ঠিকানা রিপোর্ট : এক যুগের কাছাকাছি হয়ে হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটিতে পরিবর্তন আসেনি। সেপ্টেম্বর মাস এলে নেতা-কর্মীরা দলের প্রধান শেখ হাসিনার দিকে চেয়ে থাকেন। নেত্রী আসেন, চলেও যান। কিন্তু কমিটি আর হয় না। প্রতি বছরের মত জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে ১৯ সেপ্টেম্বর সোমবার নিউইয়র্কে আসছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারো নেতা-কর্মীরা আশায় বুক বেঁধেছেন, কমিটি হয়তো হবে।
নেতা-কর্মীদের ধারণা- দলীয় প্রধান এবার কমিটি দিয়ে যাবেন। বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নানান দিক বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন অত্যাবশকীয় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ- যে কোনো দুঃসময়ে কাণ্ডারির ভূমিকায় থাকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। অতীত ইতিহাস তা-ই সাক্ষী দেয়।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি মানেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন মুখ। ১১ বছর ধরে সভাপতি পদে আছেন ড. সিদ্দিকুর রহমান। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ। এবার দলীয় প্রধান নতুন কমিটি দেবেন এই আশায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। শতভাগ নিশ্চিত না হলেও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ডজনখানেক নেতা প্রতিনিয়ত চেষ্টা-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।
নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারের সফরে নতুন কমিটি ঘোষণা দিতে পারেন। আবার কমিটি পুনর্বিন্যাসও করতে পারেন। নতুন অথবা পুনর্বিন্যাস, যা-ই হোক না কেন, যোগ্য নেতা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যোগ্য নেতা খুঁজছেন শেখ হাসিনা।
সূত্র জানায়, সভাপতি পদে নতুন নেতৃত্ব আনতে হলে বর্তমান সভাপতির চেয়ে সমান অথবা অধিক যোগ্য নেতার প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমান সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের চেয়ে যোগ্য ও ত্যাগী নেতার নাম দলের প্রধান শেখ হাসিনার পছন্দের তালিকায় স্থান পায়নি। তবে অন্য তালিকায় যাদের নাম রয়েছে, তারা হলেন- বর্তমান উপদেষ্টা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর, ডা. মাসুদুল হাসান, সহ-সভাপতি ফজলুর রহমান, লুৎফুল করিম ও শামসুদ্দিন আজাদ। তাদের বাইরেও আলোচনায় রয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন নবী ও ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ। তবে নেতৃত্বের কোন্দল ও রেষারেষিতে এই দুই নেতা দলের হাল ধরার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন বলে জানা গেছে।
সাধারণ সম্পাদক পদে বেশ কয়েকজন নেতার নাম উঠে এসেছে তালিকায়। তাদের মধ্যে এগিয়ে রয়েছেন- যুগ্ম সম্পাদক আইরিন পারভীন, প্রচার সম্পাদক দুলাল মিয়া এনাম, কার্যকরী সদস্য হিন্দাল কাদির বাপ্পা, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম বাদশা ও আব্দুল হাছিব মামুন, জনসংযোগ সম্পাদক কাজী কয়েস, বহিস্কৃত দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী এবং নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নূরুল আমিন বাবু।
বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদও ভারমুক্ত হতে চান। সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমানও দায়িত্ব ফিরে পেতে চান দলীয় প্রধানের কাছে।
দীর্ঘ প্রায় এক যুগ দেশের দলীয় রাজনীতির স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সকল আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। দলের সভাপতির কাছে সেই ভূমিকা ব্যাপক প্রশংসিত। তবুও নতুন নেতৃত্ব চান দলের নেতা-কর্মীরা। নিজেরাও আসতে চান নেতৃত্বে। এসব নিয়ে বিভিন্ন সময়ে নেতৃত্বের সংকট তৈরি হলেও নতুন কমিটির ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ঠিকানাকে বলেন, কমিটি দেওয়ার এখতিয়ার শুধুই নেত্রীর। কারা নেতৃত্ব পাবার যোগ্য, নেত্রীর কাছে সব তথ্য রয়েছে। নেত্রী যাকে ভালো মনে করবেন তাকেই দায়িত্ব দেবেন।
একটি সূত্র জানায়, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কমিটি হয়েছে ২০১০ সালে। এরপর সেখানে আর কমিটি হয়নি। শেখ হাসিনা চান যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কমিটি একই সময়ে ঘোষণা করতে। সে হিসাবে এবছর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটি নাও হতে পারে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর।
সহসাই যুক্তরাষ্ট্র আ’লীগের নতুন কমিটি!
সভাপতি বহাল থাকছেন ড. সিদ্দিক, সেক্রেটারিতে পরিবর্তনের আভাস