মুনীরা খান নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান ফেমার সভাপতি। ফেমা দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন পর্যবেক্ষণমূলক নানা কাজ করে আসছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করার বিষয়ে তিনি তার মতামত দিয়েছেন, পাশাপাশি স্থানীয় নির্বাচন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচনের অভিজ্ঞতা ও বিবেচনা নিয়েও কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- মাসউদ আহমাদ
প্রশ্ন : চলতি বছরকে বলা হচ্ছে নির্বাচনের বছর। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনই শুধু নয়, গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট এই পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে। এরই মধ্যে গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি কি যথেষ্ট বলে মনে করেন আপনি?
উত্তর : নির্বাচন কমিশন তো একটা রোডম্যাপ দিয়েছিল, সে অনুযায়ী তাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা। এ নির্বাচন কমিশন আসার পরে কিন্তু বেশ কয়েকটি নির্বাচন হয়েছে স্থানীয় নির্বাচন। বিশেষ করে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন দেখেছি, সেখানে আমরা খুব একটা সমস্যা পাইনি। এটাকে একটা গুড ইলেকশনই বলা যায়। শিগগিরই দুটি নির্বাচন করবে। কাজেই তারা প্রস্তুতি না নিয়ে নির্বাচন করবে বলে আমি মনে করি না। বিশেষ করে ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন একটা মামলার কারণে বাতিল হয়ে গেল, তখন কিন্তু অনেকেই নির্বাচন কমিশনকে দোষারোপ করেছিল। আমরা বলেছি, তারা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি না নিয়ে কেন এমন একটা নির্বাচন করতে গেল? তারা সমস্যাগুলো সমাধান করে তারপর নির্বাচনের ঘোষণা করতে পারত। এত কিছুর পরও যখন তারা নতুন করে সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ঘোষণা করেছেতাদের প্রস্তুতি আছে। আমি এটাকে ইতিবাচকভাবেই দেখছি।
প্রশ্ন : নতুন নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে অংশীজনদের সংলাপ হয়েছে। সেই সংলাপের আলোকে নির্বাচন কমিশনকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
উত্তর : সংলাপটা ওরা করেছিল একটা রোডম্যাপ দেওয়ার পর। তারা ঠিক করে নিয়েছিল যে কাদের সঙ্গে তারা সংলাপ চালাবে। সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ছিল। একটা ব্যাপার আমি দেখেছি, এখানে তো বিএনপিও ছিল। তারা কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক দল কোনো বিষয় নিয়ে আপত্তি করেনি এবং তাদের মধ্য থেকে কেউ বেরিয়ে এসে বলেনি, এটাতে তাদের আপত্তি আছে। একটা বিষয়ে কথা এসেছেসেনা মোতায়েন নিয়ে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিজেও ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন, তিনিও চাইছেন সেনা মোতায়েন করা উচিত। কমিশন সবার সঙ্গে বসে কী সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটা পরের কথা। তিনি নিজের মতামতটা বলেছেন এবং মনে করেছেন, সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তটা খারাপ হবে না। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে তারা কার্যকর ভূমিকা রাখবে। পর্যবেক্ষণকারী হিসেবে আমরা দেখেছি, আমাদের কিছু দাবি ছিল, সেগুলো কিন্তু পূরণ হয়নি।
প্রশ্ন : কমিশনের সঙ্গে অংশীজনদের সংলাপে যেসব বিষয় প্রস্তাব করা হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতি কতটুকু?
উত্তর : রাজনৈতিক দলগুলোর সব দাবির কথা এ মুহূর্তে তো মনে নেই, তারা কী বলেছে। শুধু রাজনৈতিক দলের কেন, দু-তিনটি বিষয় ছিল, যা দেশের সব ভোটারের দাবি। সেভাবেই বলি কথাটা প্রথম কথা হচ্ছে, আমরা যারা সম্পৃক্ত নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী হিসেবে, নির্বাচনের প্রস্তুতি বা নির্বাচনের আগে থেকে শুরু করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগের দিন পর্যন্ত, আমরা কতগুলো প্রস্তাব রাখি। সেগুলো হচ্ছে একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন, নির্বাচনী সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা এবং সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের জন্য সমান সুযোগের ব্যবস্থা করে দেওয়া। পাশাপাশি নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসবে, নির্বাচনের নীতিমালা সম্পূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক ও কঠোরভাবে পালন করা। মানুষের একটা ধারণা থাকে যে অমুক সময়ে নির্বাচন হবে, তার অনেক আগে থেকেই শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নয়, ভোটারদের মধ্যেও এক ধরনের প্রত্যাশা কাজ করে। আমি আমার ভোট ঠিকমতো দিতে পারব কি না। যাদের আমি সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চাই, তারা মনোনয়ন পেলেন কি না। ভোটার তালিকায় আমার নাম আছে কি না এবং নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে কি না। নির্বাচনী হাওয়া এলে আমি আমার মতামতটা দিতে পারব কি না। আমি নির্দিষ্ট কোনো দলের সমর্থক যদি হই, নির্বাচন এলে সেই দলকে নির্বিঘ্নে সমর্থন দিতে পারব কি না আমার ওপর কোনো অন্যায়, অবিচার ও চাপ তৈরি হবে কি না। এসব দেখেই কিন্তু নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি হয়।
প্রশ্ন : রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পাশাপাশি নতুন নির্বাচন কমিশন কয়েকটি উপনির্বাচন সম্পন্ন করেছে। এই নির্বাচনগুলো আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?
উত্তর : আমাদের দেশে জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচন কিন্তু আলাদা। যদিও স্থানীয় নির্বাচনে সিম্বল ব্যবহার করা হয় পার্টির; কিন্তু জনগণের প্রত্যাশা থাকে অন্য রকম। স্থানীয় নির্বাচনে যাকে পাঠানো হবে এবং যিনি আমাদের জন্য উন্নয়ন করবেন, তাকে আমি ভোট দেবো। কাজেই এখানে প্রার্থী বাছাই বড় ব্যাপার। রাজনৈতিক দলগুলো যদি প্রার্থী বাছাই ঠিকমতো না করে, তাহলে জনগণ তো শুধু মার্কা দেখে ভোট দেবে না। রংপুরে যেটা দেখেছি, সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অতটা জনপ্রিয় ছিলেন না। জাতীয় পার্টি জনপ্রিয় ছিল এবং তারাই জয়ী হয়েছে। আমরা বলব, রংপুর সিটির নির্বাচন ভালোই হয়েছে। সে রকম কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি।
প্রশ্ন : বর্তমান নির্বাচন কমিশনের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আস্থা অর্জন। নির্বাচন কমিশনের এ পর্যন্ত যে কর্মকাণ্ড, তাতে কি আস্থার প্রতিফলন দেখতে পান আপনি?
উত্তর : আমি মনে করি, নির্বাচন কমিশনের ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের তফসিল তড়িঘড়ি করে ঘোষণা করা ঠিক হয়নি। এটার জন্য আগে থেকেই মানুষের মধ্যে একটা গুজব ছিল যে নির্বাচনটা হবে না এবং পরে তা-ই হলো। তখন কিন্তু নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থায় একটু চিড় ধরেছিল। এতে সাধারণ মানুষ অভিযোগ করেছে যে তারা কি জেনে-বুঝে এমন একটি নির্বাচনের আয়োজন করেছিল, যেটি শেষ পর্যন্ত হবে না? এমনকি বিরোধী দল কথা বলার সুযোগ পেয়েছে, সরকারি দল জিততে পারবে না বলে নির্বাচনটি বন্ধ করে দিয়েছে। আমি মনে করি, সামনে যে নির্বাচনগুলো হবে সেখানে যদি নির্বাচন কমিশন সাবধানে পা না ফেলে বা কাজ না করে, তাহলে তাদের ওপর আস্থায় ভাটা পড়বে।
প্রশ্ন : এখন তো বারবারই বলা হচ্ছে, সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হবে। সব দলের অংশগ্রহণ কিভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব?
উত্তর : সব দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে আমার একটি মত আছে। সেটি হচ্ছে, ৭১টি নতুন রাজনৈতিক দল আবেদন করেছে, তারা নিবন্ধন চায়। এখন এতগুলো পার্টি এবং সেখানে এমন কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে, যা অনেক দলের পক্ষে পূরণ করা সম্ভব হবে না। যেমন নতুন নিবন্ধনপ্রার্থী দলের একজন সদস্য এমপি থাকতে হবে, সদস্যসংখ্যা প্রকাশ করতে হবে ইত্যাদি। কাজেই অনেক দলই নিবন্ধন পাবে না। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নির্দিষ্ট ভোটার থাকে। কাজেই কোনো দল বা বিএনপির কথাই বলি, তারা যদি নির্বাচনে না আসে, তাহলে ভোটারদের বিশ্বাস হারাবে। কারণ প্রতিটি দলের নির্দিষ্ট নীতি ও ম্যানিফেস্টো থাকে, সেসব মেনেই ভোটাররা সেই দলকে ভোট দিয়ে থাকে। ভোটে যদি তারা অংশ না নেয়, তাহলে যেসব ভোটার দলের ওপর ভরসা করে বসে আছে, তারা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। তারা তো তাদের পছন্দের পার্টি ও মনোনীত ব্যক্তিকে ভোট দিতে চায়। তাই তাদের নির্বাচনে আসা উচিত। আরেকটি কথা হচ্ছে, সমমনা দল ছাড়া নির্বাচনে জোট গঠন করা উচিত নয়। পরস্পরের নীতি ও ম্যানিফেস্টোতে কোনো মিল নেই, দেশ নিয়ে ভাবনায় তারা এক নয়, এমন দলের জোট করা ঠিক নয়।
প্রশ্ন : সব দলকে নির্বাচনে আনা নিশ্চয় কমিশনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নির্বাচন কমিশন কী ব্যবস্থা নিতে পারে?
উত্তর : এটা সত্যি কঠিন প্রশ্ন। নির্বাচন কমিশনকে যদি আমরা সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষভাবে দেখি, কিছু বিষয় আছে কমিশন কথা বলতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে কমিশনকে কিছু জিনিস রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে এবং কিছু বিষয় টেকনিক্যালি করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের কথায় কি রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে আসবে? কোনো দলীয় সরকারের অধীনে যদি নির্বাচন হয় এবং সরকার যদি সদিচ্ছার সঙ্গে চায় যে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেবে এবং সব দল অংশ নেবে, তাহলে নির্বাচন কমিশন যে সাহায্য-সহযোগিতা পাবে, তা নিয়ে একটি ভালো নির্বাচন করতে পারবে। কিন্তু সরকারের যদি সেই মানসিকতা না থাকে, তাহলে বিষয়টি জটিল হবে।
প্রশ্ন : নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। এই প্রক্রিয়ার বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?
উত্তর : না, এখনো সম্পন্ন হয়নি। চলছে। আমি মনে করি, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের শর্ত পূরণ করতে হবে। এটা শুধু রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রেই নয়, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই কিছু শর্ত ও নীতি থাকে। কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোকে শর্তগুলো অবশ্যই মানতে হবে। তবে দেখতে হবে যে শর্তগুলো যুক্তিযুক্তভাবে দেওয়া হয়েছে কি না। শুধু দলকে ঠেকানোর জন্য শর্ত দিলে হবে না।
প্রশ্ন : বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নিয়েই একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করেছিল। ঘোষিত এই রোডম্যাপ বাস্তবায়ন কিভাবে সম্ভব?
উত্তর : একটা নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে কয়েকটি বিষয়ের ওপর জোর দিতে হবেকারচুপি, পেশিশক্তি ও অর্থের ব্যবহার; এই বিষয়গুলোকে খুব সতর্কভাবে সামলাতে হবে। নির্বাচনে যেন এই বিষয়গুলোর অপব্যবহার না হয়। প্রভাবমুক্ত পরিবেশ এবং অর্থের যথেচ্ছ ব্যবহারও সামলাতে হবে। তা না হলে রোডম্যাপ শুধু কাগজে থাকবে, ভালো কিছু আশা করা যাবে না।
প্রশ্ন : এমনটি ধারণা করা হয়, নির্বাচনের বছরে বিভিন্ন মহলের চাপের মুখে থাকে নির্বাচন কমিশন। এই চাপ থেকে নির্বাচন কমিশন কিভাবে বেরিয়ে আসতে পারে?
উত্তর : খেলার মাঠে যারা খেলে, তাদের কাকে লাল কার্ড দেওয়া হবে, বহিষ্কার করা হবে এবং নির্দেশ জারি করা হবে, তা নির্ভর করে রেফারির ওপর। নির্বাচন কমিশনকেও সেভাবে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তারা পক্ষপাতমূলকভাবে কিছু বলবে না বা করবে না। নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী হচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের সহায়ক শক্তি। এটা কমিশনকে বুঝতে হবে।
প্রশ্ন : নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করা শুধু নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে নিশ্চয় সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোরও তো দায়িত্ব রয়েছে। এই দায়িত্বগুলো কী? রাজনৈতিক দলগুলো কি এই দায়িত্ব পালন করবে বলে মনে করেন?
উত্তর : নির্বাচনে অনেক ধরনের মানুষ অংশ নেয়। এতে সবচেয়ে বড় অংশ ভোটার। এখানে কমিশন হচ্ছে রেফারি। রাজনৈতিক দল এবং যারা এতে জড়িয়ে থাকেন, কারো জন্যই বিশৃঙ্খলা বা অনিয়ম সৃষ্টি করা উচিত হবে না। কোনোভাবেই যাতে নির্বাচনী পরিবেশ বিঘিœত না হয় সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে এবং সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করতে হবে, যাতে ভোট সুষ্ঠুভাবে হতে পারে। আর সবার আগে ভোটারদের মন জয় করতে হবে।
প্রশ্ন : ভোটকেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে কিছু বলুন।
উত্তর : আমি ব্যক্তিগতভাবে ইভিএমের বিপক্ষে। কারণ এতে এমন কতগুলো কারিগরি বিষয় আছে, যা অনেকে বোঝেই না। নথি নষ্ট হতে পারে, বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অনেক দেশ ইভিএমে ভোট নিয়েও বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের দেশের মানুষ তো স্বল্পশিক্ষিত। হাতে ভোট দিলে সেটা বাক্সে ফেলার আগমুহূর্ত পর্যন্ত আমি দেখতে পাচ্ছি। ইভিএমে টিপ দিলাম, পরে আর দেখতে পারলাম না। কাজেই মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ও উৎসবের ব্যাপারটা ইভিএমে পাওয়া যায় না।
প্রশ্ন : আপনি আগামী নির্বাচন কেমন প্রত্যাশা করেন?
উত্তর : একজন নাগরিক হিসেবে আমি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করি। আমি বিশ্বাস করি, এবার সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুন্দর ও ভালো নির্বাচন হবে এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি জনগণের জন্য কাজ করবেন। যে সরকারই নির্বাচন পরিচালনা করবে, তারা একটি সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেবে, যাতে কেউ না বলতে পারে এটা একটা ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন।
প্রশ্ন : সম্প্রতি প্রবাসী ভোটারদের ভোট কিভাবে গ্রহণ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এটা নিয়ে বলুন।
উত্তর : প্রবাসী ভোটার নিয়ে অনেক কথা শোনা যাচ্ছে। প্রবাসী দুই রকম। যারা একেবারে চলে গেছে ইমিগ্র্যান্ট হয়ে। আর যারা পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে গেছে এবং দেশের অর্থনীতিতে তারা অবদান রাখছে। তাদের অবশ্যই ভোটাধিকার প্রয়োগ করার অধিকার আছে। কারণ তাদের টাকা এ দেশে আসে, উন্নয়নে খরচ হয়। দেশের প্রতি তাদের যে অবদান, সে ক্ষেত্রে তাদের ভোট প্রয়োগ করে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করার অধিকার আছে। কিন্তু তাদের ভোটার তালিকা তৈরি করা খুব দুরূহ ব্যাপার। তাদের ভোটার তালিকা কিভাবে হবে। ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকা দিয়ে কোনো নির্বাচন হবে না। তাদের ভোট কোনো মাধ্যমে গ্রহণ করা হবেএ বিষয়গুলো আলোচনা ও চিন্তার মধ্যেই আছে। এটা হয়তো এক দিন কার্যকর হয়েও যাবে।