ওয়াশিংটন: লোকজ সংস্কৃতি পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বৃহত্তর ওয়াশিংটনের বিসিসিডিআই বাংলাস্কুল পালন করেছে বাংলা নববর্ষ ১৪২৫। গ্রাম বাংলার চিরন্তন রূপ ও লোকজ সংস্কৃতি তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠানে। বরেণ্য সাংবাদিক রোকেয়া হায়দারের সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয় বর্ষবরণ উৎসব ১৪২৫। এরপর বৃহত্তর ওয়াশিংটনের প্রায় পঞ্চাশজন শিল্পী সম্মিলতি কন্ঠে পরিবেশন কওে ”আনন্দলোকে” গান। নতুন প্রজন্মের শিল্পী মরিয়ম ইসলাম ও প্রিয়াংকা বোসের নৃত্যের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় বাংলার চিরন্তন লোকজ সাংস্কৃতিক এক অনন্যা পরিবেশনা। এরপরপরেই ”এসো হে বৈশাখ গানের সাথে নৃত্য পরিবেশন করে নায়লা, অতশী, শুসান, অহনা, অনিতা, নাইমা, অবন্তিকা, রানিতা, ও তাসনুভা। পরে ”ধনধান্যে পুষ্পে ভরা” গানের সাথে নৃত্য পরিবেশন করে প্রিয়াংকা বোস।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে শুরু হয় ছোটদের পরিবেশনা। বাংলাস্কুলের শিক্ষক শামীম চৌধুরী ও শতরূপা বড়–য়ার উপস্থাপনায় বৃহত্তর ওয়াশিংটনের ক্ষুদে শিল্পীরা একে একে পরিবেশন করে ছয়টি রিতু, আজি এ ভোরে, হায়রে মানুষ রঙিন ফানুষ, বাউলা কে বানাইল রে, জন্মিলে মরিতে হয়, মানুষ ছাড়া ক্ষেপাওে তুই, মিলন হবে কতদিনে, জালাইয়া গেলা মনের আগুন, মঙ্গল হোক, পাহারী মন, বাজে বংশী, মিষ্টি সবুজ মাঠ, চল চল সখী, পাহারী সাপের খেলা, বাউলের একতারা, ঢুলি বাজায় ঢোল ও বাংলাদেশের একতারা। এই পর্বে অংশগ্রহণ করে সুমিত, ফারিয়াল, আরিয়া, এলেনা, লিয়ানা, আয়ান, লাইবা, রিদি, অহনা, দিব্য, পরাগ, অংকিতা, নোরা, অবন্তি, অহনা, অনিতা, বিজন, শৃজন, কৌশিক, সুষ্ময়, রিদিতা, মুহিত, অপসরা, ফারজান, স্বপ্নিল, তাসনুভা, অতশি, শুসান, প্রভা, ওয়াদিয়া, ও শ্রেয়শী সহ আরো অনেকে। এরপর মঞ্চে আসেন বিসিসিডিআই বাংলাস্কুলের সভাপতি আতিয়া মাহজাবিন নীতু। এরপর মঞ্চে স্বাগত জানানো হয় বিসিসিডিআই বাংলাস্কুলের শুভাকাংখী ভাষা সৈনিক মাজহারুল ইসলামকে। শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর মাজহারুল ইসলাম বিসিসিডিআই বাংলাস্কুলের নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য পঞ্চাশ হাজার ডলারের চেক প্রদান করেন।
এরপরেই কবিতা নিয়ে মঞ্চে আসে অদিতী, সিলিকা ও দীপু। দেশ বন্দনা পরিবেশনার মধ্য দিয়ে চিরায়ত লোকজ সঙ্গীত পর্বে বৃহত্তর ওয়াশিংটনের প্রায় পঞ্চাশজন শিল্পী কলাকুশলী কালিকা প্রসাদ বন্দনা, লালন ফকিরের ধন্য ধন্য, বাউল স¤্রাট শাহ আবদুল করিমের গ্রামের নওজোয়ান, কোন মিস্ত্রি ও তোমরা কুঞ্জ সাজাও গো, শীতলং শাহ এর সোয়া উরিল, হাসান রাজার নেশা লাগিল রে, পুথি পাঠ, ভাটিয়ালী গান কই যাও রে পদ্মার ঢেউ, মমতাজ আলী খানের এই যে দুনীয়া, রাধা রমনের জলে গিয়াছিলাম সই ইত্যাদি গান পরিবেশন করেন। লোকজ সংস্কৃতির এই পরিবেশনা দর্শক শ্রোতাদের মুগ্ধ বিমোহিত করে।
এরপরেই শুরু হয় মিছিল। মারো জোরে হেইয়া, জোরসে বল হেইয়া, বলরে বল হেইয়া, সবাই বল হেইয়া ইত্যাদি স্লোগানে স্লোগানে পুরো অনুষ্ঠাস্থল প্রাণবন্ত হয়ে উঠে এবং পুরো অনুষ্ঠাস্থল একটি ছোট্ট বাংলাদেশের শ্যামল সবুজ গ্রাম বাংলায় পরিণত হয়েছে।
দিনভর বৃহত্তর ওয়াশিংটন প্রবাসী বাংলাদেশীরা নানা রঙের কাপড় পরে নানা ঢঙে অনুষ্ঠানে সময় কাটান। ঘুরে বেড়ান অনুষ্ঠানের বিভিন্ন ষ্টল। কেনাকাটা করেন, গ্রহণ করেন দেশী খাবার। সবশেষে বৃহত্তর ওয়াশিংটনের ব্যান্ড দল আরিচা ঘাট, শ্যাডো ড্রীম, ও জটিল সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সর্বাত্মক সফল অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বিসিসিডিআই বাংলাস্কুলের বর্তমান বোর্ডকে ধন্যবাদ জানানো হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।