নিউইয়র্ক : ব্রঙ্কসে অনুষ্ঠিত হলো ভার্চুয়াল ভাইরাস সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার। ৩ মার্চ রোববার সন্ধ্যায় স্টার্লিং এভিনিউ-এর এশিয়ান ড্রাইভিং স্কুলের হলরুমে সেমিনার ছাড়াও এ বিষয়ের ওপর নির্মিত দু’টি বিশেষ ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয় এবং সোস্যাল মিডিয়াসহ প্রযুক্তি পণ্যের আসক্তিপূর্ণ ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে বিশেষ ভার্চুয়াল ভাইরাস মেডিটেশনের আয়োজন করা হয়। আত্মউন্নয়নে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন-এর ব্রঙ্কস সেল এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন হৃদয়ে বাংলাদেশ যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
পল্লব সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারের বিষয় ছিলো ‘ভার্চুয়াল ভাইরাস থেকে নিজে বাচুন, পরিবারকে বাচান’। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ভোরের কাগজের সিনিয়র সাংবাদিক শামীম আহমেদ। বিষয়টির ওপর আয়োচনায় অংশ নেন, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন ব্রঙ্কস সেল-এর পরিচালক ফরিদা আক্তার, হৃদয়ে বাংলাদেশের সভাপতি সাইদুর রহমান লিংকন, মূল ধারার রাজনীতিবিদ আব্দুস শহীদ, ইউএসএ অনলাইনের সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন সেলিম, হৃদয়ে বাংলাদেশের সভাপতি সাইদুর রহমান লিংকন, কবি, লেখক ও সমাজকর্মী মাকসুদা আহমেদ, এনওয়াইউ ইউনিভার্সিটির কর্মকর্তা আহমেদ জামিল, হৃদয়ে বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জান ফয়েজ, সাংবাদিক আনোয়ান হোসেন বাবর, হৃদয়ে বাংলাদেশের মোতাসিম বিল্লাহ তুষার, রাশেদুল ইসলাম, সাধন ব্যান্ডের ভোকাল মুসাফির মুক্তা, ফাল্গুনী চটপট্টি ঘরের কর্নধার মাসুদ রানা প্রমুখ।
এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, স্টার্লিং বাংলাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন, বাঙালি চেতনা মঞ্চের সভাপতি ও আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুর রহিম বাদশা, মামুন টিউটোরিয়ালের প্রিন্সিপ্যাল শেখ মামুন, ব্রঙ্কস বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের সভাপতি এন ইসলাম মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাফফর হোসেন, বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্ট এর সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সমাজকর্মী মামুন রহমান, সাহিত্য সংগঠন পঞ্চায়েতের মাসুম আহমেদ।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, আমাদের পরিবারগুলো দিন দিন স্মাট ফোন এবং সোস্যাল মিডিয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। আমরা অতিমাত্রায় আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছি। আমাদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ কমে যাচ্ছে। বাস্তব বন্ধুর জায়গায় আমরা এখন ভার্চুয়াল এবং বায়বীয় বন্ধুদের গুরুত্ব বেশি দিচ্ছি। এক ছাদের নিচে বসবাস করেও পরিবারের সদস্যরা একজন আরেকজনকে সময় দিতে পারছে না। তাদের মধ্যে দুরত্ব বাড়ছে। এতে পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। বাড়ছে হতাশা, টেনশন। এসব কারনে মানসিক এবং শারিরিকভাবে আমরা রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ছি। আমাদের সন্তানরা এখন আর আমাদের কথা শুনছে না। তারা ঘরের দরজা বন্ধ করে রাতের পর রাত দিনের পর দিন কাটিয়ে দিচ্ছে। পড়াশুনায় তাদের মনোযোগ নেই। ফলে তারা স্কুল বা কলেজের পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ করছে। স্বামী বা স্ত্রীরা পরকীয়ার মতো সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। বক্তারা বলেন, প্রযুক্তির অনেক ভালো দিকও রয়েছে।
আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় প্রযুক্তি পণ্য ছাড়া জীবন কল্পনা করাও কঠিন। যন্ত্রের সঙ্গে আমাদের জীবন এমনভাবে জড়িয়ে গেছে যে, চাইলেই আমরা তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছি না। বক্তারা আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কারণে পরস্পরকে গালিগালাজ, গীবত, পরচর্চা এবং পরনিন্দা বেড়েছে। আগে আমরা যেসব গালিগালাজ মুখে আনতেও সংঙ্কোচ বোধ করতাম এখন ফেসবুকের কল্যানে তা অহরহ ঘটছে। অর্থহীন, অশ্লীল এবং কটুক্তিপূর্ণ বাক্যের ব্যবহার নজীরবিহীন হারে বেড়ে গেছে। এভাবে চললে পরিবারে ও সমাজে অস্থিরতা, অশান্তি বাড়বে। এতে থেকে রেহাই পেতে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার সীমিত করে ফেলতে হবে বলেও বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
সমাজের সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আলোচকরা বলেন, আসুন সময় থাকতেই সচেতন হই। ভার্চুয়াল ভাইরাসের মরণ-আগ্রাসন থেকে নিজে বাঁচি। বাঁচাই সন্তানদের। সচেষ্ট হই আত্মীয়-বন্ধু-প্রতিবেশীদেরও বাঁচাতে। বাঁচাই প্রিয় দেশবাসীকে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।