মৃত্তিকাসুন্দর

আশরাফ হাসান :

কী জাদুর মতো আমারে বারবার করো বিহ্বল
কী আছে তোমার কাছে বলো
কার মায়াবিস্তারে তুমি বিস্তৃত বিশাল
তোমার সোঁদাগন্ধের কাছে আমি ফিরে আসি বারবার।
মায়ের কষ্টের মতোন তোমারও কি আছে পরিপাটি বেদনা
প্রসবব্যথার ন্যায় আকণ্ঠ সৃষ্টির আনন্দঘোর
কী মমতায় বিছিয়ে রেখেছ মৃত্তিকার কোল।

তোমারও কি সহিষ্ণুতা মায়েদের মতো
তাবত যন্ত্রণারে কি তুমিও পুষো
বাবাদের মতো না-সওয়া দহনে জ্বলো নিশিদিন
বহনে সহনে তুমিও কি পুষে রাখো আত্মায় অসম প্রেম
প্রেমিক চাতকের মতো তুমিও কি মেঘেরে ডাকো?

এই যে তোমার বুকে এত কেমিক্যাল চাষ
আণবিক অত্যাচারে তুমি যেন বন্ধ্যা নারী
বারুদবাষ্প ঝাঁঝালো বাতাসের হুল
এই যে এত এত মজলুমের বিদগ্ধ নিঃশ্বাস
আপন নীড়ের অন্বেষায় উড়ে চলা সারসের মতো
এই যে এত এত প্রেমিকের অশ্রুচাষ
তোমার ভাপ-সওয়া রোদপোড়া দুপুরের ন্যায়
অপার উষ্ণতা ধারণ করা বুক
এত জল সুনামি সাইক্লোন নদীর ভাঙন
সমুদ্রের রুদ্ররোষ উত্তাল ফেনিল জলজ হুংকার
কী করে সহো, কী সাহসের নামতা তোমার?

এই যে চিলের দুরন্ত ডানা
এত এত পাখির শাবক, দুধের স্বাদ থেকে
তুলে আনে হাওয়ায় শূন্যতায় নিষ্ঠুর চঙ্গলে
শ্যেন অক্ষিরে বিছিয়ে রাখে তোমার মৃন্ময়ী কোলে
কী করে বাঁধো বুক, ভাসাও বুক বিশুষ্ক কান্নার জলে।

তোমার বক্ষপাঁজর খুলে আমারে দেখাও
দেখাও বুকের বোতাম খুলে হে মৃত্তিকাসুন্দর।