
ঠিকানা রিপোট : কোভিডের কারণে যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই অবস্থা এখন আর নেই। চলতি মাস থেকে তা শেষ হয়েছে। ফলে কোভিডের সময়ে স্বাস্থ্যগত সমস্যার কথা বিবেচনা করে এ দেশে বর্ডার দিয়ে মানুষ প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এ জন্য টাইটেল ৮ স্থগিত করা হয়েছিল। আর তখন চালু হয়েছিল টাইটেল ৪২। বর্তমানে কোভিড শেষ হওয়ায় টাইটেল ৪২ বাতিল করে ফের কার্যকর করা হয়েছে টাইটেল ৮। ফলে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে এত দিন যারা ঢুকতে পারছিল না, তারা এখন চাইলে ঢুকতে পারবে। তারা এখানে প্রবেশ করার পর আশ্রয় চাইতে পারবে। তবে কেউ রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করতে চাইলে তাকে এক বছরের মধ্যে আবেদন করতে হবে।
তবে এক বছরের মধ্যে আবেদন করতে না পারলেও সুযোগ আছে। যদি তাদের দেশের অবস্থার পরিবর্তন হয়, এক্সট্রা অর্ডিনারি সারকামস্টেন্স হয়। এটাও প্রমাণ করতে হবে যে এক বছরের মধ্যে ফাইল করার জন্য আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করার জন্য যোগাযোগ করেছিলেন। যদি কেউ এক বছরের মধ্যে আবেদন করতে না পারেন এবং এক্সসেপশন যদি না হয়, তাহলে কোর্ট থেকে উইথ হোল্ডিং দেওয়া হয়। এই উইথ হোল্ডিংয়ের বিষয়টি খুবই খারাপ। কারণ উইথ হোল্ডিং পাওয়া ব্যক্তিরা ওয়ার্ক পারমিট পাবেন, সোশ্যাল সিকিউরিটি পাবেন কিন্তু গ্রিনকার্ড পাবেন না। আর গ্রিনকার্ড না পেলে ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত এবং সরকারি অন্যান্য যেসব সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়, সেগুলো তারা পাবেন না। তারা যখন তখন দেশের বাইরেও যেতে পারবেন না। যতবারই তারা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে যাবেন, ততবারই তাদেরকে অনুমতি নিয়ে যেতে হবে।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ অ্যাটর্নি রুমা বলেন, এখন যারা বর্ডার দিয়ে আসছে তাদের ইন্টারভিউ হয়, কোর্টে অ্যাপিয়ার হওয়ার জন্য ডেট দেয়, নোটিশ পাঠায়। সেখানে সব তথ্য থাকে। সেই হিসেবে কোর্টে যেতে হবে। কোর্টে হাজির হলে সেখানে শুনানি হয়। ওখানে ৪-৫টি অ্যালিগেশন লেখা হয়। কোথা থেকে এসেছে, কেমন করে এসেছে, কবে কখন এসেছে, কোন বর্ডার দিয়ে এসেছে, পাসপোর্ট আছে কি নেইÑএসব তথ্য। আশ্রয় চাওয়ার জন্য যেহেতু কোনো ডিপোর্টেশন নেই অথবা রিমুভাল অর্ডার নেই, ফলে তারা অ্যাফারমেটিভলি অ্যাপ্লিকেশন সাবমিট করতে পারেন। আবেদন করার পর রিসিভিং ডেট দিয়ে লেটার আসবে। সেখানে আসার পর ১৫০ দিন অপেক্ষা করতে হয়। এরপর সোশ্যাল সিকিউরিটি এবং ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারবে। সাধারণত এ ক্ষেত্রে দেখা যায় ৬ মাস থেকে দুই বছর অপেক্ষা করতে হয়। ইন্টারভিউর জন্য যখন ডাকা হয়, তখন চাইলে অফিসার গ্র্যান্ট করতে পারে আবার গ্র্যান্ট না করে কোর্টে পাঠাতে পারে। কারো কারো কোর্টে চলে যায়। রিমুভাল প্রসেডিং যায়। বিচারকের সঙ্গে কথা হয়। কোনো কিছু আপডেট করার থাকলে তা করা হয়। এরপর ফাইনাল হেয়ারিংয়ের জন্য ডেট দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, টাইটেল ৮ ফের কার্যকর হওয়ায় এখন চাইলেই যে কেউ বর্ডার দিয়ে এখানে এসে সরাসরি অ্যাসাইলাম আবেদন করতে পারবে না। অন্য কোনো দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে ব্যর্থ হলে এরপর চেষ্টা করতে পারবে। আর কাউকে যদি একবার বর্ডার দিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া না হয় এবং পাঁচ বছরের মধ্যে তিনি আবার এখানে আসেন বা প্রবেশ করার চেষ্টা করেন, তাহলে তিনি গুরুতর অপরাধ করেছেন বলে বিবেচনা করা হবে।
তিনি আরো বলেন, অনেক সময় এমনও দেখা যায়, বর্ডার দিয়ে কেউ আসার পর আইস তাকে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠাল। কেন এসেছে, কী সমস্যা ছিল, অ্যাসাইলাম গ্রাউন্ড আছে কি না, রাজনৈতিক বা ধর্মীয় কারণে এসেছে কি না এমন বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা হলো। এটা হলো ক্রেডিবল ফেয়ার ইন্টারভিউ। জজ অর্ডারের মাধ্যমে রিলিজ করে দিলে ডিটেনশন সেন্টারে থাকলেও আবেদন করা যাবে। আবার অবৈধভাবে আসার পর কেউ রিমুভাল প্রসেসিংয়ের মধ্যে পড়লে তার ফাইনও হতে পারে। তখন ওই ব্যক্তি তার এখানে আসার বিষয়টি স্বীকার করবেন এবং এখানে আশ্রয় ও প্রতিকার চাইবেন।
বাংলাদেশ থেকে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে আসে। বলে, হারিয়ে গিয়েছিলাম, বন্দী করে রেখেছিল। রুমা বলেন, এ ধরনের আসা আমি সাপোর্ট করি না। এনকারেজ করব না। এখানে আসার পর অনেকেই বিপদে পড়ে, তাদেরকে আমাদের সহায়তা করতে হবে। তবে এভাবে না আসাই ভালো।