বাপার বার্ষিক ডিনারে মেয়র সিটির : উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে বাংলাদেশিরা

নিউইয়র্ক : জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনকালে মেয়র এরিক অ্যাডামসসহ অন্যান্যরা।

ঠিকানা রিপোর্ট : নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেছেন, আমেরিকা হচ্ছে এমন একটি দেশ যেখানে বসতি গড়তে হলে মাতৃভূমির মায়া-মমতা ত্যাগের প্রয়োজন হয় না। অর্থাৎ এ দেশটিকে নিজের মনে করতে পারলে প্রিয় মাতৃভূমিকে এখানেই নিয়ে আসা যায়। আমেরিকার মহাত্ম এভাবেই মহিমান্বিত হচ্ছে বহুজাতিক সমাজে নিজ নিজ সংস্কৃতির ধারা প্রবাহিত রাখার মধ্য দিয়ে। নিউইয়র্ক সিটির উন্নয়নে বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছেন।
নিউইয়র্ক পুলিশে কর্মরত বাংলাদেশি আমেরিকানদের সংগঠন বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা), ষষ্ঠ বার্ষিক অ্যাওয়ার্ড ডিনার’ অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন মেয়র অ্যাডামস। ২৮ অক্টোবর শুক্রবার নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের একটি অভিজাত পার্টি হলে এই অনুষ্ঠান হয়।
নিউইয়র্ক পুুলিশ বাহিনীতে কর্মরত বাংলাদেশি অফিসারদের প্রশংসা করে মেয়র বলেন, আপনারা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন বলেই এই সিটির জনজীবনকে নিরাপদ রাখা সম্ভব হচ্ছে। একইসঙ্গে নিজ কমিউনিটির সকলের প্রতি যাতে ভিন্ন কমিউনিটির লোকজনের শ্রদ্ধাবোধ বাড়ে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। আর এভাবেই সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধন সুসংহত হলে বিশ্বের রাজধানী খ্যাত এই সিটির ইমেজ আরো উজ্জ্বল হবে।

নিউইয়র্ক : অনুষ্ঠানে মেয়র এরিক অ্যাডামসসহ অন্যান্যরা।


এরিক অ্যাডামস বলেন, নিজের ভাষা, সংস্কৃতিকে কখনো ছোট ভাববেন না। তাহলে অনেক সমস্যার সহজ সমাধান হয়ে যায়। বিশেষ করে এদেশে বেড়ে উঠা অথবা জন্মগ্রহণকারি প্রজন্মও গৌরববোধ করবে তার মা-বাবার সমাজ নিয়ে। নিউইয়র্ক সিটিতে বহু ভাষা ও বহুবর্ণ আর বহু জাতির মানুষ বাস করছে। সবকিছু মাড়িয়ে আমি খুব সহজেই বাংলাদেশি আমেরিকানদের দেখতে পাই তাঁদের কর্মনিষ্ঠা আর আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হিসেবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, গৌরবে আমার বুকটা ভরে যায়, যখন এই সিটির নানা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে থেকে বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশনের সদস্যগণের ব্যাপারে ইতিবাচক মন্তব্য শুনি। সকলেই প্রশংসা করেন প্রতিটি পুলিশ অফিসারের কর্মনিষ্ঠা-দায়িত্ববোধের বিষয়ে। বাংলাদেশের একজন নাগরিক এবং কনসাল জেনারেল হিসেবে এরচেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে। এজন্য আমি বাপার প্রতিটি সদস্য-কর্মকর্তাকে অভিবাদন জানাচ্ছি।


কমিউনিটির জনপ্রিয় দুই কণ্ঠশিল্পী রাজিব ও তৃণিয়া হাসানের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের পর বাপার এই বর্ণাঢ্য ডিনারের সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও অ্যাওয়ার্ড বিতরণ পর্ব শুরু হয় সংগঠনের সভাপতি কারাম চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। বাপার বোর্ড অব ট্রাস্টির সকলকে মঞ্চে ডেকে পরিচিতি পর্বের পর সমাপনী ভাষণ দেন বাপার ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এরশাদুর সিদ্দিক। কমিউনিটির নেতৃবৃন্দকে পরিচয় করিয়ে দেন বাপা’র সেক্রেটারি একেএম আলম প্রিন্স। অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনদের মধ্যে ছিলেন কুইন্স ডেমোক্রেটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, সিটি মেয়রের এশিয়ান বিষয়ক উপদেষ্টা ফাহাদ সোলায়মান, মূলধারার রাজনীতিক গিয়াস আহমেদ, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী নুরুল আজিম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক মাহাবুবুর রহমান টুকু, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ও মূলধারার রাজনীতিক ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, পিজি গ্রুপের সিইও পার্থগুপ্ত, ইউনাইটেড টেকনোলজি কোম্পানির ‘প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনি’র সহযোগী পরিচালক মোহাম্মদ ইসলাম, অ্যাটর্নি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, কাজী আজম, মাকসুদ চৌধুরী, ফিরোজ আলম প্রমুখ।
আগত অতিথিগণকে স্বাগত জানান বাপা’র মিডিয়া লিঁয়াজো জামিল সারোয়ার জনি, কমিউনিটি লিঁয়াজো মাহবুবুর জুয়েল, প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর মামুন সর্দারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা।