মামুন জামিল :
যখন আমি ছাত্র ছিলাম ভালোই ছিলাম মন্দ না
আদর্শতেও খোশবু ছিল, বখাটে দুর্গন্ধ না!
পাস দিয়েছি সব পরীক্ষায় ফেলের কোনো চিহ্ন নাই!
সুবোধ ছিলাম বাবা-মায়ের, মহল্লাতেও ভিন্ন তাই!
চাকরিটাও ঠিক পেয়েছি ‘রিটেন-ভাইবা’ পাস করে
অনেকে তো তাও পায়নি কোচিং থেকে ক্লাস করে!
কাজ করেছি দক্ষতা আর নিজস্ব ভেদবুদ্ধিতে
কলিগরা তাই চেয়েছিল ট্রেড ইউনিয়নে যোগ দিতে!
বয়সটা যে বাড়ছে দ্রুত রইছে না তো স্থির হয়ে
একা বোকা দুটোই সমান লাভ কী ‘বোকা বীর’ রয়ে?
অবশেষে ‘দোকা’ হলাম, এলেন তিনি বউ হয়ে
তিনিই প্রথম বোঝেন আমি ‘আস্ত বোকা’ বিস্ময়ে!
বুদ্ধি গড়ার প্রশিক্ষণটা সেদিন থেকেই হয় শুরু
সংসার নামক বিদ্যালয়ের তিনিই আমার ‘বস’ গুরু!
শেখান তিনি দেশ-সমাজের ভালো-মন্দ, ঠিক-বেঠিক
জীবনপথে ছড়িয়ে থাকা কুসুম-কাঁটা, দিগি¦দিক!
বাজার করার পদ্ধতি আর জিনিস চেনার শিক্ষা দেন
শিখনটা ঠিক হচ্ছে কি না ধমকে ধামকে সবক নেন!Ñ
বাজার করাও শিখলে না আর কেমনে হবে সংসারী?
আমার যদি দেখতে হবে, আমিই করব যা পারি!
সবজিটা ঠিক সতেজ কি না, ‘ফ্রয়েজে-নফিশে’র হালটা কী?
কাঁচামরিচ গন্ধ শুঁকেই যায় বোঝা তার ঝালটা কী!
ঢ্যাঁড়স ভালো মন্দ কি না টিপে টিপে দেখতে হয়
ভালো হলে দেখবে তুমি ‘কুট্টুস’ করে আওয়াজ হয়!
এত করে শেখাই তবু হয় না তোমার শিক্ষাটা
কে নিয়েছে এমন ভালো বউয়ের কাছে দীক্ষাটা?
আমার সাথেই খবরদারি সামান্যতেই ষাঁড় যেন
চেঁচিয়ে তোলো ঘরটা মাথায় হাস্যকর এক ভাঁড় যেন!
দুনিয়া যে আজ অনেক দূরে রাখছ কি আর তার খবর?
পাস করেছ ক্লাসটা শুধু মাথাভর্তি ছাই-গোবর!
বুদ্ধি যদি থাকত তোমার নিজের ভাজা খই খেতে
আমি আছি বলেই আছ নইলে যে আজ কই যেতে?
মাঝে মাঝে চিন্তা করি বিয়ের আগের সেই সময়
কেমন করে নির্বুদ্ধিতায় ত্রিশটা বছর করছি ক্ষয়?
আহা ঐ সময়টাতে বউটা কাছে থাকলে ভাই
কষ্ট করে আমি কি আর অযথা সব জ্ঞান খাটাই?
মেধাকোষের রিজার্ভটা ঠিক থাকত মাথায় শান্তিতে
ক্যান যে ওসব ক্ষয় করেছি, ক্যান মরেছি ক্লান্তিতে?
এখন আমি জানা জিনিস জেনেও মাথা খাটাই না
বউয়ের করা ভুল-শুদ্ধ কোনো কিছুই ঘাঁটাই না!
থাক না সে তার নিজের গড়া আপন জ্ঞানের রাজ্যতে
‘আচ্ছা ঠিক আছে’ বাক্য চালাই বউয়ের সকল কার্যতে!
চলছে জীবন ‘রিলাক্স মুডে’, বুদ্ধিসুদ্ধির চিন্তা নাই
বউয়ের কাছে ‘লিজ’ দিয়ে সব আয়েশ করে দিন কাটাই!