ঠিকানা রিপোর্ট : পবিত্র কোরআন ও হাদিস শরিফে বর্ণিত প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর মহাপবিত্র শুভাগমন সকল ঈদের সেরা ঈদ। ঈদে নুজুলুন্নবী ১২ রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) উদ্যাপন উপলক্ষে গত ৮ নভেম্বও রোববার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটের পালকি পার্টি হলে বাদ মাগরিব থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত (শেষের পাতার পর)
ইউএসএর উদ্যোগে জশ্নে ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
মাহফিলের শুরু পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করেন হাফেজ মাওলানা ওয়াসিম সিদ্দিকী ও না’ত শরিফ পাঠ করেন মুহাম্মদ ওমর ফারুক। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুর রহীম মাহমুদের সভাপতিত্বে ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ওয়াসিম সিদ্দিকীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মাহফিলে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি আনসারুল করিম আজহারী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর কার্যকরী সভাপতি সৈয়দ হেলাল মাহমুদ, মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ওয়াসিম সিদ্দিকী, সহসভাপতি মাওলানা আনোয়ারুল হক কাদেরী, মুহাম্মদ আক্তার হোসেন, কাজী সাইদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ দিদার ও মুহাম্মদ ওমর ফারুক, উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা মীর মশিউর রহমান, আবু তালেব চৌধুরী চান্দু, জয়নাল আবেদীন ও মাহফুজুল বারী প্রমুখ।
মাহফিলে বিশিষ্টজনের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা মুহাম্মদ নাজিম, গিয়াস আহমেদ, নাজের উদ্দীন, হাবিব আহসান, মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হোসাইন, এরশাদ ওয়ারেস, মাসুদ সিরাজী, মুহাম্মদ সেন্টু, ফয়েজ কবির, আব্দুল হালিম, মুহাম্মদ মালেক, মুহাম্মদ রবিন, খোকন চৌধুরী, এইচ রাসেল ও মনিরুজ্জামান প্রমুখ। মাহফিলের সহযোগিতায় ছিলেন মুহাম্মদ নাদের, শাহজাহান চৌধুরী, মজিবুর রহমান, মুহাম্মদ ইসহাক, মাহবুবুর রহমান, মুহাম্মদ আলী, নাসির আহমেদ, মইনুদ্দীন নাসের, জালাল আহমদ, নজরুল ইসলাম, মুুমিনুল হক, লাবলু সরকার, রুবেল মিয়া, সিরাজুল ইসলাম, মুস্তাক আহমেদ, শাহ সরফরাজ, দেওয়ান সরকার, রেজাউল হক চৌধুরী, মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন, মুহাম্মদ আলম, আবুল কাশেম, মুহাম্মদ রেজাউল আজাদ ভূঁইয়া, আবদুল মান্নান, হারুনুর রশীদ, মুহাম্মদ মাহবুব, তাইমুর অরোরা, সানাউল হক, ইবরার আহমেদ, ইসরার আহমেদ, রেজাউল হক, মাহবুব আলম, মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান, মুহাম্মদ কামাল, মামুন মোল্লা, জাহাঙ্গীর মোল্লা সানি, আলাউদ্দীন ফকির, ওহিদুল আলম, নাজমুল হাসান, লুৎফুর রহমান, মাহফুজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, মামুনুর রশীদ ও নাজমুল গনী।
মাহফিলে বিশিষ্ট আলেমবৃন্দ কোরআন সুন্নাহর আলোকে মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে এ উপলক্ষকে “ঈদ” হিসেবে পালনের জন্য সকল মুসলিমদেও প্রতি আহ্বান জানান। আলেমরা বলেন, মহান আল্লাহ তা’য়ালা কোরআন শরিফে তাঁর রহমত প্রকাশের উপলক্ষকে খুশির বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে খুশি উদ্যাপনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং মহান আল্লাহ তা’য়ালা প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনকে উম্মতের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ খুশির উপলক্ষ হিসেবে উল্লেখ করেন। সৃষ্টির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় উপলক্ষ সর্বশ্রেষ্ঠ নবীর পবিত্র শুভাগমন ঈদে নুজুলুন্নবী (স.)। প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনের সংবাদ আলোচিত এবং উদ্যাপিত হয়ে আসছে সর্বকালে। সকল নবীগণ তাঁদের বিশিষ্ট উম্মতদের মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনের সংবাদ দিয়েছেন এবং অনেক নবী তাঁর শুভাগমনের ঘোষণা দিয়েছেন যা কোরআন শরিফের অসংখ্য আয়াতে বর্ণিত রয়েছে। তাই যারা মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনকে ঈদ বা খুশি মনে করে না, তারা নিজেরা বিভ্রান্ত ও মূর্খ। আর যারা এই উপলক্ষ পালনকে বিদআত মনে করে ও তা প্রচার করে তারা পথভ্রষ্ট, নবীদ্রোহী ও উগ্রবাদী বাতেল ফেরকা খারেজী ওহাবীবাদের অনুসারী।

মাহফিলে আলেমরা বলেন, পবিত্র আহলে বায়াত ও সাহাবায়ে কেরাম মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমন ঈদে মিলাদুন্নবী উদ্যাপন করেছেন। যাঁরা মহান প্রিয় নবীর শুভাগমন ঈদ বা খুশি হিসেবে উদ্যাপন করে তারা মূলত প্রিয়নবীকে পেয়ে খুশি, প্রিয়নবীর উম্মত হওয়ার জন্য খুশি এবং প্রিয়নবীকে প্রাণের চেয়ে ভালোবাসার কারণে খুশি। এই পৃথিবীতে মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনের খুশি বা আনন্দের উপলক্ষ সকল ঈমানদারগণ সর্বযুগে পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উদ্যাপন করেছেন। বিশেষ করে ইসলামী সন গণনার জন্য অন্যতম নির্ণায়ক হিসেবে মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনকে অসংখ্য সাহাবাগণ প্রস্তাব করেন, যদিও প্রিয়নবীর প্রেমের আরেকটি উপলক্ষ পবিত্র হিজরতুন্নবী সাল গণনার জন্য প্রাধান্য পায়। হিজরতের স্মরণ ও নবীপ্রেমে নবীর শুভাগমনের ঈদ বা খুশি একাকার ও হিজরত প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমন ঈদে মিলাদুন্নবীর আনন্দের অংশমাত্র। অতএব ইসলামের ইতিহাসের সর্বকালে সকল দেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঈদে মিলাদুন্নবীর আনন্দ উদ্যাপিত হয়ে আসছে এবং অনন্তকাল তা হতে থাকবে।
মাহফিলে বক্তারা রাষ্ট্রীয়ভাবে সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের সকল দূতাবাসে রাষ্ট্রীয়ভাবে ঈদে মিলাদুন্নবী বাধ্যতামূলক পালনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি দাবি জানান। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর পক্ষ থেকে সবাইকে নবীপ্রেমে ইসলামের প্রকৃত ধারা আহলে সুন্নাতের পতাকায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুনিয়া ও আখেরাতের প্রকৃত মুক্তি ও সমৃদ্ধি অর্জনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সালাতু সালাম, কিয়াম, বিশেষ মুনাজাত ও তবারক বিতরণের মাধ্যমে জশ্নে ঈদে নুজুলুন্নবী (স.) তথা জশ্নে ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) মাহফিল সমাপ্ত হয়।