রিহ্যাব মেলায় বিক্রি হয়েছে ২০০ কবর

রাজধানী ডেস্ক : টাকাকড়ি ধন-সম্পত্তি/ অনেক অনেক বাড়ি-গাড়ি/ ঠিকানার ছড়াছড়ি/ ঠিকানা শুধু এক সমাধি/ সাড়ে তিন হাত মাটি। এলআরবির জনপ্রিয় এ গানের মতোই আবাসন মেলায় এবার সেই সাড়ে তিন হাত শেষ ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন অনেক গ্রাহক।

আবাসন মেলায় বসবাসের জন্য ফ্ল্যাট ও প্লটের যেমন বেশ বেচাকেনা হয়েছে, তেমনি অনেকে শেষ ঠিকানাও খুঁজে নিয়েছেন। এবারই মেলায় প্রথমবারের মতো একটি প্রতিষ্ঠান আট হাজার কবরের জায়গা বিক্রির জন্য প্রকল্প প্রদর্শন করে। এমআইএস হোল্ডিংসের স্টলে এই কবরের স্থান বিক্রি হয়েছে। মেলা থেকে প্রতিষ্ঠানটি দুই শতাধিক কবরের জায়গা বিক্রি করেছে।

গত ১১ ফেব্রæয়ারি রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পাঁচ দিনের রিহ্যাব মেলা শেষ হয়েছে। রিহ্যাব মেলায় ক্রেতার ভিড় ছিল এমআইএস হোল্ডিংসের স্টলে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের স্টলে সব বয়সের মানুষ ফ্ল্যাট ও প্লট খুঁজলেও এই স্টলে ছিল বেশি বয়সের মানুষের ভিড়। মেলায় কবরের জায়গা বুকিং দিয়েছেন দুইশর বেশি মানুষ। কেনাকাটার জন্য আলোচনা করেছে কয়েক হাজার ক্রেতা।

পূর্বাচল রাওজাতুল জান্নাত নামে ৮০ হাজার কবরের জায়গার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এমআইএস হোল্ডিংস। শুরুতে ২০০ বিঘা জায়গার ওপর আট হাজার কবরের স্থান করা হচ্ছে। এরই মধ্যে দুই হাজার কবর করার মতো জায়গা প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখান থেকে মেলায় দুই শতাধিক বিক্রি হয়েছে।

প্রতিটি কবর সাড়ে তিন হাত দৈর্ঘ্য ও দেড় হাত প্রস্থের হলেও আশপাশের জায়গাসহ ২৪ দশমিক ৫ বর্গফুটের কবরের জায়গা বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি। সাত ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩৫ ফুট প্রস্থের (২৪৫ বর্গফুট) এসব জমির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা। আর এককালীন সার্ভিস চার্জ ১৫ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে তিন লাখ ৪৫ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে একটি কবরের জায়গা।

এমআইএস হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শোয়েব হোসেন বলেন, আজিমপুর কবরস্থান থেকে ট্রাকভর্তি মানুষের শরীরের নানা অঙ্গ ও হাড় অন্যখানে ফেলার জন্য নিয়ে যেতে দেখে শঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি। তখন নিজের চিরস্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থার কথা ভাবেন। এ বিষয় নিয়ে বায়তুল মোকাররম ও গুলশান আজাদ মসজিদের ইমামদের সঙ্গে আলোচনা করে পরামর্শ নেন। সবার কথা চিন্তা করে শেষ ঠিকানার এ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, সাড়ে তিন লাখ টাকায় কেনার পর ক্রেতার মৃত্যু হলে সব খরচ ও দায়িত্ব নেবেন তারা। প্রত্যেক ক্রেতা তাদের প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যারে তালিকাভুক্ত হবেন। এ প্রকল্প বাণিজ্যিক মনে হলেও সেবা দেওয়ার উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন কবরস্থানে এখন স্থায়ী কবর দেওয়ার সুযোগ নেই। আগে ১০ থেকে ১৫ বছরের জন্য ১০-১৫ লাখ টাকা নেওয়া হতো। এখন টাকা দিলেও স্থান পাচ্ছেন না ক্রেতারা। রাজধানীর বিভিন্ন হাউজিং সোসাইটি ও প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে শত শত কবরের জায়গা কেনার জন্য আলোচনা করছে। মেলায় হাজার হাজার ক্রেতা কবরের জায়গা কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।