সংশোধনাগারে অপরাধ!

রোববার ‘কারাগারে মাদক ব্যবসা’ শিরোনামে সমকালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনটিতে দেখা যাচ্ছে, গত আগস্টে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ এক কয়েদির কাছে ১০০ পিস ইয়াবা পাওয়া গেছে। এটা আবার সরবরাহ করেছে এক কারারক্ষী। এই কারারক্ষীর বাসা থেকে আরও ৬০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি আরও বলছে, দেশের প্রায় সব কারাগারে নাকি এ ধরনের মাদকদ্রব্য সরবরাহ ব্যবসার প্রমাণ মিলেছে। এ ধরনের অভিযোগে প্রায় দুই বছরে কারা কর্তৃপক্ষ ঢাকা বিভাগেই ২৩ কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। তাতে অবশ্য কোনো উন্নতি হয়নি। তবে বিস্ময়কর যে, কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও তাদের কাউকে শাস্তির আওতায় আনা যাচ্ছে না বা আনা হয়নি। যে কারাগারে অপরাধীদের শুধু শাস্তিই দেওয়া হয় না, এক ধরনের সংশোধনাগার হিসেবে কাজ করে এবং সেখানে অপরাধ থেকে বেরিয়ে আসতে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়; সেই কারাগারেই যদি এমন অপরাধ সংঘটিত হয়, তা খুবই উদ্বেগের বিষয়। যদিও কারা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে যে, মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত বা মাদক সেবনে যুক্ত- এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তাতেও এই মাদকদ্রব্য বিশেষত ইয়াবা, গাঁজা সরবরাহ কমছে না। কারারক্ষীদের পাশাপাশি বন্দিরাও আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে শরীরে লুকিয়ে মাদক নিয়ে কারাগারে ঢোকে। বন্দি ও কারারক্ষীরা টুপি, জুতা বা অন্তর্বাসের ভেতরে লুকিয়ে নানা কৌশলে মাদক নিয়ে আসে। অথচ জেলগেটে সব ধরনের তল্লাশি চালানো হচ্ছে। হয়তো অপরাধী, কারারক্ষী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে এমন ধরনের পারস্পরিক সহযোগিতা গড়ে উঠেছে, ফলে শত ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। অপরাধীরা যেন কোনোভাবেই ছাড় না পায়। এ ব্যাপারে কারা প্রশাসনকে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।