ঠিকানা অনলাইন : দেশে গণতন্ত্র নেই ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুণ্ঠিত মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এই সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করতে হবে। সবকিছু রাজপথে ফয়সালা করা হবে। সরকারকে বিদায় করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই, আর রাজপথের আন্দোলনে ছাত্রদলকে অগ্রভাগে থেকে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করতে হবে। বিদেশে টাকা পাচারের কারণে অর্থনীতি ধ্বংসের শেষ প্রান্তে।
১ জানুয়ারি রোববার বিকেলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ এসব কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ।
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান মো. ইয়াহিয়ার পরিচালনায় ছাত্রসমাবেশে বক্তব্য দেন সাবেক সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু, আমান উল্লাহ আমান, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, নাজিম উদ্দিন আলম, আজিজুল বারী হেলাল, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আব্দুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, যুবদলের মামুন হাসান, মৎস্যজীবী দলের মো. আব্দুর রহিম, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস ও হেলেন জেরিন খান, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান মনির, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করিম মজুমদার, ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির মো. তানজিল হাসান, তবিবুর রহমান সাগর, ঢাবি ছাত্রদলের আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সরকারি সিন্ডিকেটের লোকজন পকেট ভর্তি করেছে। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সরকারের অবৈধ নির্দেশ মানার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে জনগণ বার্তা দিয়েছে এই সরকার রাষ্ট্রকে মেরামত করতে পারবে না। তারা এ সরকারকে আর দেখতে চায় না। ১০ দফা কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ঢাকার সমাবেশ বানচাল করতে সরকার বিএনপির নেতাদের গ্রেপ্তার করেছে। সরকার যত নির্যাতন-নিপীড়ন করুক, আন্দোলনকে দমানো যাবে না। জনগণ রাস্তায় নেমেছে আর রক্ষা নাই। ১০ দফা বাস্তবায়ন করাই বিএনপির প্রধান চ্যালেঞ্জ। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১০ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্ধকার কেটে যাবে—আলোর পথে বাংলাদেশ।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু বলেন, গণতন্ত্রকে পদদলিত করেছে সরকার। বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলখানায়। ছাত্রদলকে উঠে দাঁড়াতে হবে। না দাঁড়াতে পারলে নেতাকর্মীদের জেলখানায়ই থাকতে হবে। ২০২৩ সাল হবে কলঙ্কমুক্ত সাল, বেগম জিয়াকে মুক্ত করা হবে, এ বছর মুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা হবে।
সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, রাজপথে সবকিছুর ফয়সালা হবে। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা না হলে ছাত্রদল নব্বইয়ের মতো গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে সরকারের পতন ঘটাবে। হাসিনা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত রাজপথে থাকার অঙ্গীকার করেন তিনি।
ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, সারা দেশকে কারাগারে পরিণত করেছে সরকার। এই অবস্থা থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে। সরকারের সময় ফুরিয়ে গেছে। ধানাইপানাই করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না। সরকার চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকতে চায়। ২০২৩ সাল গণতন্ত্র ও বেগম জিয়াকে মুক্ত করার বছর।
অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের যেসব নেতাকর্মী বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে নিহত হয়েছেন, এমন ১৪ জনের পরিবারকে ক্রেস্ট উপহার দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়।
এর আগে ১ জানুয়ারি রোববার সকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলকে নিয়ে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ড. আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, বর্তমান কমিটির নেতা তবিবুর রহমান সাগর, আবু আফসান মো. ইয়াহিয়া, খায়রুল আলম সুজন, মো. আসাদুজ্জামান আসাদ, মো. আনোয়ার হোসেন, শাফি ইসলাম, মো. আবু জাফর, মো. আদনান, মো. মোহন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আরিফুল ইসলাম, সাইদুল ইসলামসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
ঠিকানা/এনআই