মিরাজ-বীরত্বে ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

ছবি সংগৃহীত

ঠিকানা অনলাইন : আরেকটা শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই। আবারও স্নায়ুক্ষয়ী সব মুহূর্ত পেরিয়ে লড়াইটা জিতেছে বাংলাদেশই। ৭ ডিসেম্বর বুধবার মিরপুরে ভারতকে ৫ রানে হারিয়ে ১ ম্যাচ হাতে রেখে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ২০ রান। আর শেষ বলে ৬ রান। মোস্তাফিজুর রহমানের ওভারে সেই সমীকরণটাও সহজ করে এনেছিলেন রোহিত শর্মা। ষষ্ঠ বলে একটি ছক্কা হলেই সিরিজ সমতায় ফিরতে পারত ভারত। তবে সেটা আর হয়ে ওঠেনি। রোহিত সিঙ্গেল নিলে ৫ রানের জয়ে সিরিজ জয়ও নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। যে জয়ের ভিতটা গড়ে দিয়েছিল মেহেদী হাসান মিরাজের অনবদ্য এক শতক।

মিরপুরে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ শুরুতেই পড়েছিল ব্যাটিং বিপর্যয়ে। মিরাজ আটে নেমে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ১৪৮ রানের জুটিতে দলকে এনে দিয়েছিলেন লড়াকু পুঁজি। তিনি নিজেও হাঁকিয়েছিলেন শতক। পরে বল হাতেও নিয়েছেন দুই উইকেট। ব্যাটে-বলে সমান বীরত্ব দেখিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা। সঙ্গে দলকে এনে দিয়েছেন জয়।

মিরাজ নিজের নামের সামর্থ্য প্রমাণ করেছেন সিরিজের প্রথম ম্যাচেই। খাদের কিনারা থেকে দলকে টেনে তুলেছেন। ৩৮ রানের ছোট তবে কার্যকর এক ইনিংস খেলে টাইগারদের জিতিয়েছিলেন ১ উইকেটে। আজ আবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ পড়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে। ১৯ ওভারে মাত্র ৬৯ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারানো লাল-সবুজদের জন্য ত্রাতা হয়ে আসেন মিরাজ-মাহমুদউল্লাহ। তাতে ভারতকে ২৭২ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় বাংলাদেশ।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই ভারত হারায় টপ অর্ডারের অন্যতম ভরসা বিরাট কোহলিকে। শিখর ধাওয়ান, লুকেশ রাহুল ও ওয়াশিংটন সুন্দর সবাই টাইগার বোলারদের তোপে নাজেহাল হয়েছেন। দ্রুত চার উইকেট হারানো ভারতের ত্রাতা হয়ে আসেন শ্রেয়াস আইয়ার ও অস্কার প্যাটেল। দুজনে মিলে গড়েন ১০৭ রানের জুটি।

শ্রেয়াস যখন টাইগার বোলারদের পেটাচ্ছিলেন, তখন চুপ হয়ে ছিল শের-ই-বাংলা। সেটিই গর্জে ওঠে যখন আইয়ারকে ফেরান মিরাজ! সেই ওভারেই একটি ছয় মেরেছিলেন, আবার তুলে মারতে গিয়েছিলেন ক্রিজের একটু বাইরে এসে। তবে যেভাবে চেয়েছিলেন, টাইমিংটা সেভাবে হয়নি। ডিপ মিড উইকেটে ভুল করেননি আফিফ হোসেন। শ্রেয়াস থেমেছেন ৮২ রান করে। আইয়ারের বিদায়ের পর প্যাটেল তুলে নেন অর্ধশতক। তবে বেশিক্ষণ টিকে থাকেননি। ইবাদতের শর্ট লেংথের বলে আগেভাগেই শট খেলে ফেলে কাভারে ক্যাচ তোলেন অস্কার, সেটাই লুফে নেন সাকিব। ফেরেন ৫৬ বলে ৫৬ রান করে।

তাদের বিদায়ের পর শার্দূল ঠাকুরকে সাকিব ও দীপক চাহারকে ইবাদত ফেরান দ্রুত। জয়ের জন্য ভারতের ৪৪ বলে প্রয়োজন ৬৫ রান। তখনই ক্রিজে নামেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। খেলেন দুর্দান্ত এক ইনিংস। ২৮ বলে তিন চার ও পাঁচ ছক্কায় ৫২ রান করে দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন জয়ের প্রান্তে। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল মাত্র ৬ রানের। আগের বলেই মোস্তাফিজকে ছক্কা মেরে ব্যবধান কমিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে।

রোহিত যখন সিঙ্গেল নিয়ে ফেরার পথ ধরছিলেন, তখন খেলোয়াড়রা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। রোহিতের ঝড় থামিয়ে দিয়ে যে বাংলাদেশ সিরিজটাই জিতে নিয়েছে। তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি হবে আগামী ১০ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে।

ঠিকানা/এনআই