ঠিকানা অনলাইন : পৃথিবীর উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্র বলে পরিচিত ভারত শাসিত কাশ্মিরের সিয়াচেন হিমবাহে স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করল ভারতীয় সেনার ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কোর’।
১৮ সেপ্টেম্বর থেকে এ পরিষেবা চালু হয়েছে। এর ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৯,০৬১ ফুট উচ্চতায় এখন ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে।
৭৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সিয়াচেন হিমবাহটি চিনা নিয়ন্ত্রণাধীন শাকসগাম উপত্যকা এবং পাকিস্তানের দখলে থাকা বাল্টিস্তানের মধ্যকার একটি এলাকা। এই হিমবাহ ভারতের অধীনে থাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী চীনাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে না এবং লাদাখের নিরাপত্তার জন্য এই হিমবাহ ভারতের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।
১৯৮৪ সাল থেকে সিয়াচেনে সেনা ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে ভারত। পাকিস্তানের দাবি, সিয়াচেন তাদের। সিয়াচেনে ভারতীয় সেনার আধিপত্য বজায় রাখতে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা খরচ হয়। সেখানে তিন হাজার করে সেনা জওয়ান মোতায়েন রাখে ভারত।
সেখানে সবসময়ই তুষারপাত হতে থাকে। সেখানে যে সেনারা দায়িত্ব পালন করে তাদের প্রত্যেককে দেড় লাখ টাকা মূল্যের ‘কিট’ দেওয়া হয়।
সিয়াচেন হিমবাহ দখলে রাখতে গিয়ে ১৯৮৪ সাল থেকে ৮৫০-এর বেশি ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে। বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে চূড়ান্ত কঠিন প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে।
অন্যদিকে প্রতি চারদিনে একজন পাক সেনা মারা যান সিয়াচেন পাহারা দিতে গিয়ে। ২০১২ সালে এক বড় বরফধসে একসঙ্গেই ১৪০ জন পাক সেনা সদস্য মারা গিয়েছিলেন।
কারাকোরাম পর্বতের সিয়াচেন হিমবাহ দখলে রাখা নিয়ে দুই চিরবৈরী দেশ ভারত আর পাকিস্তান আশির দশকের গোড়া থেকে বিভিন্ন সময়ে লড়াইয়ে জড়িয়েছে। এই দ্বন্দ্বের বীজ লুকিয়ে আছে দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া করাচি আর সিমলা চুক্তির মধ্যে, যেখানে ‘এন জে ৯৮৪২’ নামের একটি অবস্থানের পরে নিয়ন্ত্রণ রেখা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি মানচিত্রে। মনে করা হতো, ওই এলাকার আবহাওয়া এতটাই প্রতিকুল, সেখানে কোনো মানুষ থাকতে পারবে না।
পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষে তাদের চৌকিগুলিতে পৌঁছানো তুলনামূলক সহজ, কারণ তারা হিমবাহের কম উচ্চতার দিকটা দখলে রেখেছে, অন্যদিকে ভারতীয় বাহিনীকে শুধুই হেলিকপ্টারের মাধ্যমে পৌঁছাতে হয় বেশি উচ্চতায় থাকা এলাকাতে।
ঠিকানা/এসআর