শেখ হাসিনা ভারত যাচ্ছেন ৬ সেপ্টেম্বর

নিজস্ব প্রতিনিধি : মুহুরি, মনু, কুশিয়ারা, খোয়াই, গোমতী, ধরলা, দুধকুমার- এই সাতটি অভিন্ন নদী নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ আলোচনা হতে যাচ্ছে। যৌথ নদী কমিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক ২৪ আগস্ট নয়াদিল্লিতে হবে। বৈঠকে যৌথ নদী কমিশনের সদস্যরা অংশ নেবেন।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১২ বছর পর যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক হতে যাচ্ছে। বছরে কমপক্ষে দুবার এই বৈঠক হওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও ভারতের অনাগ্রহের কারণে এত দিন তা হয়নি। বাংলাদেশের পক্ষে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করবেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হোসেন। অংশ নেবেন উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, সচিব কবির বিন আনোয়ার এবং যৌথ নদী কমিশনের সদস্যরা।
জানা যায়, মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অভিন্ন নদীগুলোর পানিপ্রবাহ, দুই দেশের চাহিদা এবং আগামী কয়েক বছরে সম্ভাব্য বর্ধিত চাহিদা বিবেচনায় নেওয়া হবে। দুই দেশের পানি বিশেষজ্ঞরা সরেজমিনে পানির প্রবাহ ও চাহিদা যাচাই ও পর্যবেক্ষণ করবেন। সাতটি অভিন্ন নদীর মধ্যে ছয়টি নদীর পানিবণ্টনে সমঝোতা হতে পারে। উচ্চ পর্যায়ের সূত্র জানায়, সাতটি নদীর ব্যাপারেই সমঝোতা/চুক্তি চূড়ান্ত করা হবে। কুশিয়ারা নদী নিয়ে কিছু জটিলতা থাকায় তা এ পর্যায়ে না হলেও পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে সমঝোতার সম্ভাবনা রয়েছে। অপর একটি সূত্রে জানা যায়, কুশিয়ারার ব্যাপারেই চুক্তির সম্ভাবনা বেশি।
অভিন্ন মোট ৫৪টি নদীর পানিবণ্টন নিয়েই আলোচনা হবে। উল্লিখিত সাত নদী ছাড়া অপর নদীগুলোর মোট পানিপ্রবাহ, উজানে কোথায় কী কারণে স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে, কীভাবে তা দূর করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা হবে।
অভিন্ন নদী ফেনীর পানিবণ্টন নিয়ে বাংলাদেশ মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছে। সাবরুম নগরীর জনসাধারণের খাওয়ার পানি সংকট নিরসন ও সীমিত চাষাবাদের জন্য পাঁচ কিউসেক পানি চেয়েছিল ভারত। জোট সরকারের সময়ে তা দেওয়া হয়নি। বর্তমান সরকার ফেনী নদীর পানিও আধাআধি হারে বণ্টনে সম্মত হয়, যা ভারতীয়দের কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল। এই প্রত্যাশায় চাহিদার অতিরিক্ত পানি দেওয়া হয় যে তিস্তার পানিও বাংলাদেশ আধাআধি হারে পাবে।
জানা যায়, তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়টি যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকের অ্যাজেন্ডাভুক্ত নয়। এ নিয়ে জেআরসির পরবর্তী বৈঠক হবে আগামী বছরের প্রথম ভাগে। সেই বৈঠক হবে ঢাকায়। চুক্তিও হবে দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ সেপ্টেম্বর ভারত সফরে যাচ্ছেন। সেখানে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অভিন্ন ছয়-সাতটি নদীর পানিবণ্টন চুক্তি হবে। এই চুক্তি হবে অন্তর্বর্তীকালীন। নদীর প্রবাহ ও দুই দেশের চাহিদা দেখে পরে চুক্তি নবায়ন করা হবে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ এক যুগ পর যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক ২৪ আগস্ট নয়াদিল্লিতে হতে যাচ্ছে এবং তাতে অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন চুক্তি/সমঝোতা হবে মর্মে সাপ্তাহিক ঠিকানায় প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।