যৌন হামলার অভিযোগে পুলিৎজার পুরস্কার বোর্ড চেয়ারম্যানের পদত্যাগ

ঠিকানা ডেস্ক : পুলিৎজার পুরস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান জুনো ডিয়াজের বিরুদ্ধে যৌন হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। বোর্ড জানিয়েছে, তারা এই অভিযোগ তদন্ত করে দেখবে। ৪৯ বছর বয়সী পুলিৎজার জয়ী এই লেখক গত মাসে বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সংগঠনটি জানিয়েছে, ডিয়াজ চেয়ারম্যান হিসেবে বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেছেন তবে বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাবেন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।খবরে বলা হয়, ডিয়াজের বিরুদ্ধে যৌন হামলার অভিযোগ এনেছেন লেখিকা জিনজি ক্লেমন্স। ক্লেমন্স অভিযোগ করেছেন, ডিয়াজ ছয় বছর আগে তাকে জোর করে চুমু খেয়েছেন।
ক্লেমন্স তখন ডিয়াজের ছাত্রী ছিলেন। এই মাসের শুরুতে ডিয়াজ বলেন, তিনি তার অতীতের দায়ভার নিতে রাজি আছেন। ক্লেমন্সের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করে দেখবে পুলিৎজার পুরস্কার বোর্ড। ডিয়াজ এই তদন্তকে স্বাগতম জানিয়েছেন এবং সমপূর্ণভাবে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
২০০৮ সালে ‘দ্য ব্রিফ ওয়ান্ডারাস লাইফ অফ অস্কার ওয়াও’ বইয়ের জন্য ফিকশন ক্যাটাগরিতে পুলিৎজার পুরস্কার পান ডমিনিকান-আমেরিকান লেখক জুনো ডিয়াজ। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ম্যাগাজিন দ্য নিউ ইয়র্কারে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে শৈশবে ধর্ষিত হবার কথা লিখেন ডিয়াজ।ক্লেমন্সের অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, পুরুষদের সম্মতি সম্বন্ধে শেখানোটা আবশ্যিক ছিল। তিনি আরো বলেন, আমি আমার অতীতের কর্মকা-ের দায়ভার নেব। এজন্যই আমি শৈশবে ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনা ও ওই ঘটনা আমার ওপর যে প্রভাব ফেলেছে সে সম্বন্ধে সত্যটা জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই কথোপকথন গুরুত্বপূর্ণ ও এটা অবশ্যই চলমান থাকা উচিত। ডিয়াজ বলেন, আমি এই প্রয়োজনীয় ও বিলম্বিত সাংস্কৃতিক আন্দোলনে নারীদের কাছ থেকে তাদের গল্পগুলো শুনছি ও শিখছি। আমাদের অবশ্যই সকল পুরুষকে অনুমতি নেয়া ও সীমা সম্বন্ধে শিক্ষা দিতে হবে।ক্লেমন্স, ৪ঠা মে সিডনি রাইটারস ফেস্টিভালে এক অধিবেশনের সময় ডিয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেন। অধিবেশনে অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন, ক্লেমন্স দ্য নিউ ইয়র্কারে প্রকাশিত নিবন্ধটির দিকে ইঙ্গিত করে ডিয়াজকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি ক্লেমন্সের সঙ্গে এমন আচরণ কেন করেছিলেন? এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ডিয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন ক্লেমন্স। তিনি লিখেন, শুধু তাকেই না, আরো অনেককে যৌন হয়রানি করেছেন ডিয়াজ। তিনি যোগ করেন, তার বিশ্বাস এই যে, ডিয়াজ জানতেন তার বিরুদ্ধে যৌন হামলার অভিযোগ উত্থাপিত হতে চলেছে। আর এজন্যই এই ইস্যু থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিতেই নিউ ইয়র্কারে ওই নিবন্ধটি লিখেন তিনি।ক্লেমন্স অভিযোগ করার পর আরো বেশ কয়েকজন নারী ডিয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন যে, তিনি তাদের সঙ্গে আগ্রাসী আচরণ করেছেন। কেউ কেউ এনেছেন নারী বিদ্বেষী মন্তব্য করার অভিযোগও।