ঠিকানা অনলাইন : তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে স্মরণীয় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০ ওভারের ক্রিকেটে এর আগে একটি মাত্র ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড। দুই দলের দ্বিতীয় সাক্ষাতে জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ।
টসে জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। ১৫৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক রকমেই ব্যাটিং করে গেছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের যে একটা ধরন আছে, বাংলাদেশ ক্রিকেটে তা ছিল অনুপস্থিত। তবে চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৯ মার্চ বৃহস্পতিবার যেন ভিন্ন এক বাংলাদেশ দলকে দেখে গেছে। ইংল্যান্ডের দেওয়া ১৫৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং করে গেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত-রনি তালুকদাররা।
স্ট্রাইক রেট নিয়ে অনেক সমালোচনা শোনা শান্তই যেন আজ একটু বেশি অশান্ত হয়ে উঠলেন। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে দ্রুততম ফিফটি তুলে নিয়েছেন আজ। ২৭ বলে করেন টি-টোয়েন্টিতে নিজের তৃতীয় ফিফটি। ৩০ বলে ৫১ রানে ড্রেসিং রুমে ফেরেন ৩ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা শান্ত। ১৭০ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে ছিল ৮টি চার।
ব্যাটিংয়ে যারাই নেমেছেন, সবারই স্ট্রাইক রেট ছিল ১০০-এর ওপরে। আট বছর পর নিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে খেলতে নেমে চারটি চারে ১৪ বলে ২১ রান করেছেন ওপেনার রনি তালুকদার। ১৫০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন তিনি। ১০ বলে ১২ রান করেছেন লিটন। তার স্ট্রাইক রেটও ১২০। বিপিএলে অসাধারণ ব্যাটিং করা তৌহিদ হৃদয়ও অভিষেকটা রাঙিয়েছেন ১৭ বলে ২৪ রান করে। ১৪১.১৭ স্ট্রাইক রেটের ব্যাটিংয়ের সঙ্গে মেরেছেন দুটি চার ও একটি ছক্কা।
১১২ রানে ৪ উইকেট হারালেও পঞ্চম উইকেটে সাকিব আল হাসান ও আফিফ হোসেনও ভয়-ডরহীন ব্যাটিং করে গেছেন। ২৪ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন সাকিব। ১৪১.৬৬ স্ট্রাইক রেটের সঙ্গে ছিল ছয়টি চারের বাউন্ডারি। ১৩ বলে ১৫ রান আসে আফিফের ব্যাট থেকে।
এর আগে বড় স্কোরের ইঙ্গিত দিয়েও শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের সংগ্রহটা ঠিক ততটা বড় হয়নি। শুরুতে একটু এলোমেলো বোলিং হলেও পরে নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছেন বোলাররা। যার সৌজন্যে ইংল্যান্ডকে ১৫৬ রানেই বেঁধে ফেলল বাংলাদেশ।
ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৪২ বলে ৬৭ রান করেছেন জস বাটলার। ষষ্ঠ ওভারে নাসুম আহমেদের বলে মিড-অনে ফিল্ডিং করা সাকিব আল হাসান যদি ক্যাচ ধরতে পারতেন, তাহলে হয়তো স্কোরটা আরেকটু কমও হতে পারত। ১৭তম ওভারে হাসান মাহমুদের বলে নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাটলার। চারটি চার ও চারটি ছক্কা ছিল ইংলিশ অধিনায়কের ইনিংসে।
এ ছাড়া ইংল্যান্ডের হয়ে ফিল সল্ট ৩৫ বলে ৩৮ ও বেন ডাকেট ১৩ বলে ২০ রান করেছেন। বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শেষ দিকে মঈন আলী-স্যাম কারানরা ঝড় তোলার সুযোগই পাননি। ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রান করতে পারে ইংল্যান্ড।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে হাসান মাহমুদ ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। এ ছাড়া নাসুম, তাসকিন, মোস্তাফিজ ও সাকিব একটি করে উইকেট নেন। ৫১ রানের পাশাপাশি তিনটি ক্যাচ লুফে নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন নাজমুল হোসেন শান্ত। এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
ঠিকানা/এনআই