ঠিকানা রিপোর্ট: নিতান্ত অপরিণত বয়সী ছেলে-মেয়েদের ইলেকট্রনিক সিগারেটের মাধ্যমে মারিজুয়ানা বা ভাপে সেবনের হার জাতীয় পর্যায়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিচারে সাফক কাউন্টি পুলিশ কর্মকর্তাগণ কম বয়সীদের কাছে বেআইনী ভপে বা মারিজুয়ানা বিক্রিকারীদের বিরুদ্ধে সপ্তাহব্যাপি এক সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করেছে এবং ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সাফক কাউন্টি এক্সিকিউটিভ স্টিভ বেলোন ১ অক্টোবর বলেন, কম বয়সী বালক-বালিকাদের ভ্যাপিংয়ের প্রতি অধিকতর আকৃষ্ট করার লক্ষে ভ্যাপিং উৎপাদনকারী এগুলোর সাথে মিষ্টি গন্ধ ও স্বাদ জুড়িয়ে দিয়েছে এবং চোখ ঝলসানো প্যাকেজে বাজারজাত করেছে। তিনি আরও জানান, ২১ বছরের চেয়ে কম বয়সীদের নিকট বেআইনীভাবে ভ্যাপে বিক্রির দায়ে যারা বার বার গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়নের জন্য তিনি আইনপ্রণেতাগণের সাথে কথা বলবেন। বেলোন আরও বলেন, কঠোর আইন প্রণয়ন এবং কার্যকর ছাড়া এ সকল অপরাধী ও বিক্রেতাদের পুরোপুরি দমন করা যাবেনা। বেলোন দৃঢ় কন্ঠে বলেন, আমাদের অল্প বয়সী বালক-বালিকাদের নিকট যে বা যারা এই ক্ষতিকর ও নেশাউদ্দীপক বস্তু বিক্রি করবে তাদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবেনা। সপ্তাহব্যাপি অভিযানের অংশ হিসেবে ৭টি প্রেসিঙ্কটের ১০১ স্থানে পুলিশ বিভাগের গোয়েন্দা কর্মকর্তাগণ জাল বিস্তার করেছিলেন এবং কম বয়সীদের নিকট বেআইনীভাবে ইলেকট্রনিক সিগারেট বিক্রির দায়ে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে অল্পবয়সীদের নিকট বেআইনীভাবে নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রির অভিযোগসহ মিসডেমীনর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। উক্ত অভিযোগের শাস্তি সর্বোচ্চ ৩ মাসের কারাদ- বা সর্বোচ্চ ৫০০ ডলার জরিমানা করা হতে পারে। আবার অনেকের বিরুদ্ধে ২১ বছরের কম বয়সীদের নিকট ইলেকট্রনিক সিগারেট বিক্রির অভিযোগও আনয়ণ করা হয়েছে। এর শাস্তি হিসেবে ১৫ দিন থেকে সর্বোচ্চ ১ বছরের কারাদ- কিংবা সর্বোচ্চ ১ হাজার ডলার জরিমানা করা হতে পারে। বেলোন বলেন, এর মাধ্যমে আমরা অপরাধীদের এ বার্তা দিচ্ছি যে, আপনি যে কোনভাবে শনাক্ত হবেন, যে কোন সময় ধরা পড়বেন এবং বিচারের সম্মুখীন হবেন। পুলিশ কমিশনার জেরালডিন হার্ট বলেন, ২ জন ব্যবসায়ী এর আগেও গ্রেপ্তার ও দন্ডিত হয়েছিল। তিনি বলেন, এ ধরনের অপরাধীরা জননিরাপত্তা এবং গণস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। এদের বিরুদ্ধে শিক্ষাদানের পাশাপাশি বলপ্রয়োগেরও প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। হার্ট বলেন, টীনদের ভ্যাপিং একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা।
জানা যায়, পুলিশ বিভাগ বিশেষ অনুরোধকৃত কর্মসূচি হিসেবে ২০১৭ এবং ২০১৮ শিক্ষা বর্ষে সাফক কাউন্টিতে ১০ সহ¯্রাধিক ছাত্রÑছাত্রীর সাথে ভ্যাপিংয়ের বিপদ সম্পর্কে আলোচনা করেছিল। উক্ত কর্মসূচি সম্প্রসারণের সদিচ্ছা পুলিশ বিভাগের রয়েছে বলে হার্ট জানান। আরও জানা যায় যে সাফক পুলিশ কর্মকর্তাগণ ও ননপ্রফিট সংস্থাগুলো সম্মিলিতভাবে ভ্যাপিং প্রডাক্ট ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করার জন্য পঞ্চম গ্রেডার থেকে শুরু করে হাই স্কুল ও কলেজ ছাত্রÑছাত্রী এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের সাথেও কাজ করছে। বেলোন বলেন, আমাদের কমিউনিটিতে কম বয়সীদের রক্ষার এটিও একটি বিশেষ প্রচেষ্টা। এদিকে সাফক কাউন্টি স্বাস্থ্য কমিশনার ড. জেমস টমারকেন জানান, কিছু সংখ্যক অল্পবয়সী ভাপের সাথে মারিজুয়ানাও সেবন করেছে।
কয়েক সপ্তাহ আগে দ্য ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাংডমিনিস্ট্রেশন ইয়ুথ ভাপিংকে মহামারি হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং অল্প বয়সীদের নিকট ইলেকট্রনিক সিগারেট বিক্রির পরিমাণ ও হার কমিয়ে না দিলে উৎপাদনকারী এবং বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের পরিসংখ্যান অনুসাওে ২০১৭ সালে ২১ লাখেরও বেশি মিডল ও হাই স্কুল ছাত্রÑছাত্রী ইলেকট্রনিক সিগারেট সেবন করেছে এবং দিনে দিনে এর ব্যবহার উত্তরোত্তর বাড়ছে।