ঠিকানা ডেস্ক : সবাই মারা গেছেন ১১৪০-১১৮০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে। দীর্ঘকাল ধরে চলা ভয়াবহ কোনো সংঘাতের ফলেই মৃত্যু হয়েছে তাদের। কিন্তু কেনই বা বাধবে এমন সংঘাত যা একটি জাতিকেই পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দেয়?
কলোরাডোর মেসা ভার্দ অঞ্চল। বারো শতকের কথা। ওই শতকের মাঝামাঝিতেও মেস ভার্দের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ছিল প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বসবাস। কিন্তু মাত্র তিন দশক সময়ের ব্যবধানে ৪০ হাজার থেকে এ সংখ্যাটি নেমে আসে একেবারে শূন্যের কোঠায়। অর্থাৎ ৩০ বছরের মধ্যে এ অঞ্চলে বাস করা প্রায় সবাই মারা গেছেন। কিন্তু কীভাবে এবং কেন ঘটেছিল এমন ঘটনা?
মেসা ভার্দ অঞ্চলে প্রতœতত্ত্ববিদেরা যেসব কঙ্কাল খুঁজে পেয়েছেন, সেগুলোর শতকরা প্রায় ৯০ ভাগেরই মাথা কিংবা হাতে আঘাতের চিহ্ন ছিল। আর তাদের সবাই মারা গেছেন ১১৪০-১১৮০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, দীর্ঘকাল ধরে চলা ভয়াবহ কোনো সংঘাতের ফলেই মৃত্যু হয়েছে তাদের। কিন্তু কেনই বা বাধবে এমন সংঘাত যা একটি জাতিকেই পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দেয়? বিশেষ করে এ অঞ্চলটির দক্ষিণে অবস্থিত রিও গ্রান্দের মানুষের সুখে-শান্তিতে বসবাসের ইতিহাস প্রতœতত্ত্ববিদদের আরও কৌতূহলী করে তোলে।
প্রতœতত্ত্ববিদ টিম কোহ্লারের মতে, রিও গ্রান্দের অধিবাসীরা সেই সময়ে ‘সব কাজের কাজি’ হওয়ার নীতি বাদ দিয়ে একেকজন একেক কাজে পারদর্শী হয়ে উঠেছিলেন। কেউ মাছ ধরতেন, কেউ শিকার করতেন, কেউবা কাপড় বুনতেন। এলাকার সবাই এভাবে একে অপরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছিলেন। মূলত একে অপরের ওপর এমন বাণিজ্যিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে যাওয়াই তাদের সংঘাতে জড়ানো থেকে বিরত রেখেছিল। কিন্তু ব্যতিক্রম ব্যাপার ঘটে মেসা ভার্দের অধিবাসীদের বেলায়। তাদের মাঝে এমন বাণিজ্যিক আন্তঃসম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। ফলে সবাই নিজেদের স্বার্থোদ্ধারের চিন্তাতেই মশগুল থাকতেন। এরই ফলে ঘটেছিল অমন ভয়াবহ সংঘর্ষ। অবশ্য এটা টিম কোহ্লারের অনুমান মাত্র। সত্য ঘটনা হয়তো আর কোনোদিনই জানা যাবে না।