ড. সুফিয়ান খন্দকার: গত এক যুগ ধরে বিশ্বের বৃহত্তম পুরকৌশল সংস্থা আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স (ASCE) বিশ্বের উন্নতগামী দেশে পানিসম্পদ ও পরিবেশের ওপর একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন করে আসছে। গত বছরের ডিসেম্বরে কলম্বিয়ার বিখ্যাত কার্টেহেনা শহরে ১০ম সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম পানিসম্পদ ও পরিবেশের ওপর একটি প্রবন্ধ পাঠের। ভেবেছিলাম ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতার ওপর প্রবন্ধটি পেশ করব। কিন্তু গিন্নি বাদ সেধে বসলেন। না, ড্রাগের আড্ডা কলম্বিয়ায় যাওয়া যাবে নাÑযেখানে জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই।
এটা সত্য যে, কিছুদিন আগেও কলম্বিয়ার খুব দুর্নাম ছিল। কুখ্যাত ড্রাগ-লর্ড পাবলো এসকোবার মেডেলিন শহরটিকে ড্রাগের রাজধানীতে পরিণত করেছিল এবং কলম্বিয়াকে বলা হতো হত্যাযজ্ঞের রাজধানী। তবে গত কয়েক বছর হলো আমেরিকার সহযোগিতায় কলম্বিয়া থেকে ড্রাগ সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। ক্যারিবিয়ান উপসাগরের পারে অবস্থিত সুন্দর কার্টেহেনা শহরটি অবশ্য কোনো দিনই ড্রাগ-সংক্রান্ত সমস্যায় পড়েনি।
অবশেষে ২ ডিসেম্বর বিকেলে রাজধানী বোগটা হয়ে আমরা কার্টেহেনা বিমানবন্দরে পৌঁছালাম। ছোট্ট বিমানবন্দরটি ঢাকার পুরাতন বিমানবন্দরের মতো। উড়োজাহাজগুলো রানওয়ের পাশে থেমে যায় এবং যাত্রীদের হেঁটে বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে হয়। সিঁড়ি দিয়ে নামতেই প্রখর সূর্যের রশ্মি মনে করিয়ে দিল যে কার্টেহেনা বিষুব রেখার নিকটে অবস্থিত। সতর্কতা না নিলে অরক্ষিত গায়ের চামড়া সূর্যরশ্মিতে ঝলসে যেতে পারে। ইমিগ্রেশনের ঝামেলা বোগটাতে সম্পন্ন করেছিলাম। তাই বিনা ঝামেলায় আয়োজনকারীদের নির্ধারিত হলিডে ইন হোটেলে পৌঁছালাম। ক্যারিবিয়ান উপসাগরের পাড়ে অবস্থিত অপেক্ষাকৃত নতুন এই হোটেলটি খুবই সুন্দর। আমরা ৯ তলায় ব্যালকনিসহ সমুদ্রমুখী একটি রুম নিলাম। ব্যালকনি থেকে সমুদ্রের দৃশ্য সত্যিই অপূর্ব। বালিতে পাটি বিছিয়ে কেউ অপরাহ্ণে সূর্যের তাপ উপভোগ করছেন, কেউ আবার ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাঁতার কাটছেন। আর যারা অতি সাহসী, তারা বেলুনের মাধ্যমে ওয়াটার স্কিয়িং করছেন। সব মিলিয়ে এক অপরূপ দৃশ্যের অবতারণা করেছে।
পরন্ত বেলায় খুব খিদে পেয়েছিল, তাই হোটেলের রেস্টুরেন্টে এসে উপস্থিত হলাম। চারদিকে পানি দিয়ে ঘেরা কার্টেহেনা ‘সি ফুডে’র জন্য বিখ্যাত। আমি নারকেল এন্টমকেল ভাত ও তেলাপিয়া মাছ আর গিন্নি স্যালমনের অর্ডার দিলেন। মচমচে ভাজা তেলাপিয়া মাছ সত্যিই খুব সুস্বাদু হয়েছিল। মাছের কাঁটাগুলোও বিড়ালের মতো চিবিয়ে খেতে অসুবিধা হয়নি।
কলম্বিয়া এমারেন্ডের জন্য বিশ্ববিখ্যাত এবং গিন্নির গয়নায় ভীষণ শখ। সোমবার সকালে তাই পুরাতন শহরে অবস্থিত এমারেন্ড মিউজিয়ামে পৌঁছালাম। ওরাই গাড়ি ও ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী একজন গাইড পাঠিয়েছিল। এমারেন্ড মিউজিয়াম/দোকান থেকে গিন্নির জন্য একটি আংটি এবং বউমা ও নাতনির জন্য একটা করে নেকলেস কিনে পৌঁছালাম চকলেট মিউজিয়াম/দোকানে। কলম্বিয়ার চকলেটও খুব বিখ্যাত। সাদা, কালো এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নির্মিত চকলেট কিনে উপস্থিত হলাম কলম্বিয়ার বিশ্ববিখ্যাত কফি কেনার জন্য। ‘ওয়ান ভ্যালডেজ’ কফি এক বিখ্যাত নাম। ওয়ান ভ্যালডেজের ফ্যাক্টরি থেকে বিভিন্ন পদের কফি কিনে হোটেলে ফিরতে মধ্যাহ্নভোজের সময় হয়ে গেল। লাঞ্চ শেষে যখন কলম্বিয়ার সুস্বাদু কফি উপভোগ করছিলাম, তখন মনে হলো পেছন থেকে কে যেন আমার নাম ধরে ডাকছে। তাকিয়ে দেখি (ASCE) ডাইরেক্টর ব্রায়ান পারসন্স, এই সম্মেলনের সার্বিক দায়িত্বে। ব্রায়ানের সঙ্গে আমাদের বহুদিনের পরিচয়। জীবনের প্রথম দিকে নিউ ইয়র্কের ব্রকলিনে কাটালেও গত এক যুগ ধরে ব্রায়ান ভার্জিনিয়ায় (ASCE) হেডকোয়ার্টারে অবস্থান করছে। ব্রায়ান জিজ্ঞাসা করল, আমরা সোসাইটি আয়োজিত সিটি ট্যুরে যাচ্ছি কি না।
ভ্রমণে এসে আমরা সাধারণত প্রাইভেট ট্যুরের ব্যবস্থা করি। এবার অবশ্য গাইডেড ট্যুরেই বেড়িয়ে পড়লাম। মহিলা গাইড ভাঙা ইংরেজিতে বিভিন্ন বর্ণনা দিয়ে যাচ্ছিলেন। আর গিন্নিরও প্রশ্নের শেষ নেই। সব মিলিয়ে যা বুঝলাম, তা হলো ষোলো শতকে কার্টেহেনা বিখ্যাত বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সেই সময় জলদস্যুদের উপদ্রবও খুব বেশি ছিল। জলদস্যুদের হাত থেকে শহরটিকে রক্ষার জন্য শহরের চারপাশে দেয়াল এবং ‘স্যান ফিলিপে’ দুর্গ নির্মাণ করা হয়। এই দেয়ালবেষ্টিত ছোট্ট শহরটি আজও আগের মতোই আছে এবং ‘পুরাতন শহর’ নামে পরিচিত। দুই পাশে উজ্জ্বল রঙের ছোট ছোট বাড়ি, মাঝখানে সরু কবল স্টোনের রাস্তা। একসময় ঘোড়ার গাড়িই ছিল একমাত্র বাহন কিন্তু এখন সবকিছু বন্ধ, শুধু হেঁটে পুরাতন শহর দেখতে হয়। সাম্প্রতিক কালে জাতিসংঘ পুরাতন শহরটিকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’-এর সম্মানে ভ‚ষিত করেছে। ভ্রমণকারীদের এই পুরাতন শহরটি প্রধান আকর্ষণ।
আধুনিক কার্টেহেনা অবশ্য গড়ে উঠেছে দুটি ভাগে। ক্যারিবিয়ান উপসাগরের পারে গড়ে উঠেছে আধুনিক বাণিজ্যকেন্দ্র। এখানেই সব হোটেল, রেস্টুরেন্ট, দোকানপাট, অফিস-আদালত ইত্যাদি অবস্থিত। অপরদিকে লাগুন (বড় লেক)-এর পারে গড়ে উঠেছে বিত্তশালী বাসিন্দাদের জন্য আবাসিক এলাকা। মাঝখানে স্থান হয়েছে গরিব বাসিন্দাদের, যারা গৃহকর্ম ও অফিস-আদালতে নিম্ন বেতনে কাজ করেন।
১০ লাখ অভিবাসীর ছোট্ট এই শহরটি বর্তমানে ট্যুরিজমের ওপর নির্ভরশীল এবং অধিকাংশ ট্যুরিস্ট নিউ ইয়র্ক ও ফ্লোরিডা থেকে আসেন। তবে ট্যুরিজম এখনো অতটা উন্নত হতে পারেনি। তার প্রধান কারণ ভাষার প্রতিবন্ধকতা। এখানে অধিকাংশ ট্যাক্সি ড্রাইভার ও দোকানি ইংরেজি বলতে পারে না।
৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সম্মেলনের শুরু হয় শহর থেকে ১০ মাইল দূরে অবস্থিত লস এন্ডিস ক্যারিবি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়টি অনেক জায়গাজুড়ে গাছপালায় পরিবেষ্টিত এবং সম্পূর্ণ নতুন। এক শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসা করে যা জানলাম সত্যিই আশ্চর্যজনক। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত কোনো ক্লাস নেই, কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে শিক্ষাদানও হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ উন্মুক্ত। আন্তর্জাতিক সম্মেলন, ওয়ার্কশপ, শর্ট কোর্স ইত্যাদি শিক্ষাব্যবস্থার প্রধান উপকরণ। সম্প্রতি উত্তর আমেরিকায় ‘অনলাইন’ শিক্ষাব্যবস্থার প্রচুর প্রসার হয়েছে, সত্য তবে লস এন্ডিস বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অভিনব শিক্ষাব্যবস্থা সত্যিই অভ‚তপূর্ব।
সম্মেলনে প্রতিবছরের মতো এবারও জগদীসের সঙ্গে দেখা। জগদীস ভারতের ব্যাঙ্গালুরু থেকে এসেছে এবং বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত বৃহত্তম কারিগরি সংস্থা এই কম (AECOM)-এর পরিবেশ-বিষয়ক অ্যাসোসিয়েট ভাইস প্রেসিডেন্ট। জগদীসকে নিয়ে প্রতিবছরই আমাদের কিছু সমস্যা হয়। কারণ জগদীস শুধু নিরামিষ খাবার গ্রহণ করে। তাই রাতের খাবারের জন্য যখন জগদীস কার্টেহেনার একমাত্র ভারতীয় রেস্টুরেন্টের প্রস্তাব দিল, তখন না করতে পারলাম না। এত দিনে জগদীস আমাদের পরিবারের খুব কাছের মানুষ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং আমাদের ছোট ছেলের সঙ্গে ওর খুব খাতির। ভারতীয় রেস্টুরেন্ট পুরাতন শহরে একটি ছোট গলিতে অবস্থিত এবং আকারে খুবই ছোটমাত্র ৩-৪টি টেবিল। খাবার গতানুগতিক। আমি চিংড়ির তরকারি, গিন্নি চিকেন টিক্কা মসল্লা এবং জগদীস চাপাতি, ডাল আর সবজি। খাবারে ঝালের পরিমাণ বেশি ছিল, তবে গোলাপজাম ও মসলা-চা দিয়ে শুধরে নিলাম।
পরদিন সম্মেলন থেকে একটু আগে ফিরে জগদীসকে সঙ্গে নিয়ে পুরাতন শহরে গেলাম কিছু কেনাকাটা করার জন্য। আদিবাসীদের নির্মিত কারুকার্যসম্পন্ন হ্যান্ড ব্যাগগুলো খুব প্রসিদ্ধ। দোকানে যখন বিভিন্ন হ্যান্ডিক্রাফট কিনতে ব্যস্ত, তখন জগদীস বলল যে ওর দামি সানগ্লাসসহ ব্যাগটি ভুলে ট্যাক্সিতে রেখে এসেছে। ভাগ্যিস ড্রাইভারের কার্ডটি ছিল। দোকানের কর্মচারী ফোনে ড্রাইভারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারল যে ব্যাগটি পেছনের সিটে আছে এবং ড্রাইভার হোটেলে পৌঁছে দেবে। কেনাকাটা শেষে বিকেলে হোটেলে ফিরে দেখলাম ড্রাইভারটি যথাসময়ে জগদীসের ব্যাগটি হোটেলে রেখে গেছে। ড্রাইভারের সততায় আমরা মুগ্ধ হলাম।
হাঁটাহাঁটিতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম, তাই ভাবলাম রাতের খাবার হোটেলেই সেরে নেব। সন্ধ্যার একটু আগে নিচে নেমে এলাম বাইরের প্যাটিও থেকে সূর্যাস্ত দেখার জন্য। কিছুক্ষণের মধ্যে রক্তিম সূর্যটি ক্যারিবিয়ান উপসাগরে ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে গেল। নিমেষে সন্ধ্যা নেমে এল। রবি ঠাকুরের ভাষায় :
সন্ধ্যা আসিছে শান্তিময়ী তিমিরের তীরে
অসংখ্য প্রদীপজ্বালা এ বিশ্ব মন্দিরে
এলো অরতির বেলা।

ওয়েটারকে আমাদের খাবার বাইরের প্যাটিওতে দেওয়ার জন্য বললাম। খাবার শেষে যখন তৃপ্তির সঙ্গে কফি পান করছিলাম, তখন আমেরিকান এক দম্পতি আমাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় জিজ্ঞেস করল, সুফিয়ান না?
কী চিনতে পারছস? আমি ব্রস রেডবেক।
ইকুয়েডর সম্মেলনে দেখা হয়েছিল। খুব লজ্জা পেলাম। সত্যিই তো ব্রæস দম্পতিকে কি ভোলা যায়! এরা ইচ্ছা করলেই ফ্লোরিডায় বিলাসবহুল জীবনযাপন করতে পারত। কিন্তু তা না করে গত ১০ বছর হলো এরা এদের জীবন উৎসর্গ করেছে ইকুয়েডরের গ্রামে গ্রামে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে, নিজস্ব প্রচেষ্টায় এবং নিজের অর্থে। এ যুগে এমন দৃষ্টান্তের খুবই অভাব।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় আমার পরিবেশনা। তাই বৃহস্পতিবার রাতে একটু প্র্যাকটিস করে যখন ঘুমোতে যাব তখন নিউ ইয়র্ক থেকে কৌশিক আহমেদের টেলিফোন পেলাম :
সুফিয়ান ভাই, ৮ ডিসেম্বর আপনার জন্মদিন। আপনার জীবনীটা কি ছেপে দেব?
কিন্তু আমি তো এখন কলম্বিয়ার কার্টেহেনা শহরে। ইন্টারভিউয়ের সুযোগ নেই।
জানি। আমাদের আর্কাইভে আপনার যে বায়ো আর ছবি আছে তা-ই দিয়ে ছেপে দেব।
পরে ইন্টারনেটে বাঙালি পত্রিকা পড়ার সুযোগ হয়েছিল। বেশ সুন্দর হয়েছিল লেখাটি।
শুক্রবার সকালে ফুটপাতে নির্মিত ক্ষুদ্র জলাশয় ও বাগানের মাধ্যমে কীভাবে ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা কমানো ও এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা যায়, তার ওপর বক্তব্য রাখলাম। পরিবেশনাটি অংশগ্রহণকারীদের মাঝে খুব সাড়া জাগিয়েছিল। বহু প্রশ্ন পেলাম একই পদ্ধতিতে কলম্বিয়ার রাজধানী বোগটা শহরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ সম্ভব কি না।
শনিবার রাত, কলম্বিয়ায় আমাদের শেষ রাত। সাধারণত আমি ঘটা করে জন্মদিন উদ্্যাপন করি। এবার বিদেশ-বিভুঁইয়ে জন্মদিন, এমন সুযোগ হয়তো আর আসবে না। তাই হোটেলের রিসেপশনের মাধ্যমে পুরাতন শহরের বিখ্যাত ‘রেড লাইফ’ রেস্টুরেন্টে ডিনারের রিজার্ভেশন করলাম। ইচ্ছা ছিল খাঁটি স্থানীয় খাবার দিয়ে জন্মদিন উদ্্যাপন করব। এদের সবচেয়ে বিখ্যাত খাবারের নাম ‘সেভিচে (Ceviche)’ সালাদের অভিনব সংস্করণ। তবে খুবই সুস্বাদু। দ্বিতীয় খাবারটির নাম পোস্টা কালো কার্টহেনারা। নাম শুনে ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই।
এটা আসলে ‘বিফ স্টেক’Ñখুব কম তাপে অনেকক্ষণ ধরে সেদ্ধ করা হয়। শেষে বিশেষ কালো সস দিয়ে পরিবেশন করা হয়। দুটো খাবারই আমাদের খুব ভালো লেগেছিল।
এবার যাওয়ার পালা। ফিরে যেতে হবে গতানুগতিক সেই ৯টা-৫টার জীবনে। বিমানবন্দরে অপেক্ষাকালে পর্যালোচনা করছিলাম এই কদিনের ব্যতিক্রমী ঘটনার। আমার পরিবেশনার মূল বক্তব্য ছিল গ্রিন ইনফ্রাস্ট্রাকচারের মাধ্যমে ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা কমানো। একই পদ্ধতিতে নিউ ইয়র্ক শহরে বৃষ্টিপাতের প্রথম ১ ইঞ্চি বৃষ্টির পানি অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছে NYCDEP. ২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় (NRB) ইঞ্জিনিয়ার প্রথম সম্মেলন হবে। সেখানে আমাকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে আমার বক্তব্য শোনার জন্য ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মেয়র প্রার্থীসহ অনেকে উপস্থিত থাকবেন। দেখা যাক কোথাকার পানি কোথায় গড়ায়।
আরেকটি বিষয় বেশ কিছুদিন হলো আমার মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। অধুনা সম্পন্ন এই সম্মানিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন ভবিষ্যতে ঢাকায় করা যায় কি না। এতে বাংলাদেশের সম্মান অনেক বেড়ে যাবে। এ নিয়ে ডাইরেক্টর ব্রায়ান পারসন্সের সঙ্গে কথাও বলেছি। ওরা রাজি, তবে আমাদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে। এ জন্য দরকার সরকারের সহযোগিতা এবং স্থানীয় প্রকৌশল সংস্থাগুলোর অংশগ্রহণ। ইতিমধ্যে সরকার ও স্থানীয় প্রকৌশল সংস্থাগুলো থেকে যথেষ্ট আশ্বাস পেয়েছি। এখন দেখা যাক স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উৎসবে ২০২১ সালে এই সম্মানীয় সম্মেলনটি ঢাকায় আনা সম্ভব হয় কি না।
ড. সুফিয়ান খন্দকার : বিশ্বের বৃহত্তম ডিজাইন ও কনসাল্টিং ফার্ম ‘আরকেডাস’-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও টেকনোলজি ডাইরেক্টর।