লিবার্টি রেনোভেশনের আজাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

আসেফ বারীর সংবাদ সম্মেলন

নিউইয়র্ক : লিবার্টি রেনুভেশনের সিইও আজাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বারি হোমকেয়ার সিইও আসেফ বারি টুটুল।

ঠিকানা রিপোর্ট : নিউইয়র্কের বাংলাদেশি মালিকানাধীন নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠান ‘লিবার্টি রেনোভেশন’-এর স্বত্তাধিকারী মোহাম্মদ এ আজাদ-এর বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক আসেফ বারী টুটুল। গত ১০ মে বুধবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের একটি পার্টি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করে তিনি বলেন, আজাদ বিভিন্ন বাসা-বাড়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাজ না করে অর্থ গ্রহণ এবং তা পরিশোধ না করা, অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও কাজের নামে হয়রানিসহ নানা প্রতারণা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিশিষ্ট চিকিৎসক মাসুদুর রহমান, সাপ্তাহিক আজকালের সম্পাদক ও প্রকাশক শাহ নেওয়াজ, বাংলাদেশ সোসাইটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দিকী, জেবিবিএ’র একাংশের সভাপতি গিয়াস আহমেদ এবং অপরাংশের সভাপতি হারুন ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ সোলায়মান, বাংলাদেশি-আমেরিকান লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি আহসান হাবীব, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সভাপতি রাফেল তালুকদার, ব্রঙ্কসের ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আমরা ‘লিবার্টি রেনোভেশন’-এর স্বত্তাধিকারী মোহাম্মদ এ আজাদ কর্তৃক প্রতারণার শিকার হয়েছি। আমরা একে অপরের পরামর্শে তাকে কাজ দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের সম্মান রাখেননি।
সংবাদ সম্মেলনে ডা. মাসুদুর রহমান তার অভিযোগের স্বপক্ষে বিভিন্ন ডকুমেন্টসহ বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, আমার একটি বাড়ী রেনোভেশন করতে গিয়ে এক লাখ ডলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তিনি কথা দিয়ে কথা রাখেননি, চুক্তি মোতাবেক কাজ করেননি।
আসেফ বারী টুটুল তার বক্তব্যে বিস্তারিত তুলে ধরেন এবং বিভিন্ন ডকুমেন্ট উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, আমার ব্রঙ্কসে সুপার মার্কেট আর লং আইল্যান্ডে বাড়ি রেনোভেশনের জন্য তাকে ৯ লাখ ৩৫ হাজার ডলার দিয়েছি। দফায় দফায় তাকে অর্থ দিয়েছি। অথচ সম্পূর্ণ কাজ শেষ করেননি। বরং বকেয়া হিসেবে আরো অর্থ দাবি করছেন এবং কমিউনিটির বিভিন্নজনকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাদের মানসম্মান নষ্ট করছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে তার বাড়ির কাজ যেভাবে করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত হয়েছে। এজন্য আমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। অথচ তিনি পাল্টা ৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার পাওনা দাবি করছেন বলে লোকমুখে শুনছি।
লোকমান হোসেন বলেন, আমি মোহাম্মদ এ আজাদকে দুই লাখ ডলার ক্যাশ পেমেন্ট করেছি, অথচ তিনি আমার কাজ করেনি এবং হঠাৎ করেই কাজের চুক্তি বাতিল করেন। যা অযৌক্তিক। তিনি আরো অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের সাথে ছবি তুলে তার অপব্যবহার করছেন। শাহ নেওয়াজ বলেন, আমি তাকে একাধিক কাজ দিয়ে অর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তবে ২০২২ সালে তার কাছ থেকে একটি অফিস ভাড়া পেয়ে উপকৃত হলেও সেই অফিস ভাড়া ও ব্যয় নিয়েও প্রতারিত হয়েছি।
গিয়াস আহমেদ বলেন, অনেকের সুপারিশ থাকার পরে যখন মোহাম্মদ এ আজাদ সম্পর্কে জানার কারণেই আমি তাকে কাজ দেইনি। তবে কমিউনিটির লোক হয়ে একে অপরের সাথে প্রতারণা করা ঠিক নয়। তিনি অভিযোগ করেন যে, আমাদের কমিউটিতে এমন কিছু লোক আছেন যারা অনেককেই মিসগাইড করছেন, মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন। তাদের চিহ্নিত করে বয়কট করা দরকার।
রুহুল আমীন সিদ্দিকী বলেন, নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটিকে আরো বড় এবং শক্তিশালী করতে বিভেদ-বিভক্তি নয়, সবার সহযোগিতা দরকার। কারো কাছ থেকে প্রতারণা কাম্য নয়।
হারুন ভূইয়া বলেন, আমাদের সবার মধ্যে বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের মাঝে সৌহার্দ্য সম্পর্ক বিরাজমান। তাই আমরা একে অপরের আমন্ত্রণে যাই। এই সুসম্পর্ক বজায় রাখা দরকার।
ফাহাদ সোলায়মান বলেন, আমরাই তাকে (মোহাম্মদ এ আজাদ) পেট্রোনাইজ করেছি, প্রোমোট করেছি, তাকে নিয়ে ছবি তুলেছি। তবে জেনে-শুনে আগামীতে আমাদের চলতে হবে, সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।