‘শিশুদের নোবেল’ জিতল বাংলাদেশি কিশোর সাদাত

ঠিকানা অনলাইন : ‘শিশুদের নোবেল’ খ্যাত আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশের নড়াইলের কিশোর সাদাত রহমান। মূলত সাইবার অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা নিয়ে কাজ করায় তাকে পুরস্কারটি দেওয়া হয়েছে।

১৩ নভেম্বর শুক্রবার নেদারল্যান্ডসে পুরস্কারের নাম ঘোষণা করেছেন আয়োজকেরা। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক চাইল্ডসরাইটস ওই পুরস্কারের জন্য তার নাম ঘোষণা করে। সেখানে এই কিশোর ৪২টি দেশের ১৪২ জন প্রতিযোগীর মধ্যে পুরস্কারটি জিতল।

১৭ বছর বয়সী সাদাত মেক্সিকান বালিকা ওর্তেগা সেটে (১২) এবং আইরিশ তরুণী সেইনা ক্যাস্টেলনকে হারায়। ওর্তেগা পানিদূষণ প্রতিরোধ এবং সেইনা অটিজম নিয়ে কাজ করছিল।

শুক্রবার সাদাতের হাতে পুরস্কার তুলে দেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই।

পুরস্কার বাবদ এক লাখ ইউরো জিতে নিলেও সাদাত জানায়, তার অ্যাপ ডেভেলপ করার কাজেই এ অর্থ ব্যয় করা হবে। সাদাত বলে, এখনই জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। তরুণরা অনলাইনের অপরাধের ক্ষেত্রে খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। বিশেষত আমাদের সময়ে।

সাদাত রহমান নড়াইল আবদুল হাই সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে ২০১৫ সালে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে এক কিশোরীর আত্মহত্যার পর ‘নড়াইল ভলেন্টিয়ারস’ নামের একটি সংগঠন তৈরি করে। এরপর দেশে অনুষ্ঠিত কয়েকটি প্রতিযোগিতায় জিতে একটি ফান্ড তৈরি করে। পরে সেই ফান্ড থেকেই ‘সাইবার টিনস’ নামে অ্যাপটি তৈরি করে সাদাত রহমান।

অ্যাপটি দিয়ে কিশোর-কিশোরীরা জানতে পারে, কীভাবে ইন্টারনেট দুনিয়ায় সুরক্ষিত থাকতে পারে। প্রায় ১ হাজার ৮০০ কিশোর-কিশোরী এই অ্যাপ ব্যবহার করছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে ৬০টির বেশি অভিযোগের মীমাংসা হয়েছে এবং ৮ জন সাইবার অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত হয়েছে।

সাদাত রহমানকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তার প্রশংসা করেছেন নোবেল বিজয়ী আর্চ বিশপ ডেসমনড টিটু। তিনি এএফপিকে বলেন, এই অদ্ভুত সময়ে যখন মনে হচ্ছে সবকিছু সংশয়ের মধ্যে আছে, তখন একদল তরুণ অন্যদের জন্য নিজেকে নিয়োজিত করে আমাদের সবাইকে আশাবাদী করে তুলছে পৃথিবীটাকে বাসযোগ্য করে তুলতে।

বিশ্ব শিশু শান্তি পুরস্কার প্রবর্তন হয় ২০০৫ সালে রোমে অনুষ্ঠিত নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীদের এক শীর্ষ সম্মেলন থেকে। সেখানে ‘কিডস-রাইটস’ নামের একটি সংগঠন পুরস্কারটি চালু করে।

শিশুদের অধিকার উন্নয়ন ও নিরাপত্তায় অসাধারণ অবদানের জন্য প্রতিবছর আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীরা ওই পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য।

এদিকে গত বছর সুইডেনের শিশু পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ও ক্যামেরুনের ডিভিনা মালম যৌথভাবে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার পায়। তারও আগে ২০১৩ সালে এই পুরস্কার জেতেন পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই।

ঠিকানা/এনআই