শেকৃবি অ্যালামনাইর নতুন কমিটির অভিষেক

মেধাবীদের জ্ঞান-চিন্তা কাজে লাগাতে হবে : জাফর মাহমুদ

নিউইয়র্ক : শেকৃবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানে অতিথি ও আয়োজক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

ঠিকানা রিপোর্ট : শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আমেরিকার নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক ও বার্ষিক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হলো গত ১০ জুন শনিবার সন্ধ্যায় কুইন্স বুলেভার্ডের আগ্রা প্যালেসে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলা সিডিপ্যাপ ও আলেগ্রা হোম কেয়ারের সিইও আবু জাফর মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার ছিলেন গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের চেয়ারম্যান ও সাপ্তাহিক আজকালের সম্পাদক শাহ নেওয়াজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর এবং নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের ফার্স্ট সেক্রেটারি ও হেড অব চ্যান্সেরি ইসরাত জাহান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শেরেবাংলা কৃষিবিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই আমেরিকার সভাপতি মীর ফরিদ উদ্দীন আহমেদ। পরিচালনায় ছিলেন প্রভাত বোস ও এলামনাইর সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. গোলাম সামদানী তরফদার নবনির্বাচিত কমিটির শপথ বাক্য পাঠ করান।
অভিষেক ও বার্ষিক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আবু জাফর মাহমুদ বলেন, প্রতিটি পেশাদার গ্রুপের মেধাবী মানুষদের জ্ঞান ও চিন্তা বাংলাদেশে কাজে লাগাতে হবে। সে জন্য পেশাদার যত অ্যালামনাই গ্রুপ, তাদেরকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।
তিনি বলেন, কেউ আমরা বাংলাদেশকে ভুলিনি। যেমন যুদ্ধ করে আমরা বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছি। তারপর এতটা দিন পেরিয়ে গেছে। এই সময়ের ভেতর অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। যারা পেশাদার তাদের দায়িত্ব অনেক পেশি। আপনাদের মতো কৃষিবিদ দেশের কৃষি গবেষণা ও সম্প্রসারণে অনেক বড় অবদান রাখতে পারেন। এখন বাংলাদেশে কৃষিকাজে অধিকাংশ শিক্ষিত তরুণ যুক্ত হয়েছে। এখন এখান থেকে প্রকৌশলী, ডাক্তারসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরা দেশের জন্য বহুমুখি উদ্যোগ নিচ্ছেন। বিনিয়োগ করছেন। ডাক্তাররা হসপিটাল করছেন। আমি নিজে তিনটি হসপিটালের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির চাহিদাপত্র গিয়েছি। যাতে সুবিধামতো জায়গায় হসপিটাল স্থাপন করা যায়। একইভাবে কৃষিবিদদেরকেও দেশের জন্য বড় উদ্যোগ নিয়ে যেতে হবে।
জাফর মাহমুদ বলেন, মা বাবার প্রতি সম্মান ও দায়িত্বের মতোই আমাদের জন্মভূমির প্রতি অনেক দায়িত্ব সবার আগে। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের ব্যক্তিগত বাবা মা প্রতিষ্ঠা করেননি। যে রাস্তা দিয়ে হেঁটেছি সেটিও আমার আপনার বাবা মা প্রতিষ্ঠা করেননি। আমার জাতি করেছে। জাতির এই ঋণ শোধ দেয়ার জন্য আজীবন প্রচেষ্টা থাকতে হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ বলেন, দেশ স্বাধীন করার জন্য আমরা একসময় শ্লোগান দিয়েছি জয় বাংলা। এখন যুদ্ধ করে স্বাধীন করা দেশটির জন্য আমার চেতনায় ও চিত্তে সারাক্ষণই শ্লোগান থাকে ‘জয় বাংলাদেশ। এই ‘জয় বাংলাদেশ’ই আমাদের সম্পর্কের সূত্র।
গেস্ট অব অনারের বক্তব্যে শাহ নেওয়াজ বলেন, কৃষিবিদরা বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তির ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করছেন। ১৯৭০-৭১ সালে সাড়ে ৭ কোটি মানুষের খাদ্য যোগান দিতে হিমশিম খেতে হতো। এখন ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য উৎপাদনের পরও উদ্বৃত্ত থাকছে। এটি সম্ভব হয়েছে কৃষি বিজ্ঞানীদের কারণে। প্রবাসেও বাংলাদেশি কৃষি গ্রাজুয়েটরা সম্মানের সাথে মূলধারার বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন। তাদের জন্য বাংলাদেশি কমিউনিটি গর্বিত।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. প্রদীপ রঞ্জন কর বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগের সরকার আবারও ক্ষমতায় আসা দরকার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে রক্ষার জন্যই শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন আজাদ, চটগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাইর সভাপতি মাহমুদ আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিষ্ণু গোপ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ও সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যায় অ্যালামনাই আয়োজিত বাংলা নববর্ষ উদযাপন কমিটির আহবায়ক ফেরদৌস খান, ফোবানা নেতা বেদারুল ইসলাম বাবলা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাইর সাবেক সভাপতি কিরণ কবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই’র প্রেসিডেন্ট সোমিত মন্ডল, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও কুইন্স কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার মোহাম্মদ আলী, বিশিষ্ট রিয়েলটর নুরুল আজিম, লায়ন সভাপতি আহসান হাবিব ও সাধারণ সম্পাদক এম জিলানী, ট্রাই স্টেট বিএনপির সভাপতি কাজি আজম ও সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ, প্রবীণ কৃষিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল তালকদার, কৃষিবিদ আব্দুর রহমান, জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী রানো নেওয়াজ, জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেব চৌধুরী চান্দু, শোটাইম মিউজিকের আলমগীর খান আলম, ব্রংকস বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম এ মামুন, ব্রঙ্কসের প্রখ্যাত রিয়েলটর মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট শেখ আব্দুল হক, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই ও এমটিএ’র কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন, আলেগ্রা ও বাংলা হোম কেয়ার গ্রুপের মিডিয়া অ্যাডভাইজার সৈয়দ এম আলম প্রমুখ।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাইর সিনিয়র সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাজমুল হক আঙ্গুর, তৌহিদুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, তপতী রায়, বিদ্যুৎ রায়, অলোক পাল, মোহাম্মদ মামুন, শায়লা তিথি, মাজাহারুল হক শওকত, ফাতেমা মামুন,জাতিসংঘে কর্মরত কৃষিবিদ আলম হোসেইন, শুভময় বিশ্বাস ও সাইফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে গান গেয়ে উপস্থিত দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন শাহ মাহবুব ও শেফালী সারগাম। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যুগল কিশোর নাথ।
অ্যালামনাইর নবনির্বাচিত কর্মকর্তারা হলেন সভাপতি এম এ রশীদ, সিনিয়র রহসভাপতি রেজাউল হক চৌধুরী মানিক, সহ-সভাপতি তপতী রায়, সাধারণ সম্পাদক এম এ মামুন, সহ-সাধারণ সম্পাদক-যুগল কিশোর নাথ, সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুল হক সোহেল, কোষাধ্যক্ষ আব্দুল আজিম, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক শুভময় বিশ্বাস।
কার্যকরি কমিটির সদস্যরা হলেন- মীর ফরিদ উদ্দীন আহমেদ, মনোয়ারুল ইসলাম, প্রভাত বোস, আসাদুজ্জামান কিরণ ও সেকেন্দার আলী।