কোটি ভক্তের প্রিয় নায়িকা আপনি। প্রথম ছবি করার সময় এমন কিছু ভাবছিলেন?
এমদমই না। কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালক মরহুম এহতেশামের হাত ধরেই চাঁদনী রাতে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ১৯৯৩ সালের গত ১৫ অক্টোবর চলচ্চিত্রে আমার অভিষেক। ছবিটি কিন্তু ব্যবসাসফল হয়নি। তা হলে বুঝতেই পারছেন কী ভেবেছিলাম?
এর পরের ছবিটি তো সালমান শাহর সঙ্গে?
পরিচালক মরহুম জহিরুল হকের ছবি ছিল সেটি। নাম তুমি আমার’। এ ছবি করার পর আমাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সালমান-শাবনূর জুটিও চলে আসে আলোচনায়। একই নায়কের সঙ্গে আমি বিক্ষোভ’, তোমাকে চাই’, স্বপ্নের ঠিকানা’, মহামিলন’, বিচার হবে’, জীবন সংসার’, আনন্দ অশ্রু’সহ আরও বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছি।
দেখতে দেখতে ২৫ বছর পূর্ণ হলো। কেমন লাগছে?
দেখতে দেখতে জীবনের এতটা সময় পেরিয়ে এসেছি, ভাবলেই অবাক হই। কত কত প্রিয় মুখ আর নেই এখন এ কথা ভাবলেও কষ্ট হয়। আল্লাহর রহমতে চলচ্চিত্রে এখনো যথেষ্ট সম্মান নিয়েই আছি আমি। আমার অভিনয় জীবনের পথচলায় আমার প্রত্যেক চলচ্চিত্রের পরিচালক, প্রযোজক, সিনেমাটোগ্রাফার, কাহিনীকার, প্রোডাকশনবয়, ট্রলিম্যান থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে আমার বোন ঝুমুরের কথা উল্লেখ করতেই হয়। সে আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে। চলচ্চিত্র পরিবারও আমার সঙ্গে ছিল সব সময়। তাই চলচ্চিত্রের সবাইকে নিয়েই আমি ভালো থাকতে চাই।
আপনার সঙ্গে কথা বললে অবশ্যই সালমান শাহর নাম চলে আসে। তার সঙ্গে আপনার সম্পর্কটা কেমন ছিল?
আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। সালমান শাহ আমাকে পিচ্চি বলে ডাকত। সালমানের মা-বাবাও আমাকে আদর করতেন। সালমানের বউ সামিরাও আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সালমানকে প্রথম দেখি এফডিসিতে। মৌসুমী আপুর সঙ্গে শুটিং করছিল। আসা-যাওয়ার মধ্যেও দেখা হতো। আনুষ্ঠানিক পরিচয় তুমি আমার ছবিতে অভিনয় করার সময়। তখন কাজের কারণে বন্ধুত্ব হয়। আমাদের দুজনের বোঝাপড়াটা ছিল চমৎকার। আমরা একসঙ্গে কত অসাধারণ সময় কাটিয়েছি তার কোনো হিসাব নেই। এমনও সময় গেছে, শুটিংয়ের সময় সামিরা আমাকে সাজিয়ে দিয়েছে। কোন পোশাকে আমাকে মানাবে, সেটা সে বলে দিত। কানের দুলগুলো ম্যাচিং করে পরিয়ে দিত। সালমান বেঁচে থাকলে বাংলা চলচ্চিত্রের অবস্থা এখনকার মতো হতো না।
ফেসবুকে আপনার অ্যাকাউন্ট নেই, কেন?
ফেসবুকে যুক্ত না হয়ে আমি বেশ শান্তিতেই আছি। অনেককে বলতে শুনি, ফেসবুকের মাধ্যমে নাকি সবার সঙ্গে যোগাযোগের বাড়তি সুবিধা থাকে। সত্যি কথা বলতে, আমি কিন্তু ফেসবুক ব্যবহারের সুবিধা খুব একটা দেখতে পাই না। দেখা যায়, পরিবারের সদস্যরা একই ঘরে থেকেও সবাই যার যার মতো মোবাইলে ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
চলচ্চিত্রে ফিরবেন কবে?
আপাতত ইচ্ছে নেই। ছেলে আইজানকে নিয়েই এখন ব্যস্ততা। এর বাইরে প্রিয় মানুষের দাওয়াতে অংশগ্রহণ করি। আমার খুব কাছের মানুষ যারা আছেন, তাদের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতেই হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের পরিকল্পনাও অনেক বদলায়। দেখা যাক সামনে কী হয়!