বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র : ৩২ কোটি মানুষের হাতে ২৯ কোটি অস্ত্র!

Students released from a lockdown embrace following following a shooting at Marjory Stoneman Douglas High School in Parkland, Fla., Wednesday, Feb. 14, 2018. (John McCall/South Florida Sun-Sentinel via AP)

ঠিকানা রিপোর্ট : সভ্যতার উৎকর্ষের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীতে আবিষ্কৃত হয়েছে নানা ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র। আদিমকাল থেকে মানুষ অস্ত্রের ব্যবহার শুরু করে নিজেকে বন্য প্রাণীর আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার তাগিদে। সময়ের অগ্রযাত্রায় অস্ত্রের ব্যবহার তুঙ্গে উঠেছে। এখন অস্ত্রের ঝনঝনানি বেড়েছে মানুষ খুনের কাজে। এরই বাস্তব নিদর্শন- সাড়ে ৩২ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত আমেরিকায় ২৯ কোটি মানুষের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র।
আমেরিকায় গোলাগুলিতে সাধারণ মানুষ নিহত হওয়া এখন প্রতিদিনের ঘটনা। গত ১৪ ফেব্রæয়ারি, বুধবার ফ্লোরিডার হাই স্কুলের এক বহিষ্কৃ ছাত্রের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৭ জন। এমন গোলাগুলির ঘটনার পরই কিছু তাক লাগানো তথ্য প্রকাশ করেছে ‘গান ভায়োলেন্স আর্কাইভ’ শীর্ষক একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান।
১. প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছেÑ ২০১৭ সালে এলোপাতাড়ি গুলিতে (গধংং ঝযড়ড়ঃরহম) ৩৪৬ জন নিহত হন। ২০১৬ সালে এই সংখ্যা ৪৩২ এবং ২০১৫-তে এটি ছিল ৩৬৯।
২. যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণ এলোপাতাড়ি গোলাগুলির (গধংং ঝযড়ড়ঃরহম) থেকে ‘বড় ধরনের এলোপাতাড়ি গুলি’ (গধলড়ৎ গধংং ঝযড়ড়ঃরহম)-কে আলাদা করে দেখা হয়। কোনো ঘটনায় চারজনের বেশি লোক নিহত বা আহত হলে তাকে ‘মেজর ম্যাস শুটিং’ বলা হয়। ২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গড়ে প্রতি ৭২ দিনের ব্যবধানে একটি বড় ধরনের এলোপাড়াতি গুলির ঘটনা ঘটে। ২০০০ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত এ ব্যবধান ছিল ১৬২ দিন। অর্থাৎ, দিন দিন এমন ঘটনার হার বেড়েই চলেছে। গত বছরের অক্টোবর মাসে লাস ভেগাসে বন্দুক হামলায় নিহত ৫৮ জনকে এক কবর¯ানে দাফন করা হয়েছে।
৩. গোলাগুলির কোনো বড় ঘটনার পর আমেরিকাজুড়ে ‘অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবি উঠলেও আশ্চর্যজনকভাবে বেড়ে যায় অস্ত্র বিক্রি। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়Ñ ২০১৫ সালের নভেম্বরে সান বার্নান্দিনোতে আগ্নেয়াস্ত্র হামলায় ১৪ জন নিহত হয়। তাৎক্ষণিকভাবে ওবামা প্রশাসন অস্ত্র আইনে কড়াকড়ি আরোপের ঘোষণা দেয়। কিš ডিসেম্বর মাসে দেখা যায় ব্যক্তিগত অস্ত্র কেনার হিড়িক পড়েছে মার্কিনীদের মধ্যে। নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, নতুন হামলায় নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থেকেই অস্ত্র কেনায় আগ্রহী হন সাধারণ মানুষ।
৪. একই দিনে একাধিক ¯ানে এলোপাতাড়ির গোলাগুলির ঘটনায় হত্যার ঘটনাও ঘটছে। গত বছরের অক্টোবরে একই দিনে মান্দালা উপক‚লে এবং কানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুরূপ ঘটনা ঘটেছে। উভয় ঘটনায় ৬২ জন নিহত হন।
৫. সাধারণ মানুষের অস্ত্রের বৈধ মালিকানার দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে শীর্ষ ¯ানয়ি। দেশটির শতকরা ৯০ শতাংশ মানুষের বৈধভাবে ব্যক্তিগত অস্ত্র রয়েছে। দেশটিতে ৩২ কোটি মানুষের হাতে ২৯ কোটি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। ২০০৭ সালের এক হিসাব মতেÑ যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণ মানুষের কাছে ২৫ থেকে ২৯ কোটি অস্ত্র রয়েছে। বর্তমানে দেশটির জনসংখ্যা ৩২ কোটির একটু বেশি।
৬. ম্যাস শুটিং বা এলোপাতাড়ি গুলি নিয়ে এতো তথ্য দিলেও যুক্তরাষ্ট্রে গোলাগুলিতে নিহতের সংখ্যার খুবই নগণ্য অংশ এ ধরনের ঘটনায় হয়ে থাকে। ২০০১ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত ১৩ বছরে দেশটিতে গুলিতে নিহতের সংখ্যা চার লাখ ছয় হাজার ৪৯৬ জন। আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন এ তথ্য দিয়েছে। এর মধ্যে দুই লাখ ৩৭ হাজার ৫২ জন আত্মহত্যা করেছে যা আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে। এক লাখ ৫৩ হাজার ১৪৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া সাড়ে আট হাজার জন দুর্ঘটনায় গুলিতে নিহত হয়েছেন। পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে চার হাজার ৭৭৮ জনকে।
৭. অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দিক থেকে মার্কিনীরা পুরোপুরি দ্বিধাবিভক্ত। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসের এক জরিপে দেখা গেছেÑ ৪৭ শতাংশ মার্কিনী নিজেদের হাতে বন্দুক রাখার পক্ষে। আর ৫১ শতাংশ অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষে। আগের দশক থেকে ব্যক্তিগত অস্ত্র রাখার পক্ষে জনমত বাড়ছে। ১৯৯৯ সালে ৬৫ শতাংশ লোক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষে মত দিয়েছিলেন।
ছাত্রছাত্রীদের আকুতি: অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিকারবিহীন মৃত্যুতে গান বিরোধী বিক্ষোভে টালমাটাল আমেরিকা। বিভিন্ন তথ্যে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত দেড় মাসে ১৮টি স্কুলে বন্দুক হামলা হয়েছে। এ সব হামলায় অনেক শিশু- কিশোর প্রাণ হারিয়েছে এবং আহত হয়েছে অনেকে। গত দেড় মাসে যে ১৮টি স্কুলে বন্দুক হামলা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- শিয়াটল ওয়াশিংটন, লসএঞ্জেলেস, সানবানডিনো ক্যালিফোর্নিয়া, সারিয়াবিস্তা এরিজোনা, ম্যাপেলউড ইন্ডিয়ানা, ডিয়ারবন মায়ামি, স্টেট জোন্স মায়ামী, বেন্টন ক্যান্সাস, ডিনিসন টেক্সাস, মবলি আলাবামা, জেন্টেলি লসএ্যাঞ্জেলেস, ব্রঙ্কস নিউইয়র্ক, ওকসন ম্যারিল্যান্ড, পিলডেলফিয়া, উইংসনটর নর্থক্যারোলিনা ও পার্কল্যান্ড ফ্লোরিডা।
সবশেষ গত ১৪ ফেব্রæয়ারির ভালবাসা দিবসে ফ্লোরিডার ব্রাওয়ার কাউন্ট্রির পার্কল্যান্ডে স্টোনমেন্ট হাই স্কুলের নির্মম হামলায় ১৭ জন ছাত্রছাত্রী প্রাণ হারিয়েছে। নানাবিধ কারণে স্কুল থেকে বহিষ্কৃত ছাত্র ১৯ বছর বয়সী নিকোলাস ক্রুজ এই নৃশংস হামলা চালায়। যে ছাত্রছাত্রী প্রাণ হারিয়েছে তাদের মধ্যে ১২ জনই ঘটনা¯লে এবং বাকিরা হাসপাতালে। জানা গেছে, এই ঘটনায় বাংলাদেশী বংশোদ্ভ‚ত কেউ প্রাণ হারাননি। এই এলাকায় কোন বাংলাদেশী পরিবারও থাকেন না। মূলত: এই এলাকায় শ্বেতাঙ্গরাই থাকেন এবং হামলাকারীও শ্বেতাঙ্গ। এই হামলায় অন্য কেউ জড়িত নেই বলে ¯ানীয় পুলিশ গণমাধ্যমকে জানিয়েছে। পুলিশ আরো জানায়, নিকলাসের সামাজিক যোগমাধ্যমসহ অন্যান্য নেটওয়ার্ক পরীক্ষা করা হচ্ছে। নিকোলাসের সাবেক শিক্ষক জিম গার্ড জানান, অন্যান্য ছাত্রছাত্রীদের জন্য নিকোলাস নিরাপদ ছিলো না বলেই তাকে স্কুলে নিষিদ্ধ করা হয়।
কী কারণে নিকোলাস এই হামলা ঘটিয়েছে পুলিশ তা নিশ্চিত করতে পারেনি। গ্রেফতারের পর নিকোলাসকে ¯ানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসা শেষে তাকে পুলিশ কাস্টডিতে নেয়া হবে।
ফ্লোরিডার এই বর্বর হামলার নিন্দা জানিয়েছেন অনেকে। তারা ক্ষোভের সাথে বলেন, এই বর্বরতার শেষ কোথায়? একের পর এক এই ধরনের ঘটনা ঘটলেও কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। এ সব ঘটনায় অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তারা এখন স্কুলগুলোকে নিরাপদ মনে করছেন না। একটি নৃশংস ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট একটি বিবৃতি দিয়েই শেষ। কিš কোন অপরাধীদের বিচার হয় না। এমন কি অস্ত্র আইনও বাতিল করা হচ্ছে না। অস্ত্র আইন বাতিল করা হলে এই ধরনের ঘটনা রোধ করা অনেকটাই সম্ভব হবে। ফ্লোরিডার ঘটনায় হতবিহŸল হয়ে পড়েছে পুরো আমেরিকা। কান্না জড়িত কন্ঠে ছাত্রছাত্রীরা আকুতি জানিয়েছেন, ’প্রেসিডেন্ট প্লিজ এ্যাক্ট। আমরা আর কোন লাশ দেখতে চাই না। আমরা জানি না কেন ইন্নোসেন্ট শিশু- কিশোরদের জীবন দিতে হচ্ছে? আর কত লাশ দেখলে আপনি এ্যাক্ট করবেন?’
এদিকে ফ্লোরিডার ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং মানসিক চিকিৎসার উপর জোর দিতে বলেছেন। এফবিআই আগেই দুই বার সতর্ক কিেছলো নিকোলাসের বিষয়ে কিš কোন ব্যব¯া নেয়া হয়নি। উল্টো প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, এফবিআই যদি রাশিয়া নিয়ে বেশি সময় না কাটাতো তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না। ঘটনা¯ল পরিদর্শন করেও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কোন বক্তব্য রাখেননি প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী বিক্ষোভ করছে অস্ত্র আইন বন্ধে। তারা বলেছেন, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন করতে হবে এবং অবাধে অস্ত্র বিক্রিও বন্ধ করতে হবে। তারা অস্ত্র আইন বন্ধ না করার জন্য নোংরা রাজনীতি এবং রাজনীতিবিদদের দায়ী করেন।
এদিকে ফেøারিডার ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীরা গত ১৯ ফেব্রæয়ারি ওয়াশিংটনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। তারা হোয়াইট হাউজের সামনে শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ জানায়। এ দিকে ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদ- বিক্ষোভ প্রতিদিন অব্যাহত রয়েছে।
আগামী ২৬ ফেব্রæয়ারি সমস্ত স্কুল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, মার্কিন সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনীতে দেশটির নাগরিকদের ব্যক্তিগতভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার বৈধতা দেয়া হয়। তবে এখন অনেক মার্কিন নাগরিকই এ সংশোধনীর পরিবর্তন চাইছেন। আর তাদের এমন চাওয়ায় বাদ সাধছে বৃহৎ অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।
কঠোর আগ্নেয়াস্ত্র আইনের দাবিতে গত ১৭ ফেব্রæয়ারি ফোর্ট লডারডেলের সমাবেশে জড়ো হন মারজোরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলের শিক্ষার্থীরা। এ সময় স্কুলটিতে বন্দুক হামলার জন্য মানসিক অসু¯তাকে প্রধান কারণ দায়ী করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ অনেক যে বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রত্যাখ্যান করেন ছাত্রছাত্রীরা। ১৮ বছরের শিক্ষার্থী এমা গোনজালেজ বলেন, আমাদের এ বিষয়ে সজাগ হতে হবে, বন্দুক হামলা শুধু মানসিক স্বা¯্য সমস্যার কারণে ঘটেনি।
মারজোরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলে বন্দুক হামলার তিন দিন পর মিয়ামিতে এক আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন ৫৫ বছরের মাইক ভ্যালোন। একটি এআর-১৫ কিনছিলেন তিনি। কিন্তু প্রায় ৫০টি আগ্নেয়াস্ত্র থাকার পরও তাকে কেন আরেকটি কিনতে হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘কারণ আমি এগুলোর মালিকানা পেতে চাই। এ মালিকানা অর্জন আমার সাংবিধানিক অধিকার। আমি সেই অধিকারের চর্চা করাটাকেই বেছে নিয়েছি। ’আধা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল ব্যবহার করে লসভেগাস, টেক্সাস, নিউ টাউন ও কানেকটিকাটে এ ধরনের নির্বিচার গুলিবর্ষণের ফলে শতাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তবে মাইক ভ্যালোন মনে করেন, সংবাদমাধ্যমগুলো আগ্নেয়াস্ত্র বিকিকিনির সাংবিধানিক অধিকারকে বাজেভাবে উপ¯াপন করছে।
যুক্তরাষ্ট্রে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার দায়িত্ব পালনকালে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষপাতী ছিলেন। তবে এ নিয়ে তিনি রিপাবলিকান শিবিরের ব্যাপক বিরোধিতার মুখে পড়েন। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে লেখা এক নিবন্ধে তিনি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে বাড়তি সতর্কতার ওপর জোর দেন। ওবামা বলেন, ‘শিশুরা যাতে ওষুধের বোতল খুলতে না পারে, আমরা সে ব্যব¯া নিই। অথচ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে তেমন কোনো সতর্কতা নেই।’ রিপাবলিকান শিবির থেকে এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, বারাক ওবামা মার্কিন নাগরিকদের অস্ত্র বহনের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিতে চান। ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি বছরের প্রথম সাপ্তাহিক ভাষণে বারাক ওবামা বলেন, প্রস্তাবিত বন্দুকনীতির জন্য কংগ্রেসের সমর্থন না পাওয়াকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের সবচেয়ে বড় হতাশা। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বন্দুক হামলায় নিহত মার্কিন নাগরিকের সংখ্যা এমনকি নাইন ইলেভেনে নিহতের সংখ্যার চেয়েও বেশি।
ওয়াশিংটন অভিমুখে পদযাত্রা করবে ফ্লোরিডার শিক্ষার্থীরা
ফ্লোরিডার স্কুলে ভয়াবহ বন্দুক হামলার ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া শিক্ষার্থীরা ওয়াশিংটন অভিমুখে পদযাত্রার পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র আইন সংস্কারের দাবি জানাতে তারা গত ১৯ ফেব্রæয়ারি রবিবার এ পরিকল্পনার ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীদের গ্রæপ ‘দিজ উইক’ এবিসি নিউজকে বলেছে, ‘মার্চ ফর আওয়ার লাইভস’ নামক এ পদযাত্রা আগামী ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। এর পাশাপাশি দেশব্যাপী তাদের আরো র‌্যালি করার পরিকল্পনা রয়েছে।
মার্জোরি স্টনম্যান ডগলাস হাইস্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী ১৯ বছর বয়সী নিকোলাস ক্রুজগত ১৯ ফেব্রæয়ারিবধভাবে ক্রয় করা তার এআর-১৫ রাইফেল দিয়ে ১৭ জনকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে এটি এ ধরনের সর্বশেষ হামলার ঘটনা। দেশটিতে এ ধরনের হামলায় প্রতি বছর অনেক মানুষ প্রাণ হারান।
কী হবে ফ্লোরিডার স্কুলে হামলাকারীর সাজা?
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার একটি স্কুলে গুলি করে ১৭ জনকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত নিকোলাস ক্রুজের বিরুদ্ধে অকাট্য সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। ফলে ক্রুজ অপরাধ করেছে না করেনি তা বিচারের প্রধান বিষয় নয়। তার সাজা মৃত্যুদÐ হবে নাকি যাবজ্জীবন হবে তা-ই প্রধান বিবেচ্য। ক্রুজের পক্ষে নিয়োজিত সরাকারি আইনজীবী হোয়ার্ড ফিনকেলস্টেইনের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সং¯া এপি। ১৯ বছরের ক্রুজের বিরুদ্ধে ১৭ জনকে ঠান্ডা মাথায় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। মারজরি স্টোনম্যান ডগলাস হাই স্কুলে ১৪ ফেব্রæয়ারিতে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল। বিচারে শাস্তি নির্ধারণের আগে আদালত তার মানসিক সু¯তার বিষয়ে নিশ্চিত হবে এবং একই সঙ্গে নিহত ও আহতদের স্বজনদের মতামত শুনবে। ন্যায় বিচারের স্বার্থে তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী শাস্তির ধরণ নির্ধারিত হবে। আলোচনায় মৃত্যুদন্ড ও যাবজ্জীবন থাকলেও ক্রুজের পক্ষে আইনজীবীরা তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন প্রমাণ করতে পারলে রায়ে তাকে মৃত্যুদন্ড নাও দেওয়া হতে পারে। তবে মানসিক ভারসাম্যহীনতার যুক্তিতে মৃত্যুদন্ড এড়ানোর ঘটনা বিরল। ব্রডওয়ার্ড কাউন্টির সরকারি আইনজীবী হোয়ার্ড ফিনকেলস্টেইন ক্রুজের হয়ে আদালতে লড়বেন। তিনি বলেছেন, ক্রুজের বিষয়ে এমন অনেক কিছু আছে যা তার মানসিক ভারসাম্যহীনতার ইঙ্গিত দেয়। তাই তার অপরাধের জন্য যদি তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয় তাহলে তা শাস্তি বেশি হয়ে যাবে। ক্রুজের পক্ষে নিয়োগ করা এই সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘এখন মামলাটি জীবন-মৃত্যুর সিদ্ধান্ত নেওয়ার মামলা হয়ে উঠেছে। সে অপরাধটি করেছে কি না বা তাকে মুক্তি দেওয়া যেতে পারে কি না সেটা আর এখন বিবেচ্য নয়। প্রশ্নটা হচ্ছে, তাকে বাঁচিয়ে রাখা হবে না কি তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি খুবই বিচলিত এবং ক্রুদ্ধ এই ভেবে, আমারা সবাই সমস্যাটি চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছি। অন্যদিকে ’ব্রোওয়ার্ড কাউন্টির সরকার পক্ষের আইনজীবী মাইকেল জে সাটজ। তিনি ক্রজের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণের চেষ্টা করবেন। এই আইনজীবী ১৬ ফেব্রæয়ারি ইমেইলে জানিয়েছেন, ‘এটি নিশ্চয় সেই ধরণেরই অপরাধ যেগুলোর জন্য মৃত্যুদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। হত্যাকাটি চরম ভয়ানক ও বেদনাদায়ক’। তিনি আরও জানান, ক্রুজের অপরাধের জন্য চ‚ড়ান্ত শাস্তি চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করছেন। আদালতে বিচার চলাকালে ক্রুজের মানসিক সু¯তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সে আগে মানসিক সমস্যার চিকিৎসা নিত। কিন্তু নভেম্বরে মা মারা যাওয়ার পর সে চিকিৎসা নেওয়া বন্ধ করে দেয়। তার বাব মারা গিয়েছেন কয়েক বছর আগে। বাবা-মা মারা যাওয়ায় ¯ানীয় একটি পরিবার তাকে আশ্রয় দিয়েছিল। আদালতে ক্রুজকে প্রথম দিন হাজির করার পর তার পক্ষের সহকারী সরকারি আইনজীবী মেলিসা ম্যাকনেইল সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ক্রুজ সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল এবং তাকে সহায়তা করার মতো কেউ ছিল না। ১৯ বছরের একজনের যে ধরনের রাগ হয় তা যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে ব্যক্তির জীবনে সেটার প্রভাব পড়তে বাধ্য। ক্রুজ শোকাহত, অনুতপ্ত ও ভেঙে পড়া একজন মানুষ।’ আদালতের বিচার বোঝার মতো মানসিক সু¯তা ক্রুজের আছে কি না, তা নিয়েও একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ক্রুজের জন্য মানসিক ভারসাম্যহীনতার যুক্তি দেখিয়ে ছাড় পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। এই বিচার শেষ হতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। ২০১২ সালে কলোরাডো সিনেমা হলে গুলি করে ১২ জনকে হত্যা ও ৭০ জনকে আহত করার দায়ে অভিযুক্ত জেমস হোমসও নিজেকে মানসিক ভারসাম্যহীন দাবি করেছিল আদালতে। কিন্তু তার সে আর্জি না মঞ্জুর হয়। ¯ানীয় পুলিশ প্রধানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ক্রুজ অপরাধ স্বীকার করেছে। তারা ক্রুজের ব্যবহƒত এআর-১৫ সেমি আটোমেটিক রাইফেল, গুলির খোসা এবং স্কুলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ আলামত হিসেবে জব্দ করেছেন। এছাড়া ১৭ ফেব্রæয়ারি এফবিআই স্বীকার করেছে, তারা ফোনে একজনের কাছ থেকে আগাম তথ্য পেয়েছিল। তথ্যদাতা জানিয়েছিল ক্রুজ মানুষ হত্যা করতে চায় এবং সে স্কুলে গোলাগুলি চালাতে পারে। এফবিআইয়ের পরিচালক ক্রিস্টোফার রে এক বিবৃতিতে বলেছেন, সেই তথ্য যথাযথভাবে অনুসন্ধান করা হয়নি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে গভীর তদন্ত করা হবে।
ট্রাম্প কিছু একটা করুন : সন্তানহারা মায়ের আকুতি
বুকে সন্তান হারানোর শোক। মনে চাপা ক্ষোভ। চোখে বিন্দু বিন্দু জল। নিহতদের স্মরণে তাদের আত্মীয়স্বজন ১৬ ফেব্রæয়ারি হাজির হয়েছিল ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ডে পাইন ট্রেইলস পার্কে। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি তাদের হাতে ছিল ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড। যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোতে অব্যাহত বন্দুক হামলায় তারা বাকরুদ্ধ। ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। নিহত ১৪ বছর বয়সী এক সন্তানের মা লরি আলহাদেফ বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, দয়া করে কিছু একটা করুন অ্যাকশন নিন এখনই এটা প্রয়োজন। এখন শিশুদের সুরক্ষা প্রয়োজন।’ এ সময় তার চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছিল। এদিকে, সেদিনের ওই ঘটনায় ১৯জর শিক্ষার্থী আলমারিতে লুকিয়ে বেঁচে গেছেন। স্কুলের শিক্ষকা মেলিসা ফ্যালকওস্কি বলেন, ওই দিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ডের মারজরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলে আগুন নেভানো নিয়ে মহড়া চলছিল। তাই ১৯ বছর বয়সী নিকোলাস ক্রুজ যখন ফায়ার অ্যালার্ম বাজায় তখন সবাই এটিকে মহড়াই মনে করেছিল। তাই শব্দ শুনে তড়িঘড়ি করে ক্লাস থেকে সব ছাত্রছাত্রীকে বাইরে বের করে এনেছিলেন মেলিসা। তিনি ভেবেছিলেন সত্যিই বুঝি আগুন লেগেছে। শিশুদের প্রাণ বাঁচাতে মেলিসা যখন তাদের স্কুল বিল্ডিংয়ের বাইরে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় করছেন, কয়েক মিনিটের মধ্যে স্কুলেরই এক নিরাপত্তারক্ষী এসে জানান, স্কুলে ঢুকে গুলি চালাতে শুরু করেছে কেউ। কয়েক সেকেন্ডের জন্য থমকে গিয়েছিলেন মেলিসা। তার মনে তখন শুধু চলছে ক্লাসের সব শিক্ষার্থীর কিভাবে প্রাণে বাঁচাবেন। মুহূর্তের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি। সব শিক্ষার্থীকে ফের ক্লাসরুমে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন তিনি। জানতেন হাতে সময় বেশি নেই। আর সবাইকে বাঁচানোর তখন একটাই রাস্তা খোলা। সেটি হচ্ছে ক্লাসের ভেতরে থাকা আলমারি। সেটির ভেতর একে একে সবাইকে ঢুকিয়ে দেন মেলিসা। এরপর টানা ৩০ মিনিট রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা। পরে পুলিশের বিশেষ বাহিনীর কর্মকর্তারা এসে যখন ক্লাসের দরজা খোলেন, তখন আলমারি থেকে একে একে শিক্ষার্থীদের বের করে আনেন মেলিসা। ১৯ শিক্ষার্থীর প্রাণ বাঁচিয়ে এখন সবার চোখে হিরো হয়ে উঠেছেন মেলিসা। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ওই ৩০ মিনিট আমার জীবনের ভয়াবহতম সময়। ঘরে ঢুকেও প্রথমে ভেবে উঠতে পারিনি ওদের বাঁচাতে কী করতে পারি। প্রথমে তো ঘরের কোণে সবাইকে নিয়ে কিছু সময় দাঁড়িয়েছিলাম। পরে আলমারির কথা মনে পড়ে। ১৯ জনকে সেখানেই ঢুকিয়ে ফেলি। ছেলেমেয়েরা তখন অনেকেই কাঁদতে শুরু করেছে। কেউ কেউ শুধু ফোনে টেক্সট করে যাচ্ছিল। ১৪ ফেব্রয়ারি পার্কল্যান্ডের মারজরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলে নিকোলাস ক্রুজের হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। ক্রুজ ওই স্কুলেরই সাবেক ছাত্র। তাকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
তবু বন্দুক ছাড়বে না মার্কিনিরা
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকযুদ্ধে প্রতি বছর মরে ৩৩ হাজার মানুষ
মার্কিন সমাজে বহু বছর থেকেই বন্দুক অনেকের গর্বের বিষয়। শিকারের জন্যই হোক, ক্রীড়ার জন্যই হোক বা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্যই হোক, বেশির ভাগ বন্দুকের মালিক মনে করেন বন্দুক রাখা তাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। একই সময়ে বন্দুকের উৎস থেকে হিংস তা জাতিকে নাড়া দিয়েছে। জাতিকে করেছে দ্বিধাবিভক্ত। তবুও বন্দুক ছাড়তে রাজি নন মার্কিনিরা। ১৪ ফেব্রæয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার স্কুলে বন্দুক হামলার পর আবারও আলোচনায় এসেছে বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন। বন্দুকনীতি সংস্কারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। কিন্তু এড়িয়ে যাচ্ছেন খোদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফ্লোরিডা সিনেটর বিল নেলসন বলেন, ‘আমরা আর কতদিন অপেক্ষা করব। আর কত শুনব যে, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন পাসের এখনও সময় হয়নি। আর কত শিক্ষার্থী বন্দুকের গুলিতে মরবে?’ তিনি আরও বলেন, ‘এখনই এটি বন্ধ করা উচিত। আমার রাস্তাঘাটে বন্দুক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।’ কানেকটিকাটের সিনেটর ক্রিস মারফি বলেন, ‘বন্দুক হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের গণহত্যার মহাকাব্য রচিত হচ্ছে। স্কুলে হামলার ঘটনা আরও লজ্জাজনক। বন্দুক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আমাদের নিশ্চুপ থাকাই এ ধরনের ভয়াবহ কর্মকাÐের ফল।’ হাউস সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা ন্যান্সি পেলোসি বলেন, বন্দুক সংঘাত নিয়ন্ত্রণে কংগ্রেসের একটি নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে।
সরকারি তথ্যানুসারে, প্রতি বছর বন্দুকের লড়াইয়ে অ্যামেরিকায় মৃত্যু হয় ৩৩ হাজার মানুষের। এর সঙ্গে অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে লড়াই, আত্মহত্যা, হত্যার চেষ্টার ঘটনা ধরলে সংখ্যাটি হবে ৩ গুণেরও বেশি। বন্দুক নিয়ে রিপাবলিকান-ডেমোক্রেটিক উভয় দলের নেতাদের মন্তব্যের পরও বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। ফ্লোরিডা হামলার পর বৃহস্পতিবার এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘আমার আমেরিকার বন্ধুরা, আজ আমি জাতির শোক নিয়ে কথা বলব। জাতিকে এক হওয়ার ডাক দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ভালোবাসা দিয়ে ঘৃণা ও দয়া দিয়ে নির্মমতার জবাব দিতে হবে।’ হামলাকারীদের মাথায় সমস্যা আছে বলেও জানান তিনি। এর আগের মার্কিন প্রেসিডেন্টরাও বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস করতে পারেননি। গত বছরের নভেম্বরে সিনেটে একটি বিল আনা হয় যাতে বলা হয়, যাদের নাম সন্ত্রাসীদের সন্দেহ তালিকায় আছে তারা অস্ত্র কিনতে পারবে না। কিন্তু বিলটি সিনেটে পাস হয়নি। আবার ২০১২ সালে কানেকটিকাটে স্কুলে এক হামলার পর বন্দুক বিক্রি সীমিত করার প্রস্তাব চেষ্টা করেও আমেরিকার আইনসভায় পাস করানো যায়নি। এমনকি আংশিকভাবে স্বয়ংক্রিয় বন্দুক বিক্রি বন্ধ বা ব্যাকগ্রাউন্ড পরীক্ষার ব্যব¯া করার আইন পাস করানো পর্যন্ত সম্ভব হয়নি।
কিন্তু কেন যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক বিক্রি বন্ধ প্রায় অসম্ভব। পিউ রিচার্স বলছে, দেশটির ৭৪ শতাংশ মানুষ বন্দুক থাকাকে তাদের অধিকার বলে মনে করেন।