মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয় কেবল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : পিএমও প্রেস উইং

ঠিকানা অনলাইন : আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয় কেবল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে। কারণ, আমরা মানুষের জন্য কাজ করি।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যে নেমে আসে কালো মেঘ।

আজ ১৫ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকালে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহিলা লীগের সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ১ কোটি ২৩ লক্ষ ভূয়া ভোট নিয়ে ২০০৬ সালে খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে গেল। তখন বাংলাদেশের মানুষ সেই ভোট মানেনি। সাংবাদিকরা ভুলে গেছেন, ২০০১ সালে দক্ষিণাঞ্চলে কোনো সাংবাদিক ঢুকতেই পারতেন না। সে অঞ্চলে তাণ্ডব চলেছিল।

২০০৮ সালের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ নির্বাচনে নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি। জাতীয় আন্তর্জাতিক কোনো ভাবে কি, ওই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওঠেনি। সেই নির্বাচনের ফলাফল অনেকেই ভুলে গেছেন। ৩০০ সিটের নির্বাচনে বিএনপি তখন কয়টা সিট পেয়েছিল? বিএনপি নেতারাই হয়তো ভুলে গেছে। মাত্র ৩০টা সিট পেয়েছিল বিএনপি। জাতীয় পার্টি পায় ২৭টি সিট। ৩টা সিট বেশি ছিল বলে খালেদা লিডার অব দ্যা অপজিশন হয়েছিল। জাতীয় পাটি যদি আর ৩-৪টা সিট পেত তাহলে খালেদা জিয়া লিডার অব অপজিশন হতে পারত না। এটা হলো বাস্তবতা। বিএনপি নেতাদের জিজ্ঞেস করুন, এতো যে লাফালাফি কিসের জন্য? ২০০৮ নির্বাচনে তো এই রেজাল্ট।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, যুব মহিলা লীগ করার পর থেকে আমি দেখেছি আমাদের যুব মহিলা লীগ সাহসী ভূমিকা নিয়েছে, রাস্তায় নেমেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রথমবার নারী উন্নয়ন নীতিমালা করলাম। ২০০১-এ বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেটা প্রথমে স্থগিত করে দিলো এবং এমন কতগুলো পরিবর্তন নিয়ে এলো যে, নারীদের কোনো ক্ষমতাই থাকে না। ২০০১ এর নির্বাচনের পর আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর কারো চোখ তুলে নিয়েছে, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে হাড় গুঁড়ো করে দিয়েছে, জেলে নিয়ে গেছে, একেকটা নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শত শত মামলা দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে এ দেশে নারীদের ওপর অত্যাচার করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে, অগ্নি সংযোগ করেছে, বিএনপি জামায়াতকে নিয়ে যখন ক্ষমতায় এলো মনে হলো সেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, সেই অত্যাচার-গণহত্যারই যেন পুনরাবৃত্তি।

সরকারপ্রধান বলেন, ৬ বছরের ছোট্ট শিশু রাজুফা থেকে শুরু করে ৬০ বছরের বৃদ্ধাও তাদের কাছ থেকে রেহাই পায়নি। কত মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। নির্যাতনের ফলে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। আমি যতদূর পেরেছি তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। মেয়েদের ওপর তাদের জুলুম-অত্যাচার ওই সময়ের ঘটনাগুলো যদি তুলনা করা হয় একাত্তরের ঘটনার সঙ্গে আমি কোনো তফাৎ দেখি না। কীভাবে তারা অত্যাচার করেছে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ অফিসে যেতে পারতাম না। রাজনীতি করার সুযোগ ছিল না। যুব মহিলা লীগ করার পর সব বাধা অতিক্রম করে আমার এই মেয়েরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছে। এই মেয়েদের কিন্তু ওরা ছাড়েনি! একদিকে পুলিশ বাহিনী, আরেকদিকে ছাত্রদল। অকথ্য নির্যাতন করেছে আমাদের মেয়েদের ওপর। তারা যে অত্যাচার করেছে, আমরা কিন্তু তার কিছুই তাদের ওপর করিনি। আমরা প্রতিশোধ নিতে যাইনি, দেশের উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দিয়েছি। বিএনপি মানেই হচ্ছে অত্যাচার-নির্যাতন, দুঃশাসন, লুটপাট, দুর্নীতি জঙ্গিবাদ, বাংলা ভাই।

যুব মহিলা লীগের নেত্রীদের বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইটি পড়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই বইটিতে বঙ্গবন্ধু নারীর ক্ষমতায়ন তুলে ধরেছেন। বিএনপি-জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে যুব মহিলা লীগের আন্দোলনের প্রশংসা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

ঠিকানা/এসআর