, কমিউনিটি এ্যাক্টিভিস্ট; কামাল আহমেদ, সভাপতি বাংলাদেশ সোসাইটি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এটর্নি ব্রুস ফিশার তার বক্তব্যে বাংলাদেশ তথা বাঙালি সংস্কৃতির ভূঁয়সী প্রশংসা করেন।
বক্তব্যের পালা শেষই শুরু হয় প্রীতিভোজ। এতে ছিলো বাঙালির রসনা বিলাসী রকমারি খাবার, সংগে ছিল বিভিন্ন রকমের পিঠা পায়েস।
অনুষ্ঠানের শেষার্ধ্বে কমিউনিটিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য রংপুর জেলা সমিতির নতুন সংযোজন বেগম রোকেয়া স্মারক সম্মাননা প্রদান করা হয়। চলতি বছর সম্মাননা গ্রহণ করেনÑ এটর্নি ব্রুস ফিসার, আতোয়ারুল আলম, প্রিন্স রায়হান, নাসির খান পল, নার্গিস আহমেদ, ডা. নার্গিস রহমান, মালেকুজ্জামান মানিক, মশিউর রহমান, নূর ইসলাম বর্ষন ও মো. সোলাইমান।
পরিশেষে মনোজ্ঞ সংগীত পরিবেশন করেন বাবলী হক, শাহনাজ বেগম, বকুল তামান্না, সোনিয়া, মিতা কর্মকার, বাপ্পী কর্মকার, নার্গিস রহমান ও কানিজ আয়শা। কবিতা পাঠ করেন জিনাত রিনা।
টাইম টিভির উপস্থাপিকা দিমা রিফাত তিথি ও সাধারণ সম্পাদক মোতালেবের সাবলীল উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানটি সবার কাছে উপভোগ্য ও আকর্ষণীয় ছিল। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।