চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম শহরের কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে র্র্কণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নের মিয়ার হাট এলাকায় অবস্থিত ৩০০ বছরের পুরানো জমিদার মনোহর আলী খানের মিয়াবাড়ি। এটি এখন ঝোপ-জঙ্গলে ঘেরা পড়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মনোহর আলী খান ৩০০ বছর আগের জমিদারের ১৬তম প্রজন্ম। ১৬৯৪ থেকে ১৬৯৬ সালের মধ্যে তাদের পূর্বপুরুষ এখানে আসেন। কেউ কেউ বলেন, রাজা শ্যাম রায় তাদের পূর্বপুরুষ। তারা মূলত শায়েন্তা খানের বংশধর। শায়েস্তা খান তার জমিদারির ২৫ শতাংশ দেওয়ান মনোহর আলী খানকে দান করেছিলেন। সেখান থেকেই তাদের জমিদারি শুরু। সরেজমিন ঘুরে বড় উঠান মিয়াবাড়িতে প্রবেশ করতেই দেখা যায় একটি বড় পুকুর। পুকুরটিতে দুটি ঘাট রয়েছে। একটি ঘাট নষ্ট হওয়ার পর স্থানীয়রা সংস্কার করেন। পুকুরের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে রয়েছে মসজিদ। মসজিদের পাশের ঘাটটি এখনও অক্ষত রয়েছে। মসজিদটির কারুকাজ চোখে পড়ার মতো। মসজিদের পাশেই কবরে শুয়ে আছেন জমিদারের বংশধররা। মূল বাড়ির সামনে রয়েছে লম্বা মাটির কাচারি ঘর। তারপর বড় বারান্দা। বারান্দায় দেওয়া হয়েছে মাটির পিলার। কাচারির মাঝে রয়েছে মূলবাড়িতে যাওয়ার পথ। মূল বাড়িটি এখন ঝোপঝাড়ে প্রায় আড়াল হয়ে গেছে। বাড়িটির আশপাশে অনেক পুরানো লিচু, বেলসহ বিভিন্ন ফলদ ও বনজ গাছ রয়েছে। মাটির নির্মিত কাচারিটির বিভিন্ন অংশ ক্ষয়ে গেছে। প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া দ্বিতল ভবনটিতে উপর ও নিচে তিনটি করে মোট ছয়টি কক্ষ ছিল। বাড়ির ভবন নির্মাণে ব্যবহৃত ইট চৌকোণাকার। ইট তৈরিতে ব্যবহার হয়েছিল দেয়াঙ পাহাড়ের মাটি। এর সঙ্গে চুন-সুড়কি মিশিয়ে স্থাপনাটি নির্মাণ করা হয়। জমিদারের বংশধররা ষাটের দশক থেকে ভবনটিতে বসবাস করা বন্ধ করে দেন। বাড়ির পেছনে নির্মিত আরেকটি একতলা ভবন এখনও বসবাসের উপযোগী। জমিদারের বংশধররা গ্রামের বাড়িতে গেলে সেখানে বসবাস করতেন। পুরানো ভবনটি সংস্কার না হওয়ায় এখন বিলুপ্তির পথে। বড় উঠান ইউপি সদস্য সাজ্জাদ খান সুমন বলেন, এটি অনেক পুরানো জমিদারবাড়ি হিসেবে আমাদের এলাকার গর্ব। পুরানো ভবন এখন সংস্কারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তবে মসজিদ ও পুকুরের ঘাটসহ আশপাশের চলাচলের রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে।