মাই লাইয়ে মার্কিন গণহত্যার অর্ধশত বার্ষিকী পালন

বিশ্বচরাচর ডেস্ক : ভিয়েতনামের মাই লাইয়ে গণহত্যার অর্ধশত বার্ষিকী উপলক্ষে গত ১৬ মার্চ গণহত্যাস্থলে এক স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে হত্যার শিকার ব্যক্তিদের পরিবার-পরিজন, ওই হামলার সময় বেঁচে যাওয়া লোকজন, ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ৬০ জন প্রবীণ মার্কিন সেনা ও প্রবীণ যুদ্ধবিরোধী কর্মীরা এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

১৯৬৪ সালের ১৬ মার্চ ভিয়েতনামের মধ্যাঞ্চলের উপকূল ও পার্বত্যাঞ্চল সন মাইয়ে মার্কিন সেনারা ৫০৪ জন ভিয়েতনামিকে হত্যা করে। পাশ্চাত্যে এ ঘটনা মাই লাই গণহত্যা বলে পরিচিত।

স্মরণ অনুষ্ঠানে কুয়াং নগাই প্রদেশের পিপলস কমিটির উপপ্রধান ডাং নগোক ডুং বলেন, ‘শান্তির পর আমরা দেশকে পুনর্গঠিত করেছি। সন মাইয়ের জনগণ ওই বেদনা কাটিয়ে উঠে ক্ষমা করে দিয়েছে এবং তারা আন্তরিক মার্কিন প্রবীণ সেনাদের স্বাগত জানাতে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এ স্থানটি হলো তাদের সত্যের মুখোমুখি হওয়ার জায়গা।’ গণহত্যার সময় বেঁচে যাওয়া লোকেরা রয়টার্সকে বলেন, হত্যাকা-ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চারদিক আঁধার ও নিস্তব্ধতায় ছেয়ে যায়। আমরা মৃতদের কবর দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। আমরা আশঙ্কা করছিলাম, আমেরিকানরা আবারো হামলা চালাতে পারে।

ভিয়েতনামে মার্কিন যুদ্ধাপরাধের সবচেয়ে খারাপ নজির হচ্ছে মাই লাইয়ের গণহত্যা। কিন্তু মার্কিন-ভিয়েতনাম সম্পর্ক উষ্ণ হওয়ার কারণে ঘটনাস্থলে নিহতের এ স্মরণ অনুষ্ঠান কিছুটা নমনীয় ছিল।

মাই লাইয়ের কাছে অবস্থিত ডানাং বন্দরে মার্কিন বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজের ঐতিহাসিক সফরের মাত্র এক সপ্তাহ পর এ দিবসটি স্মরণ করা হচ্ছে। এ ঘটনা দুই সাবেক শত্রুর মধ্যে সম্পর্ক উষ্ণ হওয়ার ইঙ্গিত প্রকাশ পেয়েছে। মার্কিন ভিয়েতনাম যুন্দ্র প্রবীণ সেনা ও যুদ্ধবিরোধীদের প্রতিনিধিদল স্মরণ অনুষ্ঠানের পর একটি ছোট কক্ষে ঘরোয়াভাবে ডুং ও অন্যান্য ভিয়েতনামি কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাৎ করেন। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জানান, তারা এ গণহত্যার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ক্ষমা চেয়ে একটি চিঠি পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ভেটার্ন্স ফর পিসের ভাইস প্রেসিডেন্ট চুক সিয়ার্সি বলেন, অল্প সময়ে ছয় শ’রও বেশি লোক চিঠিটিতে স্বাক্ষর করেছেন। তিনি বলেন, ‘এতে আমেরিকানদের গভীর অনুশোচনা, অনুতাপ ও দুঃখ এবং যা ঘটেছে সে জন্য আমাদের দায় থাকার কথা প্রকাশ পেয়েছে।’