বরিশাল : বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজ ছাত্র সংসদ (বাকসু) নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন ছাত্র নেতারা। দীর্ঘদিন পর ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আভাস পাওয়ায় তাদের মধ্যে ফিরে এসেছে চাঞ্চল্য।
তাদের দাবি, অচিরেই আয়োজন করা হোক ছাত্র সংসদ নির্বাচনের। এতে যেমন শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা হবে তেমনি ছাত্র রাজনীতির পরিবেশ ফিরে আসবে ক্যাম্পাসে।
বিএম কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালের পর থেকেই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে পারেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সর্বশেষ নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হন ছাত্রদল নেতা মশিউল আলম সেন্টু। এরপর থেকেই নির্বাচন হয়নি বাকসুতে।
তবে ২০১১ সালে ছাত্র সংসদ পরিচালনার জন্য তিন মাসের অস্থায়ী কর্মপরিষদ গঠন করা হয়। সেই কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলেও আর নির্বাচনের আয়োজন করা হয়নি।
সূত্র জানায়, বাকসু নির্বাচনের বেশ দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বিএম কলেজের ১০ ছাত্র নেতা। তারা হলেনÑ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিকুল্লাহ মুনিম, ছাত্রলীগ নেতা নূর আল আহাদ সাঈদী, জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজভী আহম্মেদ রাজা রাঢ়ী, মানবকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক তোহারুল ইসলাম কবির, কলেজ ছাত্রলীগ নেতা খায়রুল হাসান সৈকত, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রনি, বিএম কলেজ ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি জয় চক্রবর্তী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও যোগাযোগ সম্পাদক কে এম শরীয়তুল্লাহ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বিএম কলেজ শাখার সভাপতি রেজাউল করিম, বিএম কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি কিশোর চন্দ্র বালা, বিএম কলেজ ছাত্রফ্রন্টের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোজাম্মেল হক সাগর ও সাধারণ সম্পাদক সাগর দাস আকাশ। তরা সবাই বিএম কলেজের ছাত্র বলে জানা গেছে। সেই সুবাদেই তারা বাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কলেজে নিয়মিত শো-ডাউন দিচ্ছেন। জানান দিচ্ছেন নিজের অবস্থান।
তবে এসব ক্ষেত্রে ছাত্রলীগ, ছাত্রমৈত্রী, ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রফ্রন্ট এগিয়ে থাকলেও পিছিয়ে রয়েছে ছাত্রদল। ছাত্রদল নেতাদের দাবি, বাকসু নির্বাচন আয়োজনের কোনো পরিবেশ এখন পর্যন্ত সৃষ্টি হয়নি।
যদি সহাবস্থান পরিবেশ সৃষ্টি হয় তাহলে ছাত্রদল অবশ্যই অংশগ্রহণ করবে। বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রনি বলেন, ‘আমি এই কলেজের রানিং স্টুডেন্ট। সেই হিসেবে আমিও ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবো।
তবে এ ক্ষেত্রে সরকার দলের নমনীয় ভাব আনা দরকার। সব ছাত্র সংগঠন যাতে এ নির্বাচনে অংশ নিতে পারে সেই ব্যবস্থা করা উচিত সরকারের। তা ছাড়া কলেজ প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা থাকা উচিত এ নির্বাচনে। ছাত্র সংসদ হচ্ছে শিক্ষার্থীদের হƒৎপিÐ। দীর্ঘদিন এই হƒৎপিÐ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নেই। যাতে অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।’
বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিকুল্লাহ মুনিম জানান, বিএম কলেজের ছাত্র রাজনীতির জন্য অনেক ত্যাগ রয়েছে ছাত্রলীগের। ক্যাম্পাসে সহাবস্থান ফিরে এনেছে ছাত্রলীগ। বাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগ অবশ্যই অংশগ্রহণ করবে।
বিএম কলেজ ছাত্র কর্মপরিষদের সাহিত্য সম্পাদক ও ছাত্রলীগ নেতা নূর আল আহাদ সাঈদী জানান, আমাদের মনে হচ্ছে ডাকসু নির্বাচন সম্পন্ন হলেই সব জটিলতার অবসান হবে। সেভাবেই আমরা সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করি ডাকসু নির্বাচনের পর বাকসু নির্বাচনের আয়োজনে সফল হবে কলেজ প্রশাসন। বিএম কলেজ ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি জয় চক্রবর্তী বলেন, দৌড়ঝাঁপ শুধু আমরা করছি না। সব সংগঠনের ছাত্র নেতারাই করছে।
এ বিষয়ে বিএম কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান সিকদার বলেন, ছাত্র সংসদ হচ্ছে ক্যাম্পাসের প্রাণ। এ নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। আমরা মনে করছি ডাকসু নির্বাচন হলে ক্যাম্পাসে নির্বাচনের একটি পরিবেশ সৃষ্টি হবে এবং এরপরই ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশ অনুযায়ী বাকসু নির্বাচনের আয়োজন করা হবে।