
রাজধানী ডেস্ক : একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কারাবন্দী আসামি উজ্জ্বলকে মুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। পলাতক হুজি সদস্য আব্দুর রহমান মাদানীর পরিকল্পনায় উজ্জ¦লকে যে কোনো উপায়ে গাজীপুরের হাইসিকিউরিটি জেল থেকে মুক্ত করা হতো। এজন্য সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অর্থ সংগ্রহে ডাকাতিসহ অপরাধমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি)। সংগঠনটির দুই জঙ্গিসহ ডাকাত দলের ১৪ সদস্যকে গ্রেফতারের পর গত ৪ মার্চ এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কর্মকর্তারা। গত ৩ মার্চ রাতে ব্যাংক ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়ার সময় রাজধানীর ধোলাইপাড় ও রামপুরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গত ৪ মার্চ দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন বলেন, ডাকাত দলের সদস্যরা ধোলাইপাড় মোড়ের একটি ব্যাংকের নিরাপত্তা কর্মীদের জিম্মি করে ডাকাতির উদ্দেশে পিকআপ ভ্যান ও অস্ত্রশস্ত্রসহ জড়ো হয়েছিল বলে স্বীকার করেছে। এর আগে তারা ঢাকার কদমতলী, রামপুরা, সাভার, ময়মনসিংহ, মুন্সীগঞ্জ, যশোর, ফেনী ও কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসায়িক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৯টির বেশি ডাকাতি করেছে। এভাবে তারা প্রায় পাঁচ কোটি টাকা (নগদ অর্থ ও মালপত্র) লুট করে। গত ১৩ জানুয়ারি ময়মনসিংহের ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানিতে ডাকাতির চেষ্টা চালায়। এ সময় সেখানে পুলিশ উপস্থিত হলে তারা গুলি চালায়। ওই ঘটনায় পুলিশের এক সদস্য বুকে গুলিবিদ্ধ হন। তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়ে সেদেশে জেলও খেটেছে।
গ্রেফতারের পর তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে আতিকুর রহমান জানায়, তার রামপুরার বাসায় আরও আগ্নেয়াস্ত্র আছে। তখন তাকে নিয়ে রামপুরার বাসায় যান ডিবি সদস্যরা। এ সময় সেখান থেকে হুজির দুই সক্রিয় সদস্য হাফিজ ওরফে খালিদ ও মামুনুর রশিদ ওরফে বাচ্চু মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি পয়েন্ট ২২ বোরের রাইফেল, একটি পাইপ গান, আট রাউন্ড গুলি, উগ্রপন্থী বই, ১০ কেজি গান পাউডার ও সাড়ে তিন লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
হুজির দুই সদস্য প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত জঙ্গি উজ্জ্বলের নির্দেশনা এবং আবদুর রহমান মাদানীসহ অপর পলাতক আসামিদের সহায়তায় তারা সংগঠন পরিচালনার জন্য অস্ত্র-বিস্ফোরক নিজেদের কাছে রেখেছিল। একটি নতুন জঙ্গি দল গঠন করে গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে থাকা উজ্জ¦লকে যে কোনো উপায়ে মুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল তাদের।