নিজস্ব প্রতিনিধি : রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার নামে দেশি-বিদেশিদের অতি উৎসাহী তৎপরতায় সন্দিগ্ধ ও শঙ্কিত বোধ করছে সরকার। জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় অভিযুক্ত স্থানীয় একটি এনজিওর নাম বিদেশি সুপারিশ ও তালিকাভুক্ত হওয়ায় এই সন্দেহ-শঙ্কা বেড়েছে।
রোহিঙ্গা শিশুদের সহায়তার জন্য বিশ্বব্যাংক ইউনিসেফের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব দেয়। তাদের এ অর্থসাহায্য অনুদান আকারে দেওয়া হলেও সরকার এ নিয়ে সংশয়-শঙ্কায় ছিল। বিশ্বব্যাংক প্রথমে সহজ শর্তে ঋণ আকারে এ অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব করে। শিশু শিক্ষা খাতে অর্থ ব্যয়ের জন্য দেওয়া হয়। কিন্তু সরকার ঋণ নিতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা ঋণের পরিবর্তে অনুদান আকারেই এ অর্থ দিতে সম্মত হয়। তাদের এই উদারতা সরকারের সংশ্লিষ্টদের সন্দেহ বাড়িয়ে তোলে। প্রথম দফায় ২৫ মিলিয়নের পর বিশ্বব্যাংক একই খাতে আরও ২৫ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার কথা জানিয়েছে।
কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফে সরকারি ১৩১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ১০০ স্কুলের অবস্থা করুণ। জরাজীর্ণ স্কুল ভবনে শিশু শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে ক্লাস নিতে হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ৬০ হাজার শিশুকে শিক্ষাদানের কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য দেড় হাজার লার্নিং সেন্টার খোলা হবে। প্রাথমিক শিক্ষা ও বিনোদনের ব্যবস্থা করা হবে। বিদ্যালয়ের আশপাশে বিদ্যালয়মুখী সড়ক নির্মাণ করে দেওয়া হবে, যাতে শিশুরা অনায়াসেই স্কুলে আসতে পারে। শিক্ষাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে। সংস্থা বাছাই করবে দাতা সংস্থা। সরকার এতে আপত্তি জানিয়েছে। তারা বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের তদন্ত সাপেক্ষেই এনজিও নিয়োগ করতে হবে। তাদের সুপারিশ ছাড়া দাতা সংস্থা এসব লার্নিং সেন্টার পরিচালনাসহ প্রকল্পের কোনো কাজে কোনোভাবেই কোনো এনজিওকে নিয়োগ করতে পারবে না। মুসলিম এইড নামের একটি এনজিওর নাম দাতা সংস্থার তালিকায় রয়েছে। অথচ এই সংস্থার বিরুদ্ধে জঙ্গি অর্থায়ন ও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় পার্বত্য এলাকার খাদ্য বিতরণ কর্মসূচির দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেয় এবং তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ইয়াবাসহ মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যাদি পাচার, মানব পাচার, অস্ত্র পাচারে ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া যায়। কিছু ঘটনাও ধরা পড়েছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে। এর প্রেক্ষাপটে সরকার, স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর সতর্কতার সঙ্গে এনজিওদের তৎপরতা পর্যবেক্ষণে রেখেছে।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতি
জঙ্গি সংশ্লিষ্ট এনজিওকে নিয়োগ করতে চায় দাতা সংস্থা