ভাড়াটিয়াদের অভিযোগ: জারার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে এটর্নী জেনারেল ও গভর্নরের অফিস

নিউইয়র্ক : সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন এটর্নী জেনারেল ল্যাটিশিয়া জেমস। ছবি-ঠিকানা।

ঠিকানা রিপোর্ট : এটর্নী জেনারেল লিটিসিয়া জেমস এবং গভর্নর এন্ড্রু কুমো ল স্যুট এনাউন্স করেছে কুইন্সের ল্যান্ড লর্ডের বিরুদ্ধে। কারণ তারা রেন্টস্টেবলাইজেশন ভঙ্গ করছে, ভাড়াটিয়াদের হয়রানী করছে। স্যুটে অভিযোগ করা হয়েছে জারা রিয়েলটি কমপক্ষে তাদের ম্যানেজমেন্টে থাকা ৩৮টি ভবনে টেনেন্টদের টার্গেট করেছে।

নিউইয়র্ক : সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন ভুক্তভোগী একজন বাঙালি ভাড়াটিয়া। ছবি-ঠিকানা।

অনৈতিকভাবে, বেআইনীভাবে ভাড়া আদায় করছে ও ভাড়াটিয়াদের যেসব রাইট রয়েছে তা দেয়নি। এই ল’ স্যুটে ডিফেনডেন্ট জারা, তাদের ২৫০০ অ্যাপার্টমেন্টের বেশিরভাগ জ্যামাইকা কুইন্সের ভেতরে। তাদের ভাড়াটিয়ারা ইমিগ্রান্ট, মিডিল ও লো ইনকাম ফ্যামিলি। এইচএসসি এর ভাড়াটিয়াদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছে। তারা দুই বছর তদন্ত করেছে। এটর্নী জেনারেলের সঙ্গে তারা এই ব্যাপারে কাজ করছে ও স্যু করেছে। এটর্নী জেনারেলের প্রেস অফিস থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

নিউইয়র্ক : সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন জাস্টিস সেন্টারের একজন কর্মকর্তা। ছবি-ঠিকানা।

আরও জানানো হয়, নিউইয়র্ক স্টেটের গভর্নর এন্ড্রু কুমো বলেছেন, নিউইয়র্ক স্টেট কোনভাবেই এই ধরণের এলিগেশনের অভিযোগ সহ্য করবে না। তাদের টেনেন্ট প্রোটেকশন ইউনিট কাজ করতে থাকবে রুট আউট করার জন্য যারা ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে এডভানটেজ নেয় ও জেনে শুনে নিয়ম ভঙ্গ করে।

নিউইয়র্ক : সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন কাউন্সিলম্যান লরি ল্যাংসম্যান। ছবি-ঠিকানা।

এইচএসসি আজকের অ্যাকশনের মধ্য দিয়ে ও গভর্নরের টেনেন্ট প্রোটেকশন যেসব কাজ করে এই সব ল্যান্ডলর্ড সম্পর্কে কমিউনিটির কাছে এমন ম্যাসেজ যাবে যে, যদি ভাড়াটিয়াদের সাথে খারাপ করা হয় তাহলে তা মানা হবে না। সম্প্রতি নিউইয়র্ক জারার বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টে এই কমপ্লেন করা হয়।

নিউইয়র্ক : সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন ডিএসসিআর এর কমিশনার, পাশে এটর্নী জেনারেল ও অন্যন্যরা। ছবি-ঠিকানা।

জারা তাদের রিয়েলটি রেগুলার তাদের ভাড়াটিয়াদের একই বাসার থকে একই ভবনে অন্য বাসা চেঞ্জ করলেও তাদের কাছ থেকে ব্রোকার ফি নেয়। জেসমিন হোমস এলএলসি এটা হ্যান্ডেল করে। এই কোম্পানী এটি নিয়ন্ত্রণ করে সুভরাজ ফ্যামিলি। নিয়ম মতে, ল্যান্ড লর্ড ব্রোকারদের ফি কালেক্ট করতে পারে না। জারা সিকিউরিটি ডিপোজিট হিসাবে ৩-৪ গুন চার্জ করে। যেখানে তারা ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে এক মাসের ডিপোজিট নিতে পারে। কিন্তু এর বেশি পারে না। অভিযোগে বলা হয়, জারা নতুন করে এক একটি ভবন টেকঅফ করলে প্রথমেই তারা ভবনে প্রবেশ করার প্রথম দরজার লক চেঞ্জ করে। এক একটি চাবির জন্য ২০০ ডলার চার্জ করে। আবার বলে ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করতে হবে। নতুন লিজ সাইন করতে হবে। জারাতে যারা ভাড়া নিয়েছে তাদের বেশিরভাগের কাছ থেকে ১১ হাজার ডলার আদায় করা হয়েছে। এটর্নী জেনারেলের অফিস থেকে এই সব তথ্য জানানো হয়েছে।

নিউইয়র্ক : প্রতিবাদ সমাবেশে ভুক্তভোগী ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে এটর্নী জেনারেল। ছবি-ঠিকানা।

এই বিষয়টি হেন্ডেল করছে এজি’র রিয়েল এস্টেট ফাইন্যান্স বরোর সিনিয়র এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল রেচেল্ড হানাফোর্র্ড ও ব্যুরা চিফ ব্রেন্ট ম্যাটজার। এটা বুরো এন্ড কনজ্যুমার ফ্রডস অ্যান্ড প্রোটেকশন এর পক্ষে এএজি এলেনা গনজালেস জেম এম আজিয়ার সুপারভিশনের আকারে।

স্টেট সেনেটর লিয় কমরি বলেছেন, নিউইয়র্ক স্টেটের সব বাড়িওয়ালার কাছ থেকে ভাড়াটিয়ারা ফেয়ারনেস ও সম্মান ডিজার্ভ করে। এজি’ গভর্নরের অফিসসহ সংশ্লিস্ট যেসব অফিস জাস্টিস পাওয়ার জন্য কাজ করছে এটর্নী জেনারেল তাদের প্রশংসা করেন।
গত ১ মার্চ শুক্রবার সকালে জারা রিয়েলটি হোল্ডিং কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত ছিল না তার ভাড়াটিয়াদের। দিনে দিনে তারা জারার কাছ থেকে নানাভাবে হয়রানী ও আর্থিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছিল। এখনও হচ্ছে। জারা ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে চুক্তি হওয়া অর্থের বাইরেও নানাভাবে ভাড়াটিয়াদের চাপ দেওয়ার পাশাপাশি মানসিকভাবেও তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করে আসছে বলে অভিযোগ করেছেন সেখানে বসবাসকারী ভাড়াটিয়াদের কয়েকজন। এই সব অভিযোগ নিউইর্য়ক স্টেট এটর্নী জেনারেলের কাছেও রয়েছে। তার কাছে থাকা জারার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ভাড়াটিয়াদের অতিরিক্ত ভাড়ায় চুক্তি করতে বাধ্য করা, একবাড়ে ৫০০ ডলারের বেশি ভাড়া বাড়ানো, একটি চাবির জন্য ২০০ ডলার ফি নেওয়া, পার্কিংয়ের ভাড়া যথেচ্ছভাবে বাড়ানো, বাড়ি ভাড়া বাড়ানোর ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হচ্ছে না। দিনের পর দিন আইন লঙ্ঘন করে আসছে। এছাড়াও বিভিন্নভাবে ভাড়াটিয়াদের দিনের পর দিন হয়রানী করে আসছে। জারার এই সব অভিযোগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন নিউইয়র্ক স্টেটের এটর্নী জেনারেল লিটিসিয়া জেমস, কমিশনার ডিএসসিআর , কাউন্সিলম্যান লরি ল্যান্সম্যান সহ বিভিন্ন সংগঠন। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছেন নির্যাতিত ও হয়রানীর শিকার ভাড়াটিয়াদের একাংশ। আস্তে আস্তে নির্যাতিত বাকিদেরও ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে জারার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে স্যু করেছে। এই ব্যাপারে ভাড়াটিয়াদের পক্ষে বিভিন্ন সংগঠন কাজ করছে। এই জন্য ছায়া সিডিসিসহ যে সব সংগঠন কাজ করছে তাদেরকে ধন্যবাদ জানান এটর্নী জেনারেল।

১ মার্চ শুক্রবার সকাল পৌনে নয়টায় পারসন্স বুলেভার্ডে ৮৮ এভিনিউতে একটি গীর্জার সামনে ভাড়াটিয়াদের কয়েকজন ঐক্যবদ্ধ হন। পরে জারার ভবনের সামনে তারা একসাথে প্রতিবাদ করেন। জারা এই সব নির্যাতন বন্ধ করার জন্যও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ঘোষণা দেন। ভাড়াটিয়ারা জারার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল করে। মিছিলটি পারসন্স বুলেভার্ড ৮৮ এভিনিউ থেকে শুরু করে ১৪৮ স্ট্রিটে এসে জড়ো হয়। প্রতিবাদ মিছিলে তারা জারার অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। সেই সঙ্গে তাদেরকে নানাভাবে হয়রানী করার বিষয়গুলো তুলে ধরে স্লোগান দিতে থাকে। তারা মিছিল করতে করতে ও স্লোগান স্লোগান দিতে দিতে এসে উপস্থিত হন ১৪৮ নম্বর স্ট্রিটের ৮৮ এভিনিউ এর ৪৮ নম্বর ভবনের সামনে। সেখানে অপেক্ষা করছিলেন এটর্নী জেনারেল, কমিশনার ডিএসসিআর, কাউন্সিলম্যান, ভাড়াটিয়াদের একাংশ ও গণমাধ্যমের কর্মীরা।

অনুষ্ঠানে এটর্নী জেনারেল লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। সেই সঙ্গে তিনি জারার বিভিন্ন অনিয়মের কথাও তুলে ধরেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি তার বক্তৃতায় জারার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ তুলে ধরেন ও ল স্যুটের বিষয়টি জানান।

এরপর বক্তৃতা করেন কমিশনার ডিএসসিআর। তিনি বলেন, জারার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। তারা ভাড়াটিয়াদের নানাভাবে হয়রানী করছে। তারা ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে হাউজিংয়ের ও ভাড়াটিয়াদের জন্য যে নিয়ম রয়েছে তা মানছেন না। উল্টো তারা বিভিন্নভাবে ভাড়াটিয়াদের হয়রানী করছেন। আমরা আরও জানতে পেরেছি তারা একটি চাবির জন্য ২০০ ডলার চার্জ করে। কেবল তাই নয় ওই চাবির জন্য তার ব্যাংক হিসাব নম্বর, স্টেটমেন্ট, সোশ্যাল নম্বরসহ আরও বিভিন্ন তথ্য দাবি করে। যেগুলো একজন ভাড়াটিয়া থাকা অবস্থায় তাদের কাছে এতকিছু চাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। তার চাবির প্রয়োজন তাকে আর একটি চাবি দিতে হবে। কিন্তু সেই চাবি না দিয়ে তার বাচ্চাকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখে। তারা দিনের পর দিন অনেক অনিয়ম করে চলেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখছি। তিনি বলেন, আজকে আপনারা উপস্থিত হয়েছেন আপনারা আপনাদের কথা গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরবেন।

কাউন্সিলম্যান লরি ল্যান্সম্যান বলেন, জারা এমন একটি রিয়েলটি প্রতিষ্ঠান যারা কিনা দিনের পর দিন ভাড়াটিয়াদের হয়রানী করছে। যাদের অনেকেই আজকে এখানে উপস্থিত হয়েছেন। যারা উপস্থিত হয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা আপনাদের পাশে রয়েছি।

এরপর বেশ কয়েকজন ভাড়াটিয়াকে প্রতিবাদ সমাবেশে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। তারা তাদের নানবিধ সমস্যার কথা তুলে ধরেন। একজন বলেন, আমি তাদের কাছ থেকে সহায়তাতো পাই না, উল্টো তারা নানাভাবে আমাদেরকে হয়রানী করেন। নিয়ম নীতি অনুসরণ করেন না বাড়ি ভাড়া বাড়ানোর ক্ষেত্রে, একসঙ্গে বাড়ি ভাড়া ৫০০ ডলার বাড়িয়ে দেন। রোজা নামের একজন (তিনি যে ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করছিলেন) সেই ভবনটি দেখিয়ে বলেন, আমি ২০ বছর ধরে বাস করে আসছিলাম। কিন্তু আগে সমস্যা ছিল না। জারা এই বিল্ডিংয়ের ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর সমস্যা হয়। আমি নিয়মিত তাদের ভাড়া দিয়ে গেছি। কিন্তু এরপরও আমি সময়মতো ভাড়া দেইনি বলে প্রতিমাসে লেট ফি ধরিয়ে দিতো। আমার বাসায় হিটিং বিল আলাদা দিতে হয় না। কিন্তু তারা প্রতিমাসে আলাদা করে ৬০ ডলার করে হিটিং বিল ধরিয়ে দিতো। আমার একটি চাবির প্রয়োজন ছিল। সেই চাবির জন্য তারা ২০০ ডলার চায়। কেবল তাই নয় তারা এই জন্য আমার ব্যাংক স্টেটমেন্ট চায়। আমার তো চাবি নেওয়ার জন্য ব্যাংক এর ইনফরমেশন চাওয়ার কোন দরকার নেই। তারপরও চেয়েছে। আমি অনেকবার চাবির জন্য তাদের কাছে গেছি কিন্তু চাবি দেওয়া হয়নি। আমাদের দিনের পর দিন হয়রানী করা হয়েছে। তিনি এটর্নী জেনারেলকে জারার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান।

রবীন নামের একজন ভাড়াটিয়া বলেন, আমি পারসন্সে জারাতে থাকি। ২০১৪ সালে আমাদের ভবনটি জারা ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব নেয়। আমার চাবির দরকার ছিল কিন্তু অতিরিক্ত চাবি দেওয়া হয়নি। তারা এতটাই সমস্যা করতো যে টিনেজারকে স্কুল থেকে ফিরে এসে গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। তিনি এটনী জেনারেল ভাড়াটিয়াদের হয়রানীর বিরুদ্ধে জারার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান। বলেন, সি ইজ দ্য চ্যাম্পিয়ন অব দ্য টেনেন্ট পিউপিল। জারা ভাড়া বাড়ানোর ক্ষেত্রে নিয়ম কানুন মানছে না। তারা ৩৫০-৬০০ ডলার পর্যন্ত এক একজন ভাড়াটিয়াকে বেশি নির্ধারণ করে। এটা তারা করতে পারে না। প্রতিবাদ জানালেও তারা এটা মানতে চায় না। তারা তাদের স্বেচ্ছাচারীভাবে কাজকর্ম করে চলেছে। আমাদের বাসার দুই ব্লকের মধ্যে স্কুল। এখান থেকে বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়ার সুবিধা। অথচ চাবির অভাবে এখানে অনেক সময় বাচ্চাদের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

জারার এই সব হয়রানীর ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে এটর্নী জেনারেল ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে তাকে ধন্যবাদ জানান।

মীর বাহার জাহাঙ্গীর হোসেন নামে এক ভাড়াটিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমি ১৬৮ স্ট্রিটের ৮৮ এভিনিউ এর ১৫ নম্বর বাসাতে থাকি। আমাদের ভবনে প্রায় ২০০ ইউনিট রয়েছে। জারার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তাদের বিরুদ্ধে হয়রানীর সব অভিযোগ নিয়ে আজকে আমি বলছি না। আমি তাদের একটি বিষয় বলবো। ২০১৪ সালের পর তারা আমাদের ভবনের ম্যানেজেমেন্টের দায়িত্ব নেয়। তারা দায়িত্ব নেওয়ার পর সব ভাড়াটিয়াকে নোটিশ করে তাদের সঙ্গে লিজ করার জন্য। সবাইকে তারা অফিসে ডেকে পাঠায়। আমরা সেখানে আগে থেকে থাকলেও তারা আমাদের আগের ভাড়া মানছিল না। বলে নতুন করে চুক্তি হবে। আর ভাড়াও নতুন করে এড করে। এই ভাবে যাদের লিজ ওভার হয়ে গিয়েছিল তাদের সবার উপর ভাড়ার বাড়তি বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়। যাদের ভাড়া আগে ছিল ১৩৫০ ডলার। দুই বছরের মধ্যে সেইভাড়া তারা নির্ধারন করে ২০৪৮ এর মতো। আবার আমাদের যাদেরকে তারা চুক্তি করতে বলে তাদের সবাইকে দিয়ে ব্যাক ডেটে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছে। সেই সব কাগজ তারা আদালতেও উপস্থাপন করেছে। তারা দিনের পর দিন ভাড়াটিয়াদের যেমন হয়রানী করছে তেমনি বিভিন্ন আইন অমান্য করছে। ভাড়ার ক্ষেত্রে নিউইয়র্কের যে এনোয়াল ও বাই এনোয়ালের নিয়ম রয়েছে সেগুলোর ধারে কাছেও তারা নেই।

আবার তারা এমন করে একটি লিজ চলমান থাকা অবস্থায় মেয়াদ শেষ হওয়ার তিনমাস আগে আরও একটি লিজ চুক্তি করার জন্য বলে। একই গ্যারজের ভাড়া তারা বার বার বাড়ায়। কোন কোনটি ২-৩ বারও করে। ২০১৪ সালে একটি গ্যারেজের ভাড়া ১০০ ডলার থাকলে সেটা পরে তারা ২৫০ ডলার করেছে। ১০০ ভাগ থেকে ১৫০ ভাগ পর্যন্ত তারা এটি বাড়িয়েছে।

নতুন ভাড়াটিয়াদেরও নানা রকম সমস্যায় পড়তে হয়। আগে যেই ভাড়া ছিল ৮৫০ ডলার। নতুন করে ভাড়ার চুক্তি করতে গিয়ে সেই ফ্ল্যাটের ভাড়া নির্ধারণ করে ১৬০০ ডলার। দ্বিগুনের মতো। তিনি জারার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান।
বক্তৃতা করেন জাস্টিস সেন্টারের উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আমরা ভাড়াটিয়াদের বিভিন্ন সমস্যা শুনছি। জারা এত বেশি অনিয়ম ও অন্যায় করেছে যা দিনের পর দিন ভাড়াটিয়াদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। হয়রানীর মাত্রাও সীমা ছাড়িয়ে গেছে। আমরা বিভিন্ন সময়ে ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে অভিযোগ পাই। এই অভিযোগ দিনে দিনে অনেক বেশি বাড়ছে।

প্রেস বিফিং অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয় ভাড়াটিয়াকে জারার বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের ইতিহাস। বলা হয় জারা রিয়েলটির দীর্ঘ দিন ধরে ভাড়াটিয়ারা দিনের পর দিন হ্যারাস করে চলেছে। জারার এই সব কাজের বিরুদ্ধে ভাড়াটিয়ারা তিন বছরের বেশি সময় ধরে ফাইট করে আসছে। সেইসব ভবনে অনেক বাংলাদেশীও থাকেন। যারা জারার বিরুদ্ধে এতদিন ফাইট করে আসছিলেন তার রেজাল্ট দেখতে পেয়েছেন। এরই অংশ হিসাবে এটর্নী জেনারেল লিটিসিয়া জেমস তাদের সঙ্গে শুক্রবার প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দেন।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভাড়াটিয়াদের পাশে দাঁড়ায়। শুক্রবার ছায়া সিডিসি এর এডভোকেসী ও এই অনুষ্ঠানে আয়োজকদের একটি প্রতিষ্ঠান ছিল।

এটর্নী জেনারেল বলেন, কেবল কুইন্স সিটিতেই যে সমস্যা, তা নয়, নিউইয়র্কের বাড়িওয়ালাদের অনেকেই ভাড়াটিয়াদের নানাভাবে হয়রানী করছেন। তাদের কেউ কেউ ভাড়া প্রদান করার ক্ষেত্রে যে সব নিয়ম কানুন, আইন রয়েছে সেগুলো ভায়োলেশন করছেন। এগুলো আর করতে দেওয়া হবে না, এগুলো বন্ধ করতে হবে। ভাড়াটিয়ারা যাতে তাদের অধিকার নিয়ে বাস করতে পারেন সেই সব বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হবে।

জারা প্রথম কেন এই ব্যাপারে এটর্নী জেনারেল বলেন, তারা অনেকগুলো হাউজের ম্যানেজমেন্ট করছে। তাদের ভাড়াটিয়া অনেক বেশি। দিনের পর দিন তারা নানা অনিয়ম করছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগেরও অন্ত নেই। এই কারণেই আগে তাদের বিরুদ্ধে প্রথম অ্যাকশন শুরু।

পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে বলেন, কেবলতো সিক্স উইক হলো। আস্তে আস্তে সবই করা হবে। ভাড়াটিয়াদের হয়রানী বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।