বিশ্বচরাচর ডেস্ক : আন্তর্জাতিক মহলের চোখে ধুলো দিতে রোহিঙ্গা নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে সামরিক আদালত গঠন করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। গত ১৮ মার্চ দেশটির সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হদ্মাইং নিজের ওয়েবসাইটে সামরিক আদালত গঠনের কথা জানান। এদিকে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ওপর জোর দিয়েছেন সুরক্ষাবিষয়ক সহকারী জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনার ভলকার তুর্ক।
মিয়ানমার সেনাপ্রধানের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে বলা হয়, একজন মেজর জেনারেল ও দুজন কর্নেলের সমন্বয়ে সামরিক আদালত গঠন করা হয়েছে। রাখাইন রাজ্যে ২০১৭ সালের আগস্টে চালানো অভিযানের সময় সেনা আচরণের লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা তদন্ত করা হবে। জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ওই অভিযানে নির্বিচার হত্যা, গণধর্ষণ ও গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার যেসব অভিযোগ করে আসছে এই তদন্ত আদালত তাও খতিয়ে দেখবে।
রোহিঙ্গাদের নির্বিচার হত্যা, গণধর্ষণ, নির্যাতন ও গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার মতো অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার। দেশটির সেনাবাহিনীর এক তদন্তেও বলা হয়, রাখাইনে অভিযানকালে তাদের সদস্যরা কোনো ধরনের অপরাধ করেনি। গত মাসে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সেনাপ্রধান অবশ্য বলতে বাধ্য হন, কিছু নিরাপত্তা সদস্য হয়তো অপরাধে যুক্ত থাকতে পারে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক পরিচালক নিকোলাস বাকেলিন বলেন, স্রেফ আন্তর্জাতিক চাপ মোকাবেলা করতে সেনাবাহিনী এই নতুন আদালত গঠন করেছে। একে কোনোভাবেই বিশ্বাস করা চলে না। আন্তর্জাতিক আইনের চোখে সবচেয়ে নিকৃষ্ট অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। তারা নিজেরাই তদন্ত করবে এবং ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করবে, তা আশা করা বাতুলতা। রাখাইনে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানে সেনাবাহিনী যে নৃশংসতা চালিয়েছে তাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের বড় উদাহরণ বলে মনে করে জাতিসংঘ।