
হাসান সোহেল : এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ; এগিয়ে যাচ্ছে দেশের অর্থনীতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্ব ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিশ্বের দেশে দেশে শ্রম বাজারের পাশাপাশি বাংলাদেশের উৎপাদিত পণ্যের বাজার খুলে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব। প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় দীর্ঘ চার বছর বন্ধ থাকার পর আমিরাতের শ্রমবাজার খুলে যাচ্ছে। বড় বিনিয়োগেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার, রাতে আবুধাবিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাথে মত বিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, আরব আমিরাত সফর সফল। বিনিয়োগে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। এদিকে সৌদি সরকারও বাংলাদেশে বিপুল অর্থ বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। চীন, আমেরিকা, ইউরোপের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়িয়ে দিচ্ছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে উৎপাদিত ও তৈরি নতুন নতুন পণ্যের বাজার সৃষ্টির ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক প্রচেষ্টায় কার্যত বাংলাদেশের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, দেশের কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের বিদেশে বাজার সৃষ্টিসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে নিজেই কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছেন শেখ হাসিনা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি সুবিধা স্থাগিত, ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিএসপি নিয়ে সংকটের কারণে কয়েক মাস আগে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের দেশে দেশে বাংলাদেশি পণ্যের বিকল্প বাজার খোঁজার উদ্যোগ নেন। একাগ্র দেশপ্রেম ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তিনি সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বিনিয়োগকারীরা এখন নতুন নতুন বিনিয়োগে বাংলাদেশমুখী হয়ে পড়ছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট, দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এছাড়াও সে দেশের আরো কয়েকজন মন্ত্রী ও শিল্পপতির সঙ্গে বৈঠক করেন।
কয়েক মাস আগে তিনি সৌদি আরব সফরে গিয়ে প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের সাথে বৈঠক করেন। এসব বৈঠকের ফসল হচ্ছে বাংলাদেশে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশগুলোর নতুন নতুন বিনিয়োগের উদ্যোগ।
এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার পর এবার মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে বড় অঙ্কের বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চলছে। শ্রমশক্তির পাশাপাশি আরব বিশ্বে পণ্য ও সেবা রফতানি বাড়ানোর সুযোগ চেয়েছে বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় টানা তৃতীয়বারের মতো দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানি হয়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমিরাত সফর করেন।
অপরদিকে বাংলাদেশকে বিনিয়োগের নতুন গন্তব্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। পাশাপাশি শ্রমবাজার নিয়ে বাংলাদেশের আগ্রহকেও গুরুত্বের সঙ্গে তারা বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে।
এদিকে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে সৌদি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসছে। ওই সফরে ত্রিশটিরও বেশি প্রকল্পে কয়েকশ কোটি ডলার সৌদি বিনিয়োগ আশা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সর্ম্পক দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের অর্থনীতিতে অভাবনীয় পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ হিসেবে তারা বলেন, রেমিটেন্স আয়ের বৃহৎ অংশই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে আসে। দীর্ঘ চার বছর আমিরাতে বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ বন্ধ থাকার পর শ্রমবাজার উন্মুক্তকরণের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেয়া বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সাফল্য। জনশক্তি রফতানি শুরু হলে এর মাধ্যমে রেমিটেন্স আয়ের বড় সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। এছাড়া বাংলাদেশের হালাল পণ্য, বিশেষ করে মাছ, শাক-সবজি ও গরু-খাসির মাংস নিতে চায় সৌদি আরব। নতুন বাজার অনুসন্ধান ও নতুন নতুন পণ্য রফতানিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বড় ফ্যাক্টর হয়ে ওঠার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
একই সঙ্গে মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকান্ড যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে; বিদেশি বিনিয়োগ অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি অনেক প্রভাবশালী দেশকে ছাড়িয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।