মহাস্থানগড়ে প্রত্নস্থান খনন : ১৩ শ বছর আগের মন্দিরের সন্ধান

বগুড়া : বগুড়ার মহাস্থানগড়ের বৈরাগীর ভিটায় এবারের প্রতœতাত্ত্বিক খননে এক হাজার ৩০০ বছর আগের পাল আমলের মন্দিরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর সময়কাল ধরা হয়েছে ৭০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে।
এ ছাড়া গুপ্ত আমলের কিছু অবকাঠামো উন্মোচিত হয়েছে। সেই সঙ্গে খ্রিস্টপূর্ব সময়ের সমৃদ্ধ প্রতœসামগ্রীও পাওয়া গেছে।
প্রায় আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন নগরী ও প্রতœতাত্ত্বিক স্থান মহাস্থানগড়ে খননকালে এসব নিদর্শনের সন্ধান মেলে। গত ১০ ডিসেম্বর থেকে খননকাজ শুরু হয়। দুই মাস ধরে চলে খনন। তবে মাঝে শীত তীব্র হওয়ায় খননকাজ কিছুটা দীর্ঘায়িত হয়েছে।
আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন দুর্গনগরী মহাস্থানগড়ের মাঝামাঝি এলাকা লইয়েরকুড়ির (ফ্রান্স মাঠ) উত্তর-পশ্চিম কোণে ও মহাস্থান জাদুঘর থেকে কয়েক শ গজ দক্ষিণে বৈরাগীর ভিটা অবস্থিত। সেখানেই এবার প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের নিজস্ব অর্থায়নে খননকাজ শুরু হয়।
খননকাজে নিযুক্ত ছয় সদস্যের দলের ফিল্ড ডাইরেক্টর ছিলেন প্রতœতত্ত্ব বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানা। এ ছাড়া দলনেতা হিসেবে ছিলেন মহাস্থান জাদুঘরের সহকারী পরিচালক মুজিবুর রহমান। দলে অন্যদের মধ্যে রয়েছেন সহকারী কাস্টডিয়ান এস এম হাসনাত বিন ইসলাম, সিনিয়র ড্রাফটম্যান আফজাল হোসেন, ফটোগ্রাফার আবুল কালাম আজাদ ও সার্ভেয়ার লোকমান হোসেন।
মহাস্থান জাদুঘরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক মুজিবুর রহমান জানান, এবারের খননকালে এক হাজার ৩০০ বছর আগের মন্দিরে সন্ধান পাওয়া গেছে, যার সময়কাল ধরা হয়েছে ৭০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে। এ ছাড়া গুপ্ত আমলের কিছু অবকাঠামো আবিষ্কৃত হয়েছে। সেগুলো নিয়ে এখন গবেষণা চলছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে খননকাজ শেষের দিকে। এসব খননস্থান সবার জন্য উন্মুক্ত রাখার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, এবারের খননকালে স্থাপত্যশৈলীর পাশাপাশি বেশ কিছু প্রতœবস্তুর সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে রয়েছে সুঙ্গযুগীয় টালির (টাইলস) ভগ্নাংশ, উত্তরাঞ্চলীয় উজ্জ্বল চকচকে কালো মৃৎপাত্র (এনবিপিডাব্লিউ), বিভিন্ন যুগের মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ, পোড়া মাটির বাটি, পোড়া মাটির গুটিকা, পোড়া মাটির ছিদ্রযুক্ত গুটিকা, পাথরের গুটিকা ও কাচের গুটিকা।
উদ্ধার হওয়া এসব প্রতœবস্তু মহাস্থান জাদুঘরের গবেষণাগারে নিয়ে পরিচ্ছন্ন করার পাশাপাশি নকশা তৈরি ও ভগ্নাংশগুলো জোড়া দেওয়ার কাজ করা হচ্ছে।
বৈরাগীর ভিটা খনন করে এর আগেও গুপ্ত আমলে তৈরি করা প্রাচীন ইটের দেয়াল পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া কাচের গুটিকা, মাছ ধরার জালে ব্যবহারের জন্য তৈরি পোড়া মাটির বল, ফুলাঙ্কিত ও পিরামিড আকারের নকশা করা ইট উদ্ধার করা হয়।