ঠিকানা অনলাইন : গত বিশ্বকাপের রানার্সআপ ছিল ক্রোয়েশিয়া। তৃতীয় হয়েছিল বেলজিয়াম। ম্যাচের আগেই হাড্ডাহাড্ডি একটা লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। লড়াইটা হলো ঠিকই কিন্তু গোলই হলো না। আর তাতেই বিদায় ঘটে গেল বেলজিয়ামের।
নামের পাশে কোনো বিশ্বকাপ নেই। তবু ব্রাজিল-জার্মানি, আর্জেন্টিনার সমান ফেবারিটের মর্যাদা পেয়েছে বেলজিয়াম শুধু একটা দলের জন্য। বিশ্বকাপের আশায় দীর্ঘ সময় ধরে কেভিন ডি ব্রুইনা, এডেন হ্যাজার্ডের মতো খেলোয়াড়দের গড়ে তুলেছিল বেলজিয়াম, যাদের শেষ সুযোগটা ছিল এই কাতার বিশ্বকাপেই। ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে ০-০ ড্র করে খালি হাতে বিদায় ঘটে গেল বেলজিয়ামের সেই সোনালি প্রজন্মের।
দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে হলে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে জিততেই হতো বেলজিয়ামকে। ৫ পয়েন্ট নিয়ে ‘এফ’ গ্রুপ থেকে রানার্সআপ হয়েছে ক্রোয়েশিয়া। কানাডাকে ২-১ গোলে হারিয়ে ৭ পয়েন্ট সেরা চমক দেখানো মরক্কোর। গ্রুপসেরা আফ্রিকান দলটি ৩৬ বছর পর টিকিট পেল দ্বিতীয় রাউন্ডের। ৪ পয়েন্ট নিয়ে বিদায় বেলজিয়ামের। এই গ্রুপ থেকে কানাডা কোনো পয়েন্টই পায়নি।
খেলা শুরুর ১০ সেকেন্ডের মাথায় আক্রমণে গিয়ে ক্রোয়েশিয়া বুঝিয়ে দিয়েছে, বেলজিয়ামকে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নয় তারা। বক্সের ভেতর থেকে ইভান পেরিসিচের শট অবশ্য বেলজিয়ামকে বড় কোনো বিপদে ফেলতে পারেনি।
পাল্টা আক্রমণে ক্রোয়েশিয়াকে চমকে দিয়েছিল বেলজিয়ামও। ১৩ মিনিটে প্রতি-আক্রমণে ফাঁকায় থাকা দ্রিস মের্তেন্সকে বল বাড়ান কেভিন ডি ব্রুইনা। সুযোগটাকে মের্তেন্স নষ্ট করেছেন পোস্টের উপর দিয়ে বল বাইরে পাঠিয়ে।
দুই মিনিট পরই পেনাল্টি পেয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। বক্সের ভেতর আন্দ্রেই কামারিচকে ফাউল করেন ইয়ানিক কারাসকো। লুকা মদ্রিচ পেনাল্টি নিতে এলেও পরে অফসাইডের কারণে নিজেই পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেন রেফারি। যদিও সেই সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক ছিল, সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই পারেন ক্রোয়েশিয়ান ফুটবলাররা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দ্রিস মের্তেন্সের বদলি হিসেবে মাঠে নামেন স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকু। নেমে ৪৮ মিনিটে হেডও করেছিলেন, কিন্তু জোর না থাকায় সহজেই বল নিয়ন্ত্রণে নেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক ডমিনিক লিভাকোভিচ।
দুই মিনিট পর সুযোগ এসেছিল ক্রোয়েশিয়ার সামনেও। বক্সের ভেতর থেকে শট নিয়েছিলেন মাতেও কোভাচিচ। সতর্ক থিবো কোর্তোয়া ফিস্ট করে ফেরান সেই শট।
ম্যাচের ৬০ মিনিটে সেরা সুযোগটা নষ্ট করেছেন লুকাকু। বক্সের ভেতর ইয়ানিক কারাসকোর শট ক্রোয়েশিয়ার এক ফুটবলারের গায়ে প্রতিফলিত হলে ফাঁকা পোস্টে বল পান বেলজিয়ান স্ট্রাইকার। ঠান্ডা মাথায় শট নিলে যেখানে গোল পান, সেখানে বল পোস্টে মেরেছেন ইন্টার তারকা। দুই মিনিট পর আরেকবার ফাঁকা পোস্ট পেয়েও অহেতুক তাড়াহুড়োয় বল বাইরে পাঠিয়েছেন লুকাকু।
ঠিক ৯০ মিনিটে এমন এক সুযোগই নষ্ট করেছেন লুকাকু, যার জন্য হয়তো সারা জীবন আক্ষেপে পুড়তে হবে তাকে। গোললাইনে বলে হালকা পা ছোঁয়ালেই যেখানে গোল পান, সেখানে কিনা বল তুলে দিয়েছেন সোজা গোলরক্ষকের হাতে। খেলা শেষ হতেই হতাশায় ভেঙে পড়লেন লুকাকু, ভেঙে ফেললেন ডাগআউটের কোচও।
বেলজিয়ামের হতাশাটা বড় করেছে মরক্কো। আল থুমামা স্টেডিয়ামে ২৩ মিনিটের মধ্যেই দুই গোলে ম্যাচের ভাগ্য করে দেন হাকিম জিয়েশ ও ইউসেফ এন-নেসরি। এন-নেসরি প্রথমার্ধে আরেকটি গোল পেলেও অফসাইডের কারণে বাতিল হয়েছে সেই গোল। কানাডার একমাত্র গোলটি আত্মঘাতী। দ্বিতীয়ার্ধে কানাডার শট ফিরেছে গোললাইন থেকে।
ঠিকানা/এনআই