
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী ও মুশরাত শাহীন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, যুদ্ধ বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার মত বৈরীপন্থা কখনো কোনো জাতির মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। গত ২৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এ আহ্বান জানান।
ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও সহিংস উগ্রপন্থার বিষয়ে আমরা ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতি গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশের ভূখণ্ডে কোনোরূপ সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বা জনগণের ক্ষতি হয় এমন কোনো কর্মকাণ্ড সংঘটিত হতে দিই না। ব্যক্তিগত জীবনের কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে আমার পিতাকে গ্রেফতার করার পর পাকিস্তানের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। ঢাকায় আমার মা, দুই ছোট ভাই শেখ রাসেল ও শেখ জামাল, ছোট বোন শেখ রেহানা ও আমাকে গ্রেফতার করে একটি একতলা স্যাঁতসেঁতে বাড়িতে রাখে। আমার প্রথম সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় ওই বন্দীখানায় জন্মগ্রহণ করে। আমাদের ঘরে কোনো ফার্নিচার দেওয়া হয়নি। সুচিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। দৈনন্দিন খাবার পাওয়াও ছিল অনিশ্চিত। কাজেই যুদ্ধের ভয়াবহতা, হত্যা-ক্যু-সংঘাতে মানুষের যে কষ্ট-দুঃখ-দুর্দশা হয়, ভুক্তভোগী হিসেবে আমি তা উপলব্ধি করতে পারি। তাই যুদ্ধ চাই না; শান্তি চাই, মানবকল্যাণ চাই। মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি চাই। আগামী প্রজন্মের জন্য শান্তিময় বিশ্ব, উন্নত-সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিত করতে চাই। আমার আকুল আবেদন যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন। সমুন্নত হোক মানবিক মূল্যবোধ।

ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী পোশাক কাতান শাড়ি পরেন। প্রতিবারের মতো এবারো তিনি বাংলায় ভাষণ দেন। প্রায় ২৭ মিনিটের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দুষ্টচক্রের প্রতিবন্ধকতা এবং বাংলাদেশের রোহিঙ্গা প্রত্যাবসনে বিলম্ব নিয়ে সৃষ্ট সঙ্কটের কথা দৃঢ়তার সঙ্গে বিশ্বসভায় তুলে ধরেন। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভাষণ বিশ্ব নেতৃত্বে সাহসী উচ্চারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত পররাষ্ট্রনীতির মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়।’ বাংলাদেশ জন্মলগ্ন থেকেই এই প্রতিপাদ্য-উদ্ভূত জোটনিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ করে আসছে। ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর এই মহান পরিষদে তিনি তাঁর প্রথম ভাষণে বলেছিলেন, ‘শান্তির প্রতি আমাদের যে পূর্ণ আনুগত্য, তা এই উপলব্ধি থেকে জন্মেছে যে একমাত্র শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই আমরা আমাদের কষ্টার্জিত জাতীয় স্বাধীনতার ফল আস্বাদন করতে পারব এবং ক্ষুধা, দারিদ্র্য, রোগ-শোক, অশিক্ষা ও বেকারত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য আমাদের সকল সম্পদ ও শক্তি নিয়োগ করতে সক্ষম হব।’ বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর এই বক্তব্য এখনো সমভাবে প্রাসঙ্গিক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্বাস করতেন, শান্তি হলো বিশ্বের সকল নারী-পুরুষের আশা-আকাক্সক্ষার বাস্তব প্রতিরূপ। যুদ্ধের ফলে মানবজাতি, বিশেষ করে শিশু ও নারীরা চরম কষ্ট ভোগ করে। অসংখ্য মানুষ রিফিউজি হয়ে পড়ে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারির শুরু থেকে এ সংকট মোকাবিলায় আমরা মূলত তিনটি বিষয়ের দিকে লক্ষ রেখে কৌশল নির্ধারণ করেছি। প্রথমত, মহামারি সংক্রমণ ও বিস্তাররোধ করতে আমরা জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রসারিত করেছি। দ্বিতীয়ত, আমাদের অর্থনীতিকে সুরক্ষিত রাখতে কৌশলগত আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করেছি এবং তৃতীয়ত, আমরা জনগণের জীবিকা সুরক্ষিত রেখেছি। এসব উদ্যোগ মহামারিজনিত মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস করার পাশাপাশি মানুষের দুর্ভোগ কমাতে সাহায্য করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার ফলে সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত এবং জ্বালানি, খাদ্যসহ নানা ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে আমাদের মতো অর্থনীতি মারাত্মক চাপের মুখে পড়েছে। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছি। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হতে যাচ্ছে। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক উন্নত দেশে রূপান্তরিত করার জন্য এবং ২১০০ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ ও জলবায়ু-সহিষ্ণু বদ্বীপে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, মানবজাতির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হলো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব। জলবায়ু নিয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া আর ভাঙার একটি দুষ্টচক্র আমরা অতীতে দেখেছি। আমাদের এখনই এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের সঙ্গে এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অসংখ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। ঝুঁকিতে থাকা অন্য দেশগুলোকে তাদের নিজস্ব জলবায়ু সমৃদ্ধির পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করতে আমরা প্রস্তুত আছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ ১৬টি দেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নীত হওয়ার পথে। তবে ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক সংকট আমাদের টেকসই উত্তরণের পথে গুরুতর প্রতিকূলতা সৃষ্টি করেছে। আমাদের উন্নয়নের অংশীজনদের কাছে বর্ধিত এবং কার্যকর সহযোগিতার আহ্বান জানাই। এ বিষয়ে দোহা কর্মসূচিকে আমরা স্বাগত জানাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘায়িত উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। তাদের প্রত্যাবাসনের অনিশ্চয়তা সর্বস্তরে ব্যাপক হতাশার সৃষ্টি করেছে। মানবপাচার ও মাদক চোরাচালানসহ আন্তসীমান্ত অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি এ পরিস্থিতি উগ্রবাদকেও ইন্ধন দিতে পারে। এ সংকট প্রলম্বিত হতে থাকলে তা এই উপমহাদেশসহ বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরিতে দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক এবং জাতিসংঘসহ অন্যান্য অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা সত্ত্বেও একজন রোহিঙ্গাকেও তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত পাঠানো যায়নি। মিয়ানমারে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সশস্ত্র সংঘাত বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনকে আরও দুরূহ করে তুলেছে। আশা করি, এ বিষয়ে জাতিসংঘ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

শেখ হাসিনা ভাষণের শেষ দিকে এসে বলেন, ‘আসুন, সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে হাতে হাত মিলিয়ে আমরা একটি উত্তম ভবিষ্যৎ তৈরির পথে এগিয়ে যাই।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে মেট্রো ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থান করছেন। ২ অক্টোবর রোববার রাতে তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন এবং ৪ অক্টোবর মঙ্গলবার দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে ভার্জিনিয়ার রিজ কার্লটন হোটেলে অবস্থান করছেন।
প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনে যোগদানকালে অত্যন্ত কর্মব্যস্ত সময় কাটান এবং তিনি জাতিসংঘে আটটি উচ্চপর্যায়ের সভা ও সাইড ইভেন্ট এবং রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ১২টি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন। তিনি অধিবেশনে যোগদান শেষে ২৪ সেপ্টেম্বর শনিবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হওয়ার কথা পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি বরং আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের ভোটেই ক্ষমতায় আসে। ভোট চুরি আর ভুয়া ভোটার তালিকা করে নির্বাচন করতে পারছে না বলেই নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছে। মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিতের ব্যবস্থা বর্তমান সরকার করেছে বলে দলটির নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করে তাদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শও দেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, তারা (বিএনপি) সত্যিই চিন্তিত যে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন হবে। কারণ, তারা ভোট কারচুপি এবং ভোটার তালিকায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার রাখার সুযোগ পাচ্ছে না। অন্যথায় উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘যারা জনগণের ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসেননি, নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রশ্নে এত গুরুত্ব দেয়ার কী আছে? নির্বাচনে জনগণ নির্বিঘ্নে ভোট দেবে, ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন এমন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।’
নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি, এটা তাদের দলের সিদ্ধান্ত। তারা জানে যে, সঠিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। তারা হত্যা, অভ্যুত্থান ও ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসতে অভ্যস্ত। এটাই বাস্তবতা।’
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ইভিএম একটি আধুনিক পদ্ধতি এবং বিশ্বের অনেক দেশেই এটি ব্যবহৃত হয়। যেখানে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে দ্রুত নির্বাচনের ফলাফল পাওয়া যায় এবং মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ভোট দিতে পারে। ‘এই ইভিএমের বিরুদ্ধে কিছু লোক আছে এটা ঠিক’ – উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন। ওই দিনই তিনি ওয়াশিংটন ডিসি যান।
প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সংবর্ধনায় শেখ হাসিনা : জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে আসা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সম্মানে স্থানীয় সময় ২১ সেপ্টেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় দেশটির ন্যাচারাল হিস্ট্রি জাদুঘরে সংবর্ধনার আয়োজন করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার স্ত্রী জিল বাইডেন। বাইডেনের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশ্বের অন্যান্য নেতাদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও যোগ দেন। অনুষ্ঠানস্থলে জো বাইডেন ও জিল বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। দেশ দুটির দুই শীর্ষ নেতা একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন। এ সময় জো বাইডেনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান শেখ হাসিনা।