ঠিকানা অনলাইন : ভারতের মণিপুর রাজ্যে জাতিগত সহিংসতায় ৫৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা। তবে বেসরকারি তথ্য অনুযায়ী, হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি।
এদিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংঘাতপূর্ণ এলাকা ‘কঠোর নিয়ন্ত্রণে’ আনার কথা জানানো হয়েছে। এমনকি আজ শনিবার সকাল থেকে রাজ্যের ইম্ফল শহর ও আশপাশের এলাকার দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
কর্মকর্তারা বলছেন, চূড়াচাঁদপুর জেলা হাসপাতালের মর্গে ১৬ জনের মরদেহ, পূর্ব ইম্ফল জেলার জওহরলাল নেহরু ইনস্টিটিউট অব মেডিকেলের সায়েন্সে ১৫ জনের মরদেহ এবং পশ্চিম ইম্ফল জেলার ল্যামফেল আঞ্চলিক ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সে ২৩ জনের মরদেহ রাখা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে চূড়াচাঁদপুর জেলায় পৃথক দুটি গোলাগুলির ঘটনায় পাহাড়ভিত্তিক পাঁচ জঙ্গি নিহত এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের দুই জওয়ান আহত হয়েছেন।
মণিপুরে রাজনৈতিক বা জাতিগত উত্তেজনা নতুন নয়। তবে সাম্প্রতিক এই উত্তেজনা ছড়িয়েছে কিছু দাবিদাওয়া নিয়ে। প্রায় এক দশক ধরে নানাভাবে মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইরা আইনিভাবে তফশিলি উপজাতি হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল। মেইতেইদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারকে চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের দাবিদাওয়া যথাযোগ্য গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে রাজ্যের অবস্থান জানাতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এতে চটে যায় মণিপুরের বাকি উপজাতিরা।
সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, বুধবার অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আদিবাসী ঐক্য মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর জেলায়। সেই মিছিলকে কেন্দ্র করে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
কয়েক দিনের সহিংসতায় পুলিশ ও আদিবাসীদের মধ্যে রাজ্যটিতে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। বহু এলাকায় হাতাহাতি, মারধর, দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট এমনকি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনাও ঘটেছে। সহিংস এলাকাগুলোয় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য। বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তবে এনডিটিভির খবরে বলা হয়, আজ শনিবার সকাল থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। ইম্ফল উপত্যকায় দোকানপাট খোলা শুরু হয়েছে এবং রাস্তায় যান চলাচলও শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে নিরাপত্তাব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।
সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, ১৩ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের অনেককে সেনা ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া চূড়াচাঁদপুর, মোরেহ, কাকচিং ও কাংপোকপি জেলাকে ‘কঠোর নিয়ন্ত্রণে’ এনেছে সেনাবাহিনী।
ঠিকানা/এনআই