যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হলে তাদের ঔদ্ধত্য জাতিকে নষ্ট করে দেবে

ঠিকানার মুখোমুখি সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের প্রধান এ কে খন্দকার

সাঈদ- উর রব : সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের শীর্ষ নেতারা সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। সে সময় অর্থাৎ ২৪ মে ফোরামের আহবায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) এ কে খন্দকার ঠিকানাকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সাক্ষাৎকারে কেবলমাত্র তাদের চলমান আন্দোলনের ব্যাপারই স্থান পায়। এ কে খন্দকার সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সপক্ষে সারা বাংলাদেশ ও বহির্বিশ্বে যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে তার ফলে ক্ষমতায় গিয়ে বা ক্ষমতার বাইরে থেকে তারা এটিকে উপেক্ষার কোন সুযোগ আওয়ামী লীগ পাবে না। তিনি বলেন, বিএনপি এখনও এ আন্দোলনের প্রতি সাপোর্ট দেয়নি। সে জন্যে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। কেননা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে কেবলমাত্র যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হলে তাদের ঔদ্ধত্য জাতিকে নষ্ট করে দেবে তারাই অবস্থান নিতে পারে যারা এহেন অপকর্মে লিপ্ত ছিলো। সাক্ষাৎকারের বিবরণ এখানে প্রশ্নোত্তর আকারে উপস্থাপন করা হলো।
প্রশ্ন ঃ ১৯৭১ সালের মার্চের ঘটনাবলীর স্মৃতিচারণ করবেন কি?
উত্তর ঃ একাত্তরের পয়লা মার্চের আগেই আমার মনে হয়েছিল যে কোথায়ও একটা গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। বিশেষ করে বিজয়ী আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা দেয়া হবে কিনা-তা নিয়ে। কিংবা ন্যাশনাল এ্যাসেম্বলী আদৌ ডাকা হবে কিনা। ২১ এবং ২২ মার্চ থেকে আমি লক্ষ করতে আরম্ভ করলাম যে, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে উড়োজাহাজে করে প্রচুর সৈন্য-সামন্ত এবং বিপুল গোলাবারুদ আনা হচ্ছে। এর আগে মার্চের শুরুতেই যখন ন্যাশনাল এ্যাসেম্বলী স্থগিত করে দেয়া হলো তখন থেকেই যে আন্দোলন শুরু হয়ে গেল সে আন্দোলনের মধ্যেই এসব অস্ত্রশস্ত্র এবং সৈন্য আমদানীর ঘটনা পুরোদমে চলছিল। ২৫ মার্চ পাকিস্তান বাহিনী যে রকমভাবে আমাদের নিরীহ লোকজনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো সে সময়ই আমার মনে হয়েছে যে এ দেশ আর একত্র হয়ে থাকতে পারে না। পূর্ব পাকিস্তানীদের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানীদের যে মনোভাব বিরাজ করছিল তা আমাকেও বিক্ষুব্ধ করেছিল। সে সময়েই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে ওদের সাথে কমান্ডে আমি কাজ করবো না। এরপরই আমি মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করি। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসের বহুস্মৃতি রয়েছে। সে যুদ্ধটি ছিল সমগ্র জাতির যুদ্ধ, কোন একক সংগঠন বা গোষ্ঠির যুদ্ধ নয়, সমগ্র জাতি এতে অংশ নেয়। সামান্যসংখ্যক দেশদ্রোহী ছাড়া প্রতিটি মানুষ পরোক্ষভাবে কিংবা প্রত্যক্ষভাবে এ যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। যে সব বিশ্বাসঘাতক এবং দেশদ্রোহী মানুষ আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল তারা শুধু অবস্থানই নেয়নি, তারা শত্রুকে সর্বোতভাবে সাহায্য করেছে। এর ফলে আমাদের শত্রু এবং সেই সব বিশ্বাসঘাতক-বেঈমানরাও লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে। লক্ষ লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম লুক্তন করেছে। হাজার হাজার গ্রাম পুড়িয়ে ছারখার করেছে। হাজার হাজার বাড়ি-ঘর লুটপাট করেছে। তাদের এই যে অপরাধ এটা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অপরাধ, বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে অপরাধ। ওদের কোন ক্ষমা নেই। এজন্যেই আমরা সেক্টর কমান্ডাররা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে এদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন থামবে না।
প্রশ্ন : দু’নেত্রীকে গ্রেফতারের আয়োজনে প্রচলিত কোন প্রক্রিয়া অবলম্বন করেনি এ সরকার। এমনি অবস্থায় জরুরী আইনে অনেকের বিচারও হচ্ছে। অপরদিকে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের দাবির ব্যাপারে সরকারও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এটাকে আপনারা কীভাবে দেখেন? জাতিসংঘের সহায়তা চাচ্ছেন কেন?
উত্তর ঃ আমরা সর্বান্তকরণে আশা করছি যে এরা বিচার আরম্ভ করে যাবে। সেটি করলে তারা ইতিহাসে একটি স্থান পেয়ে যাবে। আমরা একটি কারণে জাতিসংঘের সাহায্য চেয়েছি বিচারের ব্যাপারে, সেটি হচ্ছে, জাতিসংঘ যদি সম্পৃক্ত হয় বিচারের সাথে তাহলে এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। আরেকটি ব্যাপার রয়েছে, জাতিসংঘ যদি সম্পৃক্ত হয় তাহলে পরবর্তিতে যে সরকারই আসুক না কেন বিচার প্রক্রিয়া আর বাতিল করতে পারবে না। প্রশ্নঃ বিচার প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘ সম্পৃক্ততার সম্ভাবনা আদৌ রয়েছে কি? উত্তর ঃ ইতিমধ্যেই আমাদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ডঃ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী জাতিসংঘে এসে মহাসচিব বান কি-মুনের সাথে আলাপ করেছেন। সেটি যথেষ্ট নয় বিধায় আমরা সরকারকে লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছি জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানানোর জন্য। প্রশ্নঃ সরকারের তরফ থেকে সে ধরনের আনুষ্ঠানিক আবেদন জানানো হয়েছে কি? উত্তর ঃ আমরা এখনও জানি না। প্রশ্নঃ কেয়ার টেকার সরকারের কাছে আপনারা দাবি জানিয়েছেন বিচার প্রক্রিয়া শুরুর জন্যে। কিন্তু সে ধরনের বিচার করার আইনগত বৈধতা তাদের আছে কি? উত্তর ঃ অবশ্যই বৈধতা রয়েছে। আমাদের সংবিধানে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম এ্যাক্ট ১৯৭৩ রয়েছে। সেটি এখনও বহাল রয়েছে সংবিধানে। প্রশ্নঃ এই সরকারের কোন বৈধতা রয়েছে কিনা? উত্তর ঃ কেন থাকবে না? তারা তো সবকিছু করছেন। সব কাজ করতে পারলে জাতির জন্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ কাজটি করতে পারবেন না কেন? আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের মানবাধিকারকে মহিমান্বিত করতে একাত্তরের এই ক্ষত দূর করতে হবে প্রতিটি বিবেকবান মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে।
প্রশ্ন : যে দেশে গণতন্ত্রই নেই, তেমন একটি দেশের সরকারের কাছে আপনারা এতবড় দাবি তুলছেন, এবং এ দাবি যারা উত্থাপন করছেন তাদের অনেকেই বিগত সরকারগুলোর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন, তাই এ নিয়ে মানুষের প্রশ্ন রয়েছে-ক’মাস আগেও যারা জয়বাংলা শ্লোগান তো দূরের কথা, জয় বাংলার কবর রচনা করতে পারলে যারা আনন্দিত হতো, তারা কেন হঠাৎ করে জয় বাংলা শ্লোগান দিচ্ছেন?
উত্তর : আমরা রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে একত্রিত হইনি, আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি এমন একটি কাজ করার জন্যে যাকে কোনভাবেই এড়িয়ে যাওয়া যাবে না, উপেক্ষারও অবকাশ নেই, জাতির জন্যে অত্যন্ত জরুরী একটি কাজ করার জন্য। এখন আমাদের মধ্যে হয়তো কেউ বামপন্থি, কেউ ডানপন্থি আবার কেউ চরম ডানপন্থিও থাকতে পারেন, কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারটা নিয়ে আমরা অভিন্ন মত পোষণ করছি। এখানে কোন দ্বিমত নেই। বাংলাদেশের মাটিতে মানবতার শত্রু, সভ্যতার দুশমনদের বিচার হতে হবে, বিচারে যে শাস্তি হয় তা তাদের ভোগ করতে হবে। প্রশ্নঃ আপনারা ডান-বাম যারা একত্রিত হয়েছেন তারা কী শুধু একটি ইস্যু নিয়েই কাজ করছেন? উত্তর ঃ ব্যক্তিগত রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণা আমাদের এ আন্দোলনে কোন প্রভাব ফেলবে না। রাজনীতি থাকবে যার যার অবস্থানে কিন্তু বিচার দাবিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছি, থাকবো। এ ব্যাপারে আমাদের মধ্যে কোন মতভেদ নেই। প্রশ্নঃ মার্কিন প্রশাসনের ব্যাপারে আপনাদের ধারণা কি? বিশেষ করে এ বিচার প্রক্রিয়ায়? উত্তর ঃ আমেরিকানরা মানবাধিকারকে অনেক উর্দ্ধে স্থান দেন। একাত্তরে আমাদের দেশে যে বর্বরতা সংঘটিত হয়েছে তা মানবাধিকারের পরিপন্থি ছিল। এজন্যে আমরা স্বাভাবিকভাবেই আশা করছি যে আমেরিকানদের সাপোর্ট পুরোপুরি পাবো বিচার প্রক্রিয়ায়। আমেরিকার মত প্রভাবশালী একটি দেশের সাপোর্ট পেলে বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করছি। প্রশ্নঃ এতদিন পর আপনারা এ ইস্যুতে একতাবদ্ধ হলেন-এর কারণ কি? একতাবদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে কোন মহলের বিশেষ কোন প্রভাব রয়েছে কি? উত্তর ঃ না, মোটেও নয়। আমরা নিজে থেকেই তা করছি। এছাড়া এ বয়সে আমাদের উপর কেউ প্রভাব খাটাতে পারে বলে মনে করছি না। প্রশ্নঃ দায়িত্ববোধ থেকেই এটা করেছেন? উত্তর ঃ অবশ্যই। দেশের প্রতি আমাদের সত্যিকারের কমিটমেন্ট থেকেই এটা শুরু করেছি। প্রশ্নঃ এর আগেও তো এ দাবি উঠেছিল। উত্তরঃ আগে বিভিন্ন জনে বিভিন্ন দেশে ছিলাম। জেনারেল শফিউল্লাহ্ও ছিলেন বিদেশে, আমি নিজেও বহুদিন বিদেশে ছিলাম। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম দুর্বার আন্দোলন গড়েছিলেন। তিনি ইন্তেকাল করার কারণে সেটি থমকে দাঁড়িয়েছিল। নব্বইয়ের পট পরিবর্তনের পর ৩টি সরকার এসেছে কিন্তু কেউই কোন উদ্যোগ নেয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিতদের যে ঔদ্ধত্য দেখলাম, তা জাতিকে নষ্ট করে দেবে, মুক্তিযুদ্ধের সুমহান ইতিহাস বিকৃত হবে, তখনই আমরা সোচ্চার হয়েছি ওদের বিচার করে শাস্তি দেয়ার জন্য। বিচার হতে হবে। বিচারে যে শাস্তি হবে তাও ওদের ভোগ করতে হবে। বিচারে যদি তারা মাফ পেয়ে যায় তাহলে সেটি ভিন্ন কথা। প্রশ্নঃ স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে জাতি বিভক্ত হয়ে রয়েছে। উত্তর ঃ জিয়াউর রহমান ছিলেন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের পাঠক। হঠাৎ করে একজন ব্যক্তি স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন, সে ঘোষণায় আপামর জনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বেন-এটা মনে করার কোন কারণ নেই। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সর্বপ্রথম পাঠ করেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতা হান্নান সাহেব।
প্রশ্ন : যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের এ আন্দোলনের সাথে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কি সম্পৃক্ত রয়েছে?
উত্তর : তারা সম্পূর্ণভাবে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন এ আন্দোলনে। বিএনপি ছাড়া কয়েকটি রাজনৈতিক দলও আমাদের এ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। বিএনপির সমর্থনের জন্যে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। কেননা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে কেবলমাত্র তারাই অবস্থান নিতে পারে যারা এহেন অপকর্মে লিপ্ত ছিলো। আমরা সবাইকে আহবান জানিয়েছি এবং এখনও আহবান জানাচ্ছি, এ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার মাধ্যমে জাতীয় দায়িত্ব সম্পাদনে এগিয়ে আসার জন্য। সকলকে অঙ্গিকার করতে হবে যে ক্ষমতায় গিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে হবে। নির্বাচনী অঙ্গিকারে তা উল্লেখ করতে হবে। কেউ যদি যুদ্ধাপরাধী বা যুদ্ধাপরাধীদের সম্পৃক্ত রয়েছে এমন দলের সাথে আঁতাত করেন তাহলে সমস্ত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সমর্থকদের নিয়ে তাদেরকে বর্জনের ডাক দেয়া হবে।
প্রশ্ন : সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণআদালতে শেখ হাসিনাও ছিলেন। সেখানেই বিচার হয়েছিল এবং গোলাম আযমকে ফাঁসি দেয়া হয়। পরবর্তিতে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়েও গোলাম আযমদের বিরুদ্ধে বিচারের উদ্যোগ নেননি। অধিকন্তু ক্ষমতায় যাবার স্বার্থে তিনি গোলাম আযমদের সাথে গোপনে বৈঠকও করেছেন। এমনি অভিজ্ঞতার আলোকে তারা আবারো ক্ষমতায় গিয়ে বিচার করবে এমনটি আশা করেন কীভাবে?
উত্তর ঃ এ নিয়ে কোন ভবিষ্যতবাণী করা উচিত হবে না। আমার মনে হয় এবার যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে সেটিকে উপেক্ষা করা কঠিনই হবে। প্রশ্নঃ আপনি বলেছেন যে বিচার হতে হবে, রায় যাই হউক। এর পরিপ্রেক্ষিতে অনেকে আশংকা করছেন ইতিপূর্বেকার গোলাম আযমকে নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়ার মত পরিস্থিতির। বিচারের নামে প্রহসন করে সত্যিকারের যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচিয়ে দেয়ার অবলম্বনে ব্যবহৃত হচ্ছেন আপনারা?
উত্তর : এ দুটো বিষয়কে এক করে দেখবেন না।
প্রশ্নঃ যদি মাননীয় আদালত রায় দিয়ে দেন, তাহলে কী করবেন?
উত্তর : বিচার নিয়ে প্রশ্নের অবতারণা হতে পারে-এমন চিন্তা আমাদেরও রয়েছে। সেজন্যেই তো আমরা জাতিসংঘের সম্পৃক্ততা চাচ্ছি বিচারের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য।
প্রশ্নঃ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের চলমান আন্দোলনের বাইরে আপনার সময় কাটে কীভাবে?
উত্তর : এ নিয়েই প্রায় পুরো সময় ব্যয় করছি। এছাড়াও আন্তর্জাতিক কয়েকটি সংস্থার সাথে জড়িত রয়েছি। বাংলাদেশের মত বিভিন্ন দেশে বধ্যভূমি রয়েছে, সেগুলো নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংস্থার সাথে যুক্ত রয়েছি। এটি কাজ করছে বিশ্বে যাতে আর কোনদিন বর্বরোচিতভাবে মানুষকে হত্যা করা না হয় সেজন্য। এ সংস্থা গঠিত হয়েছে ৫০টি দেশের সমন্বয়ে। এর ট্রাস্টিবোর্ড রয়েছে ১৫ সদস্যের। সেটি গঠিত হয় নির্বাচনের মাধ্যমে। সেখানে আমিও নির্বাচিত হয়েছি। সেখানেও আমাদের এ আন্দোলনের কথা হয়েছে। এভাবেই আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে আমরা বিভিন্ন কৌশল নিয়েছি।
প্রশ্নঃ আপনাদের এ আন্দোলনের ব্যাপারে প্রবাসীদের সম্পৃক্ততা কেমন দেখলেন?
উত্তর : অভূতপূর্ব সাড়া পরিলক্ষিত হচ্ছে প্রবাসে। একাত্তরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধেও প্রবাসীদের ভূমিকার কথা স্মরণীয় হয়ে রয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারেও তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল রাখতে প্রবাসীদের অবদানকে আমরা সবসময় কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। নিজের জীবন গড়ার কঠোর সংগ্রামে লিপ্ত থেকেও মাতৃভূমির প্রতি তাদের যে মমত্ববোধ তা আমাদেরকে সবসময় উৎসাহিত করে।