ঢাকাই ছবিতে এ যাবৎ ভিলেনের আবির্ভাব হয়েছে অনেক। কিন্তু তাদের সবাই যে আলোড়ন তুলতে পেরেছেন মন্দ মানুষ হিসেবে তা কিন্তু নয়। তাই বলা যায় সফল ভিলেনদের তালিকাটা দীর্ঘ নয় খুব একটা। সত্তরের দশকের গোড়ার দিকে সুপারহিট ছবিগুলোর সঙ্গে দারুণভাবে জড়িয়ে যায় জসিমের নাম। ‘দোস্ত দুশমন’ থেকে ‘প্রতিজ্ঞা’-সত্তর শুরু থেকে আশির দশকের শুরু পর্যন্ত জসিম ছিলেন তারকাখ্যাতির তুঙ্গে। ফোক, ফ্যান্টাসি, অ্যাকশন ছবিতে তার কোনো তুলনা ছিল না। তিনি একাই ছিলেন ভিলেন জগতের অধিশ্বর। সে সময় থেকে পরে অনেকদিন পর্যন্ত খলিলও ভিলেন হিসেবে বেশ সুখ্যাতি পেয়েছেন।
ভিলেন হিসেবে রাজু আহমেদও ঢাকাই ছবির দর্শকদের মাতিয়েছেন একসময়। এরপর ‘নয়নমণি’ ছবিতে এ টি এম শামসুজ্জামানের ভিলেনরূপে উপস্থিতি চমক লাগিয়ে দেয় সিনে দর্শকদের চিত্তে। গ্রামীণ ছবিতে নেতিবাচক অভিনয় দেখিয়ে দর্শকদের হৃদয়ে ব্যাপকভাবে জায়গা করে নেন এ অভিনেতা। তার মতোই জনপ্রিয়তা পান আহমেদ শরীফ। আশির দশকে ব্যস্ততায় তিনি সবাইকে ছাড়িয়ে যান। এক নামে দেশজুড়ে তার খ্যাতি প্রতিষ্ঠিত হয়। নব্বইয়ের দশকে তার পাশে উত্তরণ ঘটে রাজিবের। দর্শকপ্রিয়তায় তিনি শীর্ষে পৌঁছে যান। তাকে ঘিরেই ছবির গল্প লেখা হতে থাকে। রাজিবের পাশে যোগ দেন হুমায়ুন ফরীদি। তিনি ভিলেন চরিত্রে অন্য রকম অভিনয় দেখিয়ে বাংলা ছবিতে আনেন ভিন্নমাত্রা। তাকে ভেবে গল্প, গান, পোস্টার করা হয়। নব্বই দশকের শেষে ডিপজল এসে ভিলেনদের আগের রেকর্ড ভাঙেন। তার জন্যই সিনেমা হলে হুমড়ি খেয়ে পড়েন দর্শকরা। ঢাকাই ছবির দিক পরিবর্তনে পর্দায় তার ভিলেনগিরির কথা এখনো স্মরণীয়। ঢাকাই সিনেমায় ভিলেনদের তালিকায় সর্বশেষ ঝড়তোলা নাম মিশা সওদাগর। সাতশ’রও বেশি ছবিতে যিনি ভিলেনের দাবি মিটিয়েছেন। তাকে ছাড়া আজকাল নির্মাতারা ছবি নির্মাণের কথা ভাবতেই পারেন না বললেই চলে।