
ঠিকানা রিপোর্ট : বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে একটি বিলের প্রস্তাব করেছিলেন কমিউনিটির অতিপরিচিত মুখ মাজেদা উদ্দিন। সিটি কাউন্সিলর ওমেন ফারাহ লুইসের যে কারণে সিটি কাউন্সিলে মাধ্যমে সেটি সেখানে ফ্লোরে এনে পাস করার সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিলটি সিটি কাউন্সিলে উঠল না। বিলটি না ওঠার পেছনে মাজেদা উদ্দিন একজন সিটি কাউন্সিলরের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। হতাশা ব্যক্ত করে মাজেদা উদ্দিন বলেন, কত আশা করেছিলাম ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের বিলটি পাস হবে। বিলটি পাস হলে বাংলাদেশের পতাকা বোলিং গ্রিনে উড়ত। কিন্তু তা এ বছর হলো না। আগামীতে হবে কি না, তাও বলতে পারছি না। কারণ আমি স্বাধীনতা দিবস সংক্রান্ত বিলটি পাস করানোর জন্য গত বছর সিটি কাউন্সিলওমেন শাহানা হানিফের কাছে দিয়েছিলাম। তিনি ওই সময়ে বিলটি না ওঠানোয় আমি সেটি পরে ফারাহ লুইসের কাছে দিয়েছিলাম। ফারাহ লুইস বিলটি ওঠানোর জন্য ফ্লোরে দিয়েছিলেন। এটি ২৬ মার্চের আগে পাস হতে পারে, এমনটাই শুনেছিলাম। একদিকে বিলটি পাস হওয়া, অন্যদিকে ২৬ মার্চ বোলিং গ্রিনে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু সেটি হলো না।
মাজেদা উদ্দিন আরো বলেন, বোলিং গ্রিনে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানোর জন্য আমি দেশ থেকে ৮ ফুট বাই ১২ ফুট দুটি পতাকা অনিয়েছিলাম। আসেফ বারী টুটুল ভাই এনে দিয়েছিলেন। একটি পতাকা বোলিং গ্রিনে ওড়ানোর জন্য সিটি হলের মেয়র অফিসের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সকে দিয়েছিলাম আর অন্যটি আমার কাছে রেখেছিলাম। আমি প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসে কুইন্স বরো হলে বাংলাদেশের পতাকা ওঠাই। বিগত কয়েক বছর ধরেই ওঠাচ্ছি। এটি ওঠান কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট। এবারও এটি ওঠানোর পরিকল্পনা আগে থেকেই ছিল। আমি কুইন্সে পতাকা ওঠানোর জন্য শাহানা হানিফকে অনুরোধ করেছিলাম। তিনি বলেছিলেন, কুইন্সে নয়, ব্রুকলিন বরো হলে তিনি ওঠাতে পারবেন। আর এটি ২৬ মার্চ নয়, ১৬ ডিসেম্বর হলে তিনি পারবেন।
মাজেদা উদ্দিন বলেন, আমি এর আগে ২৬ মার্চ বোলিং গ্রিনে পতাকা ওঠানোর জন্য সিটি হলের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের হাতে পতাকা পৌঁছে দিয়েছিলাম। সে অনুযায়ী সেটি ওঠানোর কথা ছিল। ২৩ মার্চ আমাকে সেখান থেকে ফোন করে জানানো হয়, তারা ২৬ মার্চ পতাকা ওঠাতে পারবেন না। তিনি বলেন, এতে আমি ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। যদিও তাদেরকে আমি বলেছিলাম, এবারের ২৬ মার্চই পতাকা ওঠাতে হবে, না হলে দরকার নেই। আমি এ নিয়ে অনেক চেষ্টা করেছি।
মাজেদা উদ্দিন বলেন, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস-সংক্রান্ত রেজ্যুলেশনটি নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে পাস করানোর জন্য আমি প্রথমে গত বছর শাহানা হানিফকে দিয়েছিলাম। তিনি বিলটি পাসের জন্য না ওঠানোর কারণে পরে আমি সেটি সিটি কাউন্সিলওমেন ফারাহ লুইসের কাছে দিই। তিনি চলতি বছরের ২৬ মার্চ এটি পাস করানোর জন্য নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের ফ্লোরে তোলেন। এটি পাস হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। পরে ফারাহ লুইসের কাছ থেকে জানতে পারলাম, বিলটি এবার পাস হবে না। কারণ এটি তিনি ফ্লোরে দিলেও পাস করাতে পারছেন না। নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলর বিলটি প্রস্তাব করতে পারবেন না। কারণ হিসেবে জানতে পেরেছি, ফারাহ লুইস বিলটির প্রাইমারি প্রস্তাবক হয়েছিলেন। আরেকজন কাউন্সিলওমেন বলছেন, তিনি প্রাইমারি প্রস্তাবক। তিনি প্রাইমারি প্রস্তাবক দাবি করার কারণে এখন ফারাহ লুইস আর বিলটির প্রাইমারি প্রস্তাবক থাকছেন না। যেহেতু একজন বিলের ব্যাপারে আপত্তি দিয়েছেন, ফলে বিলটি পাস হওয়ার জন্য ফ্লোরে স্পিকার ব্যবস্থা নেবেন না। আমি ফারাহ লুইসকে অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তিনি বলেছেন পারবেন না। আমি এর আগেও একাধিক বিল দিয়েছি ও রেজ্যুলেশন পাস হয়েছে। এর আগের সব কটিতে আমি মুসলিম কমিউনিটির নাম উল্লেখ করেছি। স্বাধীনতা দিবসের বিলটির জন্য আমি ১৯ জনের নাম উল্লেখ করেছিলাম। এটি হয়তো আমার ভুল হতে পারে। কিন্তু এই ভুলের জন্য কি বিলটি ওঠাবেন না। মাজেদা উদ্দিন বলেন, নিয়ম হচ্ছে কোনো বিল পাস করাতে হলে সেই বিলের ব্যাপারে একজন সিটি কাউন্সিলরও যদি আপত্তি দেন, তাহলে আর সেটি ওঠে না। এখন এটির ভবিষ্যৎ কী হবে, তা বলতে পারছি না। স্পিকারের কাছে চিঠি দিয়ে বিলটির ব্যাপারে কোনো অনুরোধ করবেন কি না এ বিষয়ে তিনি বলেন, এখন এটি করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।