শিল্পাঙ্গণের অনুপম পরিবেশনা

ঠিকানা রিপোর্ট: ’সত্য ও সুন্দরের লক্ষ্যে শিল্পের সাধনা’এই স্লোগানকে ধারণ করেই প্রতিষ্ঠা করা হয় শিল্পাঙ্গণ। সেন্টার ফর বাংলা ক্রিয়েটিভ ওয়ার্কার্স ইনকের আয়োজনে গত ১০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পালন করা হয় একুশে ফেব্রুয়ারি। জ্যাকসন হাইটসের পিস ৬৯ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত শিল্পাঙ্গাণের অনুষ্ঠানটি ছিলো কয়েক ভাগে বিভক্ত। তবে তাদের পরিবেশনা ছিলো অত্যন্ত চমৎকার। তাদের অনুপম পরিবেশনা সবাইকে মুগ্ধ করেছে। বিশেষ করে দেশাত্মবোধক ও একুশের গান ও কবিতা নিয়ে হৃদয়ে বাংলাদেশ। নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি জিনাতুন নাহারের অসাধারণ অভিনয়ে নাটিকা বাংলার মা মঞ্চস্থ হয়। সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন অনুষ্ঠানটিতে ছিলো না কোন বিরক্তিকর বক্তব্যের পর্ব। আড়াই ঘন্টার অনুষ্ঠানটি ছিলো হৃদয়গ্রাহী।
ডেইজি আজিজের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ড. ওমর আশরাফ। তিনি তার বক্তব্যে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা আসলে লংআইল্যান্ড ভিত্তিক একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন। আমরা এ পর্যন্ত সব অনুষ্ঠানই লংআইল্যান্ডে করেছি, এই প্রথম জ্যাকসন হাইটসে অনুষ্ঠান করছি। তিনি তার বক্তব্যে সংগঠনের তিন পরিচালককে পরিচয় করিয়ে দেন। তিন পরিচালক হলেন ইঞ্জিনিয়ার আক্তার কামাল, ফালাহ আহমেদ এবং নজরুল ইসলাম। সভাপতির বক্তব্য শেষেই শুরু হয় অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব।

বাংলাদেশের হৃদয় হতে অনুষ্ঠানটিতে ছিলো কবিতা এবং গানে একুশ এবং দেশকে উপস্থাপন। এক ঝাঁক শিল্পী এই পর্বে অংশগ্রহণ করেন। এই পর্ব ছিলো সত্যি অনুপম। পরিবেশনায় ছিলো মুন্সিয়ানার পরিচায়। এই পর্বে সঙ্গীতে অংশগ্রহণ করেন বিদিশা দেওয়ানজী, মৌসুমী বড়–য়া, সামিনা আশরাফ, ইশরাত আহমেদ পরশিয়া, মাহনাহ হাসান, ফারজানা সুলতানা শরমিন, শাহপর ইসলাম সিমি, ইশরাত কুমু, সোনিয়া হক, তাসফিয়া রুবাইয়াৎ, সোনিয়া পান্না, দীপ্তি বড়–য়া, সায়েম শাহরিয়ার অন্তু, মাহমুদ চৌধুরী, মোহাম্মদ শানু, আরিবা আহমেদ, সামায়রা মাহিবা, রাই সরকার, নূসায়বাহ কবির, আয়না মাহিবা। আবৃত্তিতে ছিলেন সাবিনা হাই উর্বি ও মোহাম্মদ শানু।
জিনাতুন নাহারের অভিনয়ে বাংলা মা নাটিকাটি সবাইকে আবেগ আপ্লুত করে। ভাষা সৈনিক রফিকের উপর তৈরি এই নাটিকাতে বৃদ্ধা মা তার আদরের সন্তানকে খুঁজতে খুঁজতে মাটিতে বসে পড়েন এবং কাঁদতে থাকেন। এক সময় শুনতে পান- তার সন্তান বলছে, মা তুমি কাঁদছো কেন? আমিতো এখানে ঘুমিয়ে আছি, আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দাও। আমি তো তোমার মুখের ভাষা কায়দে আজমের কাছ থেকে ছিনিয়ে এনেছি। তুমি তো বীরের মা। সকলের মা, বাংলার মা। তার অভিনয় প্রমাণ করেছে প্রবাসের নতুন প্রজন্মই আমাদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখবে।


অহংকারের পক্তিমালায় কবিতা আবৃত্তি করেন শরফুজ্জামান মুকুল, নীরা কাদরী, ফারুক ফয়সাল ও গোপন সাহা।
এখানে দরজা ছিলো নাটকে অংশগ্রহণ করেন মিলা হোসেন, নজরুল ইসলাম, সামায়রা মাহিবা, শিরিন বকুল, মোহাম্মদ শানু, লতিফ রহমান, শওকত রিপন, ম ম জসীম, মোস্তাফা মোর্শেদ, সোনিয়া হক ও ইশরাত কুমু। কবিতা জীবনান্দ দাস, শামসুর রাহমান, আবৃত্তিতে শরফুজ্জমান মুকুল, পোশাকে মিলা হোসেন, সঙ্গীতে মাহবুব রশিদ, মঞ্চ পরিকল্পনা মাসুদুল ইমাম আজু, মঞ্চ তৈরি টিপু আলম, ভাবনা ও প্রয়োগ আমর আশরাফ। নাটকটি ছিলো মুক্তিযুদ্ধের উপর। অনুষ্ঠানে এককভাবে সঙ্গীত পরিবশন করেন সাইফুল্লাহ পারভেজ। সাউন্ডে ছিলো বিডি সাউন্ড।