সরকারের পদত্যাগ ছাড়া খেলতে দেওয়া হবে না : ফখরুল

ছবি সংগৃহীত

ঠিকানা অনলাইন : আওয়ামী লীগ অত্যাচার-নির্যাতন করে বিএনপিকে দমন করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘সরকার নির্বাচন করতে চায়। কিসের নির্বাচন? এই দেশে গণতন্ত্র নেই, নির্বাচন নেই। নির্বাচন ব্যবস্থাটাই আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন করেছে যাকে ডিসি-এসপিরা মানে না। তাই নির্বাচনের প্রশ্নই উঠতে পারে না। পরিষ্কার করে বলছি; সবার আগে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে, তার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করে দিতে হবে এবং একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে দিতে হবে।’

২৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব। জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই যুব সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তাস্তর না করলে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে, সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনে তখন এই দেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে, যোগ করেন তিনি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সামনে আমাদের এখন কঠিন সময়। অনেক পরীক্ষা, যুদ্ধ। বলা হচ্ছে খেলা হবে, এতই যদি খেলতে চাও, কিসের খেলা? খেলেছ তো ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে। খেলা হয় না, খেলা তখনই হয়, যখন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে। খেলা তখন হবে, যখন এই সরকার পদত্যাগ করবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন দায়িত্ব নেবে; তখনই নির্বাচনের খেলা হবে। এ ছাড়া এই দেশের মানুষ কোনো খেলা খেলতে দেবে না, দেওয়া হবে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার নির্বাচিত নয়; যারা জোর করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। এরা বিগত ১৪ বছরে বাংলাদেশের সমস্ত সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে, ধ্বংস করেছে দেশের অর্থনীতি শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্য খাত ও রাজনীতি। এই সরকার গণধিক্কৃত ও গণবিরোধী সরকার। দেশে চলমান সংকটের মূলে রয়েছে এই সরকারের দুর্নীতি। প্রতিটি ক্ষেত্রে চুরি করেছে। নির্বাচনের পূর্বে বলেছিল ঘরে ঘরে চাকরি দেবে? চাকরি দেয় নাই; চাকরি আওয়ামী লীগের লোকদের দেয় আর যদি কেউ ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ দেয়, তাকে চাকরি দেয়।

তিনি বলেন, ‘আজকে পায়রা বন্দর উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন; আমাদের বিরোধীরা অর্থাৎ বিএনপি বলে রিজার্ভের টাকা কোথায় গেল? আমরা অবশ্যই জিজ্ঞাসা করতে চাই, এই রিজার্ভের টাকা কোথায় গেল? তিনি উত্তর উত্তর দিয়েছেন রিজার্ভের টাকা চিবিয়ে খাওয়া হয়নি। আমরা বলছি রিজার্ভের টাকা চিবিয়ে খাননি; গিলে ফেলেছেন। রিজার্ভের টাকা দিয়ে পায়রা বন্দর নয়, রিজার্ভের টাকা দিয়ে যা কিছু আমদানি করবেন সেই ডলারের টাকা পরিশোধ করতে হয়। দেশে যখন অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেবে, তখন সে সংকট মেটাতে সক্ষম হবেন না। অর্থনীতিবিদ ও বিশেষেজ্ঞরা বলছেন, পায়রা বন্দর কার্যকর হতে পারে না। কারণ, যে নাব্যতা দরকার পানির গভীরতা দরকার তা সেখানে নাই।’

তিনটা সমাবেশ করেই বিএনপি মনে করছে ক্ষমতায় চলে গেছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা তিনটা সমাবেশ করে মনে করছি না ক্ষমতায় চলে যাচ্ছি। আমরা মনে করছি তিনটা সমাবেশ করেই আপনাদের এত কম্পন শুরু হয়েছে, কাঁপাকাঁপি শুরু হয়েছে যে, ওই সমাবেশগুলো বন্ধ করতে ধর্মঘট ডেকেছেন। লজ্জা করে না আপনাদের, কী নির্লজ্জ আপনারা, কতটুকু কাপুরুষ বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বানচাল করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।

চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনায় ধর্মঘট দিয়ে তো জনগণের গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করতে পারেননি।

বাস পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা সব সময় জনগণের সেবা করেন, সব সময় জনগণের সঙ্গে ছিলেন। তাহলে কার ইঙ্গিতে কাদেরকে সহায়তা করতে এই ভয়ংকর ফ্যাসিস্ট শক্তি যারা সবকিছু কেড়ে নিয়ে যাচ্ছে তাদেরকে সাহায্য করার জন্য কাজ করছেন। জনগণের সঙ্গে থাকুন।

যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, আবদুল সালাম আজাদ, সাইফুল আলম নিরব, হাসান জাফরি তুহিন, আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ।

ঠিকানা/এনআই