সিলেট : দুদকের মামলায় জেলে গেলেন বিশ্বনাথের পংকি খান। তিনি বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। নানা ঘটনায় অতীতে আলোচিত পংকি খান। ২০০১ সাল থেকে তিনি দল বদলের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে পরিবর্তন করে সব সময় ক্ষমতা কেন্দ্রিক রাজনীতিতে বহাল থেকেছেন। দেড় কোটি টাকার গাড়ি দুর্নীতির মামলায় ২৫ এপ্রিল তিনি কারান্তরীণ হলেন। ইলিয়াস জমানায় সিলেটের বিশ্বনাথ বিএনপির সভাপতি ছিলেন আলহাজ পংকি খান।
মাঝখানে ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি নীরব ছিলেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগে যোগ দেন পংকি খান। নানা ঘটনায় আলোচিত হয়ে তিনি এখন বিশ্বনাথ আওয়ামী লীগের সভাপতি। চলতি বছর প্রায় দেড় কোটি টাকার মূল্যের একটি বিলাস বহুল গাড়ি দুর্নীতির ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন পংকি খান। ওই গাড়ি সিলেটের রাস্তায় সচরাচর দেখা যায় না। দুদকে এ ব্যাপারে অভিযোগ আসার পর কর ফাঁকির অভিযোগে পংকি খানের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা করে। মামলা নং- জিআর নং- ২৯/২০১৮ইং। দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফরিদুর রহমান মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় পংকি খান ছাড়াও আরোও ছয়জন আসামি রয়েছেন। আসামিরা হচ্ছেন- সুনামগঞ্জ জগন্নাথপুর উপজেলার তিলক শাহারপাড়ার ইংল্যান্ড প্রবাসী রূপা মিয়া, সুনামগঞ্জ সদরের বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মোরশেদ আলম বেলাল, সুনামগঞ্জ সদরের হাছননগরের রোমান রায়হান, বিআরটিএ সিলেট সার্কেলের সহকারী পরিচালক বরিশালের মুলাদী উপজেলার চর নাজিরপুরের বাসিন্দা মো. এনায়েত হোসেন। মামলায় বলা হয়, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজসে আমদানিকৃত বিলাসবহুল দামি গাড়ি চোরাইভাবে বিক্রয় ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে রেজিস্ট্রেশনপূর্বক সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার অপরাধ করেছেন। সরকারের রাজস্ব ফাঁকির পরিমাণ প্রায় এক কোটি পঁচাত্তর লাখ টাকা। দুদকের দায়েরকৃত মামলায় পংকি খানের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত ২৫ এপ্রিল সকালে তিনি আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করলে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মফিজুর রহমান ভূঁইয়া তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মফুর আলী গত ২৫ এপ্রিল বিকেলে জানিয়েছেন, পংকি খান প্রথমে উচ্চ আদালতের জামিনে ছিলেন। এরপর নিম্ন আদালত তাকে পুলিশ রিপোর্ট পর্যন্ত জামিন দিয়েছিল। পুলিশ রিপোর্ট আসার পর ২৫ এপ্রিল শুনানির দিনে তিনি আদালতে হাজির হলে আদালত থাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন। এ দিকে দুদকের মামলায় পংকি খান পুলিশ রিপোর্টেও অভিযুক্ত হন। তবে পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে- পংকি খান অসুস্থ। সম্প্রতি সময়ে তিনি লন্ডন সফর করেছেন। হার্টের সমস্যার কারণে তার অস্ত্রোপচার হয়েছে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা রয়েছে। তিনি নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েও চলছেন। এই অবস্থায় খুব দ্রুত তারা পংকি খানের জামিনের জন্য আদালতে আবেদন জানাবেন বলে জানান।