বিচারপতি সিনহার দুর্নীতি কী জনগণ জানতে চায়-সুশীল সমাজ

ঠিকানা রিপোর্ট : এস কে সিনহা পদে না থাকলেও সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেয়া উচ্চ আদালতের রায় টিকে থাকবে।
গত ৩ এপ্রিল, মঙ্গলবার, ‘আইনের শাসন : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন ড. কামাল হোসেন। জাতীয় প্রেসক্লাবে এ সভার আয়োজন করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।
কোন দুর্নীতির কারণে এবং কোন পরিস্থিতিতে সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহাকে প্রধান বিচারপতির পদ থেকে সরে যেতে হলো তা পরিষ্কার করার জন্য উচ্চ আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্টজনরা।
আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিষয়টি এখনো জাতির কাছে স্পষ্ট নয়। এ ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা না পাওয়া গেলে বিচারবিভাগের জন্য তা ভালো হবে না।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমরা দেখেছি একজন বিচারপতিকে চলে যেতে হয়েছে এ কথা মাথায় নিয়ে যে, তিনি দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিলেন। সে দুর্নীতিটা কী ছিল, কারা সে দুর্নীতির প্লেয়ার ছিল? তিনি দোষি হতেই পারেন কিন্তু বিনা বিচারে তাকে দোষি সাব্যস্ত করা যাবে না।’
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘চারজন বিচারপতি মহামান্য রাষ্ট্রপতি মহোদয়ের কাছে গিয়ে বললেন যে উনি (এস কে সিনহা) দুর্নীতিগ্রস্ত, উনার সাথে আমরা বসব না। আমরা তা পত্রপত্রিকায় দেখেছি। উনি দেশছাড়া হলেন। কী ঘটেছিল দুর্নীতির, এটার একটা তদন্ত হোক।’
ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে তিনি পরবর্তী প্রধান বিচারপতির কাছে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি প্রত্যেক জাজের কাছে গিয়েছি। কিন্তু তাঁরা আসেননি। রিভিউ পিটিশনে এটা আলোচনায় আসবে। বিচারপতিরা যদি এর বিচার না করে তাহলে তো ষোড়শ সংশোধনীর যে রায় হয়েছে তা ইনএফেকটিভ হবে বলে আমি মনে করি। এটা একটা ভয়ঙ্কর দৃষ্টান্ত হবে।’
ড. কামাল হোসেন মনে করছেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা পদ থেকে সরে গেলেও অন্য বিচারপতিরা এখনো পদে আছেন, যাঁরা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় দিয়েছিলেন, যে সংশোধনীতে সংসদ সদস্যদের বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল।
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী যে অবৈধ ঘোষণা করা হলো, সাতজন বিচারপতি করেছেন, এটা একজন করেন নাই। তারাও ঘোষণা করেছেন যে এটা অবৈধ, এটা অসাংবিধানিক। রিভিউ পিটিশন হয়েছে, দেখা যাক কী হয়।’
আলোচনা অনুষ্ঠানে সাবেক বিচারপতি এম এ মতিন বলেন, ‘আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হলে জনগণকে সজাগ থাকতে হবে।’