স্পোর্টস ডেস্ক : নিজেদের স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরির কাজ শুরু করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। ক্রিকেট বিশ্বায়নের জন্য কাজ করা আইসিসির স্ট্র্যাটেজি ওয়ার্কিং গ্রুপ (এসডব্লিউজি) আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, অতি ভারত নির্ভরতা ক্রিকেটকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার কার্যক্রমে সবচেয়ে বড় দুর্বলতা।
এসডব্লিউজি আরো উল্লেখ করেছে, ক্রিকেট বিশ্বব্যবস্থাপনা একচেটিয়াভাবে আইসিসির দায়িত্ব নয়, কারণ খেলাটা পরিচালিত হয় মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) তৈরি করে দেয়া নিয়মে।
এসডব্লিউজি বিশ্লেষণ রিপোর্টে বলা হয়েছে, ক্রিকেট আসলে সত্যিকারের বিশ্বব্যাপী খেলা নয়, কারণ আয় ও দর্শকের দিক থেকে ভারতের উপর রয়েছে অতি নির্ভরতা। এখানে দাবি করা হয়েছে, ভারত নির্ভরতার বিপরীতে ক্রিকেট বিস্তারে প্রয়োজনীয় কৌশলেরও অভাব রয়েছে।
দিল্লিতে আইসিসির ওয়ার্কিং গ্রুপ ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) কর্মকর্তাদের মিটিংয়ে এসডব্লিউজির রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা হবে। মজার বিষয় বিসিসিআইয়ের সিইও রাহুল জোরি এসডব্লিউজির সদস্য। যারা বের করেছে, বিশ্ব ক্রিকেটের আয় বণ্টনে বড় ধরনের অসমতা রয়েছে। সঙ্গে বড় দেশগুলোর ক্ষেত্রে আর্থিক টেকসইতার অভাব রয়েছে।
গত বছর আয় বণ্টনের ক্ষেত্রে আইসিসির সাথে বিসিসিআইয়ের উত্তপ্ত আলোচনার পর সমঝোতা হয়েছিল। যদি এই রিপোর্ট ইতিবাচকভাবে কাজ করে তবে আইসিসি আরেকদফা বিসিসিআইয়ের শেয়ার কর্তনের দিকেই যাবে বাকি দেশগুলোকে টিকিয়ে রাখতে।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে প্রথাগত নয়, এমন সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততার অভাব রয়েছে ক্রিকেটের উন্নতির বাজারে। এখানে নির্দেশ করা হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার বাইরের ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলকে।
রিপোর্টে মতামত দেয়া হয়েছে, ব্রডকাস্টের বাজারে প্রতিযোগিতা কমে এসেছে। এবং খেলাটা অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছে কমার্শিয়াল অপারেটরদের অপ্রকাশ্য বিনিয়োগের কারণে। যাদের আগ্রহ শুধু সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে বেশি আর্থিক লাভের দিকে।
আইসিসি মন্তব্য করেছে, ক্রিকেট বিশ্বায়নের পথে অঞ্চলভিত্তিক নিয়মও বড় ধরনের দুর্বলতা। ক্রিকেটের স্পিরিটকেই খেলাটার মৌলিক আকর্ষণ হিসেবে প্রায়ই দেখা হয়। কিন্তু সবসময় ক্রিকেটের বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে একইভাবে রূপান্তর করা হয় না। এ ছাড়াও আন্তর্জাতিকভাবে খেলাটার ব্যবস্থাপনা কেবলমাত্র ইংরেজিতে এবং সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণ করা হয় ইংরেজিতে।
অর্থ বণ্টনের প্রশ্নেই এর আগে বিসিসিআই, ইসিবি ও সিএ গড়ে তুলেছিল বিগ থ্রি। যদিও পরে এই মডেল বিলুপ্ত হয়ে যায়।
এ দিকে আইসিসি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে টেস্ট ক্রিকেটকে টিকিয়ে রাখতে। শর্ট ফরম্যাটগুলোর কারণে যার অবস্থান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এসডব্লিউজি রিপোর্টে টি-১০, দশ ওভারের প্রতিযোগিতাগুলোকে হুমকি বলা হয়েছে টেস্টের জন্য। তবে খেলাটার জনপ্রিয়তা বাড়াতে এসব ফরম্যাটকে গ্রহণ করা হয়েছে।