বিপার দুই দিনব্যাপী বিজয় দিবস উদযাপন

নিউইয়র্ক : বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত নতুন প্রজন্মের সাথে অতিথি ও আয়োজক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ছবি কৃতজ্ঞতা : মিনহাজ সাম্মু

ঠিকানা রিপোর্ট : বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পারফর্মিং আর্টসের(বিপা) উদ্যোগে ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে দুই দিনব্যাপী বিজয় উৎসবের আয়োজন করা হয়। এতে আমন্ত্রিত অতিথি এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শক অংশ নেন। দর্শক-শ্রোতাদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিপার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। আয়োজকদের মধ্যে বিপার অন্যতম তিন শিল্পী সেলিমা আশরাফ, নিলোফার জাহান ও এ্যানী ফেরদৌস উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজনে ছিল বিভিন্ন ইভেন্ট। নান্দনিক ও মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা দর্শকদের আনন্দ দেয়। অনুষ্ঠানে কৃতী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সার্টিফিকেট ও ট্রফি বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া ছিল নৃত্যানুষ্ঠান, সংগীত, ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী, আবৃত্তিসহ বিভিন্ন পর্ব।
এবার বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তি হলো। করোনার কারণে বিপা গত দুই বছর বড় পরিসরে অনুষ্ঠান করতে পারেনি। ফলে এবার বড় পরিসরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিপার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এ্যানী ফেরদৌস অনুষ্ঠানে আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
১৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠানের শুরুতে বিপার বিভিন্ন বর্ষের শতাধিক ছাত্রছাত্রীকে পুরস্কৃত করা হয়। তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সার্টিফিকেট ও ট্রফি। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের দেওয়া হয় ট্রফি, বাকিরা পায় সনদপত্র। এ ছাড়া কয়েকজন শিক্ষককেও পুরস্কার দেওয়া হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার ও সার্টিফিকেট তুলে দেন ঠিকানার প্রধান সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান। ৩০ বছর ধরে এ দেশে নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য ফজলুর রহমান বিপাকে ধন্যবাদ জানান। বিপার সাফল্যগাথা তুলে ধরে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সবাইকে নিয়ে বিপা অনেক দূর এগিয়ে যাবে। তিনি বিপার আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি এ ধরনের আয়োজনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করারও আহ্বান জানান। প্রধান অতিথি বলেন, আজকের সন্তানেরা কেবল দেশের নাগরিক নয়, তারা বিশ্ব নাগরিক হয়ে গড়ে উঠবে। তাদের হাতে থাকবে বিশ্বের মশাল। বিশ্বকে আলোকিত করে গড়ে তুলবে তারা। আমেরিকা ও বাংলাদেশকে আলোকিত করবে। আমরা বিপার মাধ্যমে আরো এগিয়ে যাব। আমরা সবাই একসঙ্গে বাঁচি ও কাঁদিÑএই হোক আজকের অঙ্গীকার।
এরপর ছিল শিশুদের নৃত্য পরিবেশনা। ‘আমি বাংলার গান’ গানের সঙ্গে তারা নৃত্য পরিবেশন করে। এরপর প্রদর্শিত হয় ডকুমেন্টারি ব্লকএইড। এরপর ‘আমাদের গান’ শিরোনামে বাংলার গায়েনের শিল্পীদের পরিবেশনায় সংগীত পরিবেশিত হয়।
এ্যানী ফেরদৌস বলেন, যেসব অভিভাবক আমাদের ওপর আস্থা রেখে তাদের সন্তানদের বিপায় নাচ-গান শেখাতে পাঠিয়েছেন, তাদের ধন্যবাদ। এখানে শিশুরা ভালো নাচ-গান শিখছে। ছোটবেলা থেকে শেখা শুরু করলে ভালো শিল্পী হওয়া সম্ভব।
১৭ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল শিশুদের আবৃত্তি বাঁধভাঙা, শিশুদের গান রংতুলির গল্প, রাগ খাম্বাজের ওপর পরিবেশনা আনন্দে রুমাক ঝুমা বাজে, দ্য ওয়াইল্ড সোয়নস, আমার পরিচয়। এরপর বাদ্যযন্ত্রের পরিবেশনা সুরকার ও রূপকার। এরপর ছিল নৃত্য জয় বাংলা। দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান সফলভাবে করতে পারায় বিপার আয়োজকেরা খুশি।
আলোচনায় বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫১ বছর পূর্তি ও ৫২ বছরে পদার্পণের বিষয়টি উল্লেখ করে বিজয়গাথার কথা তুলে ধরেন। প্রবাসে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরে নতুন প্রজন্মের মাধ্যমে সেটি লালন করার জন্য তারা বিপার আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। এ ছাড়া এ ধরনের অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক সিটির ডিপার্টমেন্ট অর্থ সহায়তা করায় তাদেরও ধন্যবাদ জানান।