রথীন্দ্র নাথ রায়ের একক সঙ্গীত সন্ধ্যা

ঠিকানা রিপোর্ট: স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী রথীন্দ্র নাথের একক সঙ্গীত সন্ধ্যার আয়োজন করেছিলো ফুলকলি ফাউন্ডেশন। গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় চমৎকার অনুষ্ঠানটি জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। শামসুন নাহার নিম্মির পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ নেওয়াজ, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মূলধারার রাজনীতিবিদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি নার্গিস আহমেদ, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী শহীদ হাসান ও মার্কস হোমসের জ্যাকসন হাইটস শাখার ম্যানেজার আব্বাস উদ্দিন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ফুলকড়ি ফাউন্ডেশনের সভাপতি বেলাল আহমেদ বলেন, এই গুণী শিল্পী দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের সাথে রয়েছেন। কিন্তু কোন দিন এই শিল্পীর একক সঙ্গীত সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়নি। তাই আমি আমার সংগঠনের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নিয়েছি। এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। তিনি বলেন, যারা এই অনুষ্ঠান করতে আমাকে সহযোগিতা করেছেন তাদের আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

শিল্পী রথীন্দ্র নাথ বলেন, সঙ্গীত হলো গুরুমুখী বিদ্যা। গুরু ছাড়া এই বিদ্যা হয় না। গুরু বিদ্যা ছাড়া সঙ্গীত শিল্পী হওয়া যায় না। খনিকের জন্য গান করা যায় কিন্তু মানুষের হৃদয়ে পৌঁছা যায় না। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, তখন গান করা ছিলো কঠিন ব্যাপার। এখন অনেক যন্ত্র বের হয়েছে। গান করাও সহজ হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, যে গান মানুষকে স্পর্শ করে না, সেটা গান হয় না। আমি গানকে সব সময় ইবাদত মনে করি।
শাহ নেওয়াজ বলেন, শিল্পী রথীন্দ্র নাথ আমাদের গর্ব। তার গান এখনো বাংলাদেশের মানুষ শুনে।
ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার বলেন, শিল্পী রথীন্দ্র নাথ একজন বড় মাপের শিল্পী। তাদের গান মানুষের হৃদয় নাচাতো। এখনকার শিল্পীদের গানে মানুষের শরীর নাচায়।
শিল্পী শহীদ হাসান বলেন, ওল্ড ইজ গোল্ড।
অনুষ্ঠানে শিল্পীকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন শাহ নেওয়াজ এবং ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার। আর শাহ নেওয়াজকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন মাকসুদুর রহমান।

বক্তব্য পর্ব শেষে শিল্পী রথীন্দ্র নাথ রায় তার একক সঙ্গীত পরিবেশন শুরু করেন দেশাত্মবোধক গান দিয়ে। এর পরই তিনি প্রথমে তার নিজের পছন্দের এবং পরে দর্শকদের অনুরোধে তার জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশন করে সবাইকে মুগ্ধ করেন। শিল্পী রথীন্দ্র নাথ রায় প্রমাণ করেছেন তিনি এখনো সেরা। তার গানগুলো দর্শকরা প্রাণভরে উপভোগ করেন। এমন চমৎকার সঙ্গীত পরিবেশন প্রবাসের দর্শকরা অনেক দিন পায়নি। দর্শকদের সেই প্রাণের ক্ষুধা মেটালেন শিল্পী রথীন্দ্র নাথ রায়। সবাই বলেছেন, অসাধরণ পরিবেশনা ছিলো শিল্পীর। এই ধরনের অনুষ্ঠান আরো বেশি করে আয়োজন করা প্রয়োজন। যাতে করে গুণী শিল্পীদের কালজয়ী গানগুলো বার বার শ্রবণ করা যায়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গাওয়া গানগুলো সবাইকে বিমোহিত করেছে। অনেক দিন পর প্রবাসী দর্শকরা গান শুনে তৃপ্তি সহকারে বাসায় ফিরেছেন। শিল্পী শহীদ হাসানের কথাই সত্যি হলো- ওল্ড ইজ গোল্ড।