ঠিকানা ডেস্ক : যৌন নিপীড়নের নতুন অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর পদত্যাগ করলেন যুক্তরাষ্ট্রের সিবিএস টেলিভিশনের প্রধান লেস মুনভেস।
বিবিসির খবরে বলা হয়, গত জুলাই মাসে নিউ ইয়র্কার ম্যাগাজিনে লেস মুনভেসের বিরুদ্ধে ছয় নারীর অভিযোগ প্রকাশিত হলে সিবিএস কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছিল। ৯ সেপ্টেম্বর রোববার নতুন করে ছয় নারী মুখ খোলার পর তার পদত্যাগের খবর এলো।
৬৮ বছর বয়সী মুনভেস এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। রোববার এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, এমন সব ‘মিথ্যা অভিযোগ’ তার বিরুদ্ধ আনা হয়েছে, যা তার ব্যক্তিজীবনের সঙ্গে যায় না। অবশ্য তিনি ও সিবিএস টেলিভিশন ‘মি টু’ মুভমেন্টে দুই কোটি ডলার চাঁদা দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন।
সিবিএস টেলিভিশনের এক বিবৃতিতে রোববার বলা হয়, লেস মুনভেস কোম্পানির চেয়ারম্যান, প্রেসিডেন্ট ও সিইওর পদ থেকে সরে যাচ্ছেন এবং তা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হচ্ছে। তার বদলে সিবিএসের প্রেসিডেন্ট এবং ভারপ্রাপ্ত সিইও হিসেবে আসছেন জোসেফ ল্যানিয়েলো।
ফাইনানশিয়াল টাইমস লিখেছে, পদত্যাগ করার জন্য সিবিএসের শেয়ারসহ মোটা অংকের অর্থ পাচ্ছেন মুনভেস। ওই অর্থের পরিমাণ ১০ কোটি ডলার পর্যন্ত হতে পারে বলে গুঞ্জন চলছে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে।
অবশ্য সিবিএস বলছে, যৌন নিপীড়নের অভিযোগের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অবসর সুবিধার কোনো অর্থ মুনভেস নেবেন না। আর ‘মি টু’ মুভমেন্টের জন্য দানের টাকা সেখান থেকে কেটে রাখা হবে।
১৯৯৫ সালে সিবিএসে যোগ দেওয়া মুনভেস ২০০৬ সালে কোম্পানির সিইও হন। এরপর এক দশকে তিনি কোম্পানিকে বিপুল লাভের মুখ দেখান। তাকে বিবেচনা করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী প্রধান নির্বাহী হিসেবে।
নিউ ইয়র্কারে প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদনে ছয় নারী যেসব অভিযোগ এনেছেন, সেগুলো ঘটেছে গত শতকের আশির দশকে এবং চলতি শতকের শুরুর দিকে।
অভিযোগকারীদের কেউ কেউ বলেছেন, মুনভেস তাদের যৌনকর্মে বাধ্য করেছেন; রাজি না হওয়ায় মুনভেস ক্যারিয়ার শেষ করে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন কয়েকজন।
মুনভেস কী কী করেছেন, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ ওই প্রতিবেদনে এসেছে একজন টিভি এক্সিকিউটিভ এবং একজন লেখিকার বয়ানে।
অবশ্য মুনভেস তার বিবৃতিতে জোর করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন ওই ছয়জনের মধ্যে তিনজনের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল আর সেটা হয়েছিল তাদের সম্মতিতেই। সেসব ২৫ বছর আগের কথা, তখন তিনি সিবিএসে ছিলেন না।
“গত ৪০ বছরের ক্যারিয়ারে আমি কখনোই আমার পদ ব্যবহার করে কোনো নারীর কাছ থেকে সুবিধা আদায় করিনি। এরকম কোনো অভিযোগও এর আগে আমার বিরুদ্ধ কেউ করেনি।”
এর আগে জুলাই মাসে মুনভেসের বিরুদ্ধ মুখ খুলেছিলেন অভিনেত্রী ইলিয়ানা ডগলাসসহ ছয় নারী। তারা বলেছিলেন, মুনভেসকে প্রত্যাখ্যান করায় তাদের ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তাদের বিশ্বাস।